জনগণের ট্যাক্সের পয়সা কিংবা বিদেশি অনুদান অথবা ঋণ— যে টাকাতেই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হোক না কেন, তার প্রতিটি পয়সার হিসাব জনগণের কাছে উন্মুক্ত করতে হবে।
Published : 19 Sep 2024, 05:13 PM
খবরটা শুধু বিস্ময়করই নয় বরং সাম্প্রতিক বছরগুলোয় উন্নয়ন প্রকল্পের নামে কীভাবে জনঅর্থের অপচয় হয়েছে এবং বাংলাদেশকে কীভাবে একটি ‘প্রকল্পরাষ্ট্রে’ পরিণত করা হয়েছিল, তার একটি বড় উদাহরণ এই সংবাদ।
বিবিসি বাংলার একটি খবরে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলার সময় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজধানীর কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন সংস্কার করতে একশো কোটি টাকা লাগবে বলা হলেও ডিএমটিসিএলের নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ জানিয়েছেন, কাজীপাড়া স্টেশন সংস্কারে ১ কোটি টাকারও কম খরচ হবে। মিরপুর-১০ স্টেশনের যন্ত্রপাতি আমদানির কারণে কিছুটা বেশি খরচ হবে, তবে প্রকৃত খরচ এখনও নির্ধারিত হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুলাই হামলার পর দুই স্টেশন মেরামত করতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে বলে ডিএমটিসিএলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। এমনকি সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও তখন বলেছিলেন, ‘মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশন ধ্বংসপ্রাপ্ত। এক বছরেও যন্ত্রপাতি এনে সচল করা সম্ভব হবে না।’
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্য অনেক প্রতিষ্ঠানের মতো মেট্রোরেলের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও সরিয়ে দেওয়া হয়। নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেছেন, স্থানীয়ভাবে যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে দ্রুত কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কাজীপাড়া স্টেশন এই মাসেই চালু হতে পারে।
উন্নয়নকে প্রশ্ন করা
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশের অবকাঠামো খাতে যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, তা নিয়ে দ্বিমতের সুযোগ কম। যেমন পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ইত্যাদি। কিন্তু এইসব উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয়িত অর্থের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি কতটা নিশ্চিত করা গেছে; বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন যেমন রাস্তা, সেতু, কালভার্ট ও অন্যান্য নির্মাণকাজের ব্যয় কেন অনেক বেশি— ওই প্রশ্নগুলোও জনমনে ছিল, আছে। কিন্তু এসব প্রশ্নের খুব সদুত্তর মেলেনি। আবার গণমাধ্যমও সব সময় এইসব প্রশ্ন খুব নির্ভয়ে ও নির্মোহভাবে উত্থাপন করেনি বা করতে পারেনি। কেননা প্রশ্ন করাকেও ‘উন্নয়নবিরোধিতা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বরং এইসব উন্নয়নের প্রশংসাসূচক খবর ও বিশ্লেষণই বেশি হয়েছে এবং এই ধরনের সাংবাদিকতাকেই বলা হয়েছে ‘উন্নয়ন সাংবাদিকতা’। বাস্তবতা হলো উন্নয়নকে প্রশ্ন করার নামই উন্নয়ন সাংবাদিকতা।
মেট্রোরেলের এই ঘটনাটি অনেকগুলো প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। যেমন, যারা বলেছিলেন যে এই দুটি স্টেশনের সংস্কার কাজে সাড়ে তিনশো কোটি টাকা লাগবে, তারা কীসের ভিত্তিতে এই হিসাব দিয়েছিলেন? এখন কীভাবে একশো কোটি টাকার কাজ মাত্র এক কোটি টাকায় করা যাচ্ছে? এটি কি উন্নয়ন প্রকল্পের নামে জনঅর্থের অপচয়ের একটি বড় উদাহরণ? এখন কি সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাস্তবায়িত সবগুলো বড় প্রকল্পের অর্থ খরচ নিয়ে তদন্ত ও অনুসন্ধান হবে?
যেদিন জানা গেল একশো কোটি টাকার কাজ এক কোটিতে হচ্ছে, তার দিন দুয়েক পরই ১৮ সেপ্টেম্বর ভোর থেকে ১১ ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ ছিল মেট্রোরেল। গণমাধ্যমের খবর বলছে, মেট্রোরেলের ফার্মগেট স্টেশনের পরে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের সামনের একটি পিলারের ওপরের ভায়াডাক্টের চারটি স্প্রিং থেকে একটি স্প্রিং সরে গেছে। এতে রেলপথের একটি অংশের ভায়াডাক্ট দেবে গিয়ে আগারগাঁও-মতিঝিল রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু একটি নতুন লাইনে কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হলো? উদ্বোধনের দেড় বছরের মাথায় কী করে এত বড় একটি ত্রুটি দেখা দিল? এটি কি নিতান্তই দুর্ঘটনা, টেকনিক্যাল ফল্ট নাকি নির্মাণ ত্রুটি? যদি নির্মাণ ত্রুটি হয় কিংবা যন্ত্রপাতি ত্রুটিপূর্ণ হয়, তাহলে মেট্রোরেলের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকেও জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে।
চুক্তি অনুযায়ী সব যন্ত্রপাতি ঠিকঠাক দেওয়া হয়েছে কিনা; না হলে কোথায় কোথায় গলদ; এই মানের একটি মেট্রো লাইন চালু করতে উন্নত বিশ্ব এবং এবং প্রতিবেশী ভারতে কী পরিমাণ টাকা খরচ হয় আর বাংলাদেশে কত হয়েছে— এসব প্রশ্নও জনমনে আছে। যদি ভারতের চেয়ে অনেক বেশি খরচ হয়, তাহলে ওই বাড়তি খরচের খাতগুলো কী কী এবং সেগুলো কতটা যৌক্তিক— সেটিও জনগণের জানা উচিত।
শুধু দেশের ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ারদেরই ‘চোর’ বলে গালি দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতগুলো বড় প্রকল্পের সঙ্গে বিদেশি প্রতিষ্ঠান, ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদার জড়িত— তার সবগুলো প্রকল্প নিয়েই এখন তদন্ত হওয়া প্রয়োজন যে, ওইসব প্রকল্পে কী পরিমাণ ফাঁকিবাজি হয়েছে এবং কী পরিমাণ চুরি হয়েছে।
বিদেশিরা ধোয়া তুলসিপাতা কিনা— সেটি জানার অধিকার দেশবাসীর আছে। আর যদি তদন্তে বেরিয়ে আসে যে সত্যিই প্রতিটি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে, তাহলে এই অনুসন্ধানও তখন করতে হবে এইসব অনিয়মের সঙ্গে কারা কারা জড়িত।
দুর্নীতি ও অনিয়মনের অভিযোগের তীর বরাবর রাজনীতিবিদদের দিকেই থাকে। কিন্তু বলাই হয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিটি অন্যায় ও চুরির পেছনে অন্তত একজন আমলার হাত থাকে। কিন্তু তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান। কিন্তু এখন এই বাস্তবতারও অবসান হওয়া প্রয়োজন।
প্রকল্প ব্যয়ে কেন এত খরচ?
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদও সম্প্রতি বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা হয়েছে এদেশের প্রকল্প বাস্তবায়নে। তিনি বলেন, বড় বড় প্রকল্প কেন এতবার সংশোধন করা হয়েছে, নকশা কেন সংশোধন করতে হয়েছে, বারবার কেন ব্যয় বাড়াতে হয়েছে, কাদের স্বার্থে এগুলো করা হয়েছে— সেসব জানতে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা দরকার।
খ্যাতিমান এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, বড় বড় প্রকল্প, যাচাই-বাছাই না করে, অর্থায়নের দায় বিদেশি ঋণের দায় চিন্তা না করে গ্রহণ করা হয়েছে। ঠিকাদার বা বিভিন্ন স্বার্থগোষ্ঠীর জন্য এমনভাবে নেওয়া হয়েছে। এগুলো সুপরিকল্পিত বা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়নি।
২০১৭ সালে বিশ্বব্যাংকের গবেষণায় দেখা যায়, ভারতে প্রতি কিলোমিটার সড়কে ব্যয় ১১ লাখ থেকে ১৩ লাখ ডলার বা (১০০ টাকা ধরে) ১১ কোটি থেকে ১৩ কোটি টাকা। চীনে ব্যয় হয় ১৩ লাখ থেকে ১৬ লাখ ডলার বা ১৩ কোটি থেকে ১৬ কোটি টাকা। কিন্তু বাংলাদেশের সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য বলছে, সাধারণত উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে চার লেন সড়ক প্রকল্পে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয় ১৮ কোটি থেকে ৩৪ কোটি টাকা। কিন্তু অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ একটি রাস্তা নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ধরেছিল ১৪০ কোটি টাকা। ভাঙ্গা-বেনাপোল রুটের ১২৯ কিলোমিটার দুই লেনের সড়কটি চার লেন করতে খরচ ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। চার লেনের মহাসড়কের জন্য ৯৬৭ একর জমি অধিগ্রহণের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল খোদ পরিকল্পনা কমিশন।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ৫৫ মিনিটে বুলেট ট্রেন চালানোর স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। কিন্তু ১১০ কোটি টাকা খরচ করে এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরে প্রকল্প থেকে সরে যায় রেলপথ মন্ত্রণালয়। তাহলে এতগুলো টাকা খরচ করা হলো কেন বা সমীক্ষাতেই এত টাকা লাগলো কেন— এই প্রশ্নও উঠেছে।
নদীর টাকা জলে!
বলা হয়, নদীর টাকা জলেই যায়। অর্থাৎ নদী খননের নামে যে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে, দিন শেষে তার সুফল কী পাওয়া গেছে— তা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের শেষ নেই। যার দুটি বড় উদাহরণ যশোরের কপোতাক্ষ নদ এবং ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র।
কপোতাক্ষে প্রাণ ফেরাতে ২০১১ সালে নদ খননের প্রকল্প হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২৮৬ কোটি টাকা খরচ করে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের প্রথম পর্যয়ের কাজ শেষ হয় ২০১৭ সালে। কিন্তু তাতে খুব একটা সুফল মেলেনি। অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্থানীয় লোকজন মানববন্ধনও করেছিল। এরপর ২০২০ সালে দ্বিতীয় পর্যায়ে খননকাজ শুরু হয়। তখন নতুন করে ব্যয় ধরা হয় ৫৩১ কোটি টাকা। ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার পরে প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়। কিন্তু শত শত কোটি টাকা খরচের পরও কপোতাক্ষ পাড়ের মানুষেরা বলছেন, তারা কাঙ্ক্ষিত সুফল পাননি। তাহলে টাকাটা কোথায় খরচ হলো?
একই অবস্থা ব্রহ্মপুত্র নদেও। একটি জাতীয় দৈনিকের খবরের শিরোনাম: পানিতে যাচ্ছে ২৭৬৩ কোটি টাকা, একদিকে খনন অন্যদিকে ভরাট। খবরে বলা হয়, গাইবান্ধা, জামালপুর, ময়মনসিংহ, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ— এই পাঁচ জেলায় নদের ২২৭ কিলোমিটার অংশ খনন করার কথা। কোনো কোনো এলাকায় খনন শেষ, কোনো কোনো এলাকায় কাজ চলছে, কোনো কোনো এলাকায় কাজ শুরু হয়নি। তবে গত কয়েক বছরে যেসব এলাকায় খনন হয়েছে, সেসব এলাকার মানুষ হতাশ। তারা বলছেন, খনন করে কোনো লাভ হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে খননের পর বালু ফেলা হয়েছে নদের চরে অথবা তীরে। বর্ষায় সেই বালু আবার নদীতে মিশে নদটি ভরাট হয়েছে।
সমাধান কী?
জনগণের ট্যাক্সের পয়সা কিংবা বিদেশি অনুদান অথবা ঋণ— যে টাকাতেই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হোক না কেন, তার প্রতিটি পয়সার হিসাব জনগণের কাছে উন্মুক্ত করতে হবে। প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি উন্মুক্ত করে দিতে হবে। কোন কাজে কী পরিমাণ রড, বালু, সিমেন্ট ইত্যাদি দেওয়া হবে— সেটি প্রকল্প এলাকায় সাইনবোর্ড টাঙিয়ে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করে দিতে হবে। কাজ শেষে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে স্থানীয় জনসাধারণ কাজটি বুঝে নেবেন যে ঠিকমতো হয়েছে কিনা। এমন সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে যাতে উন্নয়ন কাজ চলার সময় রাষ্ট্রের যেকোনো নাগরিক ওই কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে এবং যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য একজন ফোকাল পারসন থাকবেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশে একটা অদ্ভুত অনুমতি কালচার তৈরি হয়েছে যে, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে কোনো তথ্য চেয়ে খোদ সাংবাদিকরাও পান না। তথ্য অধিকার আইনের মারপ্যাঁচে দিনের পর দিন সাংবাদিকরা ঘুরেছেন এবং তারপরও তথ্য পাননি— এরকম ঘটনা ভুরি ভুরি।
বস্তুত যখন কেউ কোনোকিছু গোপন করতে চায়, তখন সে সাংবাদিক ও নাগরিকের মুখোমুখি হতে ভয়। সে তখন প্রশ্ন শুনতে চায় না। প্রশ্ন শুনলেও উত্তর দেয় না। বরং সে আরেকজনের দোহাই দেয় যে, অমুকের অনুমতি লাগবে। অমুককে ফোন করলে সে তমুকের কথা বলে। তথ্য না দেওয়া, গোপন করা এবং এই অদ্ভুত অনুমতি কালচারের অবসান ঘটাতে হবে।
হয়তো পুরো বিষয়টা ‘ইউটোপিয়ান’ মনে হচ্ছে। কিন্তু ৫ অগাস্ট বাংলাদেশে কী ঘটবে, তা কি আগের দিনও দেশের মানুষ জানত? ৫ অগাস্টের ঘটনাও কি ৪ তারিখে ইউটোপিয়ান মনে হয়নি? সুতরাং, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সত্যিই সেই সংস্কার চাইলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যে, চাইলেও সেখান থেকে কেউ চুরি করতে পারবে না। প্রকল্পের পরিকল্পনা পর্যায় থেকে ঠিকাদারের কাজ বুঝিয়ে দেওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় শুদ্ধাচার চর্চার কথা অনেক বছর ধরেই বলা হচ্ছে। কিন্তু পরিহাস হলো, এমনও অনেকে শুদ্ধাচার পুরস্কার পেয়েছেন, পরবর্তীতে দেখা গেছে তাদের অনেকে ‘দুর্নীতির জাহাজ’। তার মানে সবকিছুই চলেছে আসলে একধরনের ফাঁকিবাজির মধ্য দিয়ে। অতএব ওই ফাঁকিবাজি বন্ধ করতে না পারলে ‘রাষ্ট্র সংস্কার’ অসম্ভব।