কানাডার শরণার্থী বিতর্ক: নীতি-নৈতিকতা ও ভুক্তভোগীর প্রশ্ন

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নানা কারণে যেমন শিক্ষা, ভ্রমণ, আমন্ত্রণ, সভা-সম্মেলনের নামে কানাডায় আসার পর নিজ দেশে জীবন বিপন্ন— এমন দাবি করে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

মঞ্জুরে খোদামঞ্জুরে খোদা
Published : 14 March 2024, 01:00 PM
Updated : 14 March 2024, 01:00 PM

এতদিন আলোচনা ছিল কানাডা হচ্ছে বেগমপাড়া। অর্থপাচার, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। ওই শিরোনামের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে শরণার্থী, কর্মহীনতা ও আবাসন সংকটের দেশ কানাডা। আলোচনা ও প্রচার আছে এখন কানাডায় যাওয়া কোনো বিষয় না, টাকা থাকলেই যাওয়া যায়। কিছু পত্রিকা, টিভি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন আলোচনা সামনে আসছে। আসলে ব্যাপারটা কী ওরকম? একটু আলোচনা করা যাক। 

অভিবাসী একটি স্বীকৃত ধারণা। অভিবাসীর সুনির্দিষ্ট অর্থ ও উদ্দেশ্য আছে। এর সঙ্গে আছে রাজনীতি, অর্থনীতি, ভৌগোলিক বিষয়ও। কানাডায় যথাযথ প্রক্রিয়ায় অভিবাসন প্রদান করা হয়। অভিবাসন প্রদানের বিভিন্ন ভাগ আছে, অভিবাসন প্রত্যাশীদের যোগ্যতা ও অবস্থার ভিত্তিতে যা প্রদান করা হয়। 

অভিবাসী ও শরণার্থী শব্দের অর্থে মিল থাকলেও এ দুটির অবস্থা এক নয়। এই দুইয়ের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া আলাদা। অভিবাসন ইচ্ছুকরা সুনির্দিষ্ট যোগ্যতার ভিত্তিতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করে ওই সুযোগ গ্রহণ করেন।

আর শরণার্থী হচ্ছে কোনো দেশ ও অঞ্চলের বিশেষ অবস্থা-বাস্তবতায় অন্য কোনো দেশ বা অঞ্চলে আশ্রয় প্রার্থনা করাকে বুঝায়। সংকটাপন্ন মানুষদের মানবিক কারণে কোনো দেশ তাদের আশ্রয় প্রদান করে। যেমন বাংলাদেশে মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গারা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় পেয়েছে। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেইনের নাগরিকদের ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশ শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দিয়েছে। রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়, মত-পথ, লেখালেখি, মুক্তচিন্তার হুমকির কারণে যে কেউ আশ্রয় প্রার্থনা করতে পারেন।

এই সব অবস্থা-বাস্তবতা ব্যতিরেকে কানাডায় শরণার্থীর সংখ্যা অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় একটা বড় সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। কেন, কীভাবে শরণার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেল? করোনার পর কানাডার ভিসাপ্রাপ্তি সহজ করায় বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নানা কারণে যেমন শিক্ষা, ভ্রমণ, আমন্ত্রণ, সভা-সম্মেলনের নামে কানাডায় আসার পর নিজ দেশে জীবন বিপন্ন—  এমন দাবি করে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। শুধু গতবছর ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ মানুষ রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। তারপরও অনেকে এসেছেন এবং আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। ওই হিসেবে ধরলে এ সংখ্যা আরও বাড়বে।

অনেকের ধারণা কানাডায় কোনোভাবে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করলেই আশ্রয় পাওয়া যায়। কানাডার সরকার কাউকে বঞ্চিত করে না। বিষয়টা কি আসলে তাই? এক্ষেত্রে শরণার্থী হিসেবে শুধু বাংলাদেশীদের আবেদন ও প্রত্যাখানের চিত্রটা একটু দেখে নেয়া যাক।

কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগরের তথ্য মতে, ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে কানাডায় আসা নাগরিকদের ৭২৫টি আবেদন রিফিউজি বোর্ডে পাঠনো হয়েছিল, তার মধ্যে ৪৯৩ জনের আবেদন গৃহীত হয়েছে। ২০২৩ সালে ২৪০০ জনের আবেদন পাঠানো হয়েছিল এবং তাদের ৬০৭ জনের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। তার মানে ২০২২ সালে অর্ধেকের মত এবং ২০২৩ সালে চার ভাগের এক ভাগ আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। আবেদনের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে এবং আবেদন গ্রহণের সংখ্যা কমছে। বর্তমান বাস্তবতায় আশ্রয় প্রত্যাশীদের আবেদন আরও নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করে উপযুক্ত প্রমাণসাপেক্ষে তা গ্রহণ করা হবে। এ প্রসঙ্গে অভিবাসন মন্ত্রী মার্ক মেলার বলেছেন, বিষয়টা এমন নয় যে, কানাডার মাটিতে এসে দাবি করলেই তাকে আশ্রয় দেয়া হবে। এক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেননা, বিপুল সংখ্যক রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার মাধ্যমে তারা কানাডার সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে নানাভাবে চাপের সৃষ্টি করছে। আইআরসিসি’র (ইমিগ্রেশন রিফিউজি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কানাডা) মুখপাত্র মেরি রোজ সাবিতা বলেন, আবেদন করলেই সে আবেদন গৃহীত হবে তা নয়। যারা আবেদন করেছেন, তাদের প্রত্যেকের আবেদন এক এক করে দেখা হবে। প্রত্যেকের সিকিউরিটি স্ক্রিনিং চেক করা হবে। 

তার মানে আশ্রয় প্রার্থনার ক্ষেত্রে যাদের সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে তারাই শুধু আশ্রয় পাবেন অন্যদের সেই সম্ভাবনা নেই বললেই চলে, যদি না সরকার কোনো বিশেষ সুবিধা প্রদান করেন। বর্তমান দুনিয়ায় তথ্য প্রাপ্তি কোনো কঠিন বিষয় নয়। এক্ষেত্রে সরকার সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে আইনি পদক্ষেপ নেবে এটাই স্বাভাবিক।     

আশ্রয় প্রার্থনার ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া চলাকালে আশ্রয় প্রার্থীকে কানাডা সরকার সামান্য অর্থ ও সীমিত কাজের অনুমতি দিয়ে থাকে। কাজের অনুমতি না থাকলে কেউ কাজ করতে পারে না এবং তাকে কর্মহীন থাকতে হয়। এই বিপুল সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থীর কর্মহীন থাকাকে যদি কানাডায় কোনো কাজ নেই বলে প্রচার করা হয় সেটা সঠিক প্রচারণা নয় বরং একটি দেশের অবস্থা-বাস্তবতাকে ভিন্নভাবে তুলে ধরা হয়। কানাডায় কাজের সংকট আছে সত্য কিন্তু টিকে থাকার কাজও নেই বিষয়টা এমন নয়। যাদের কাজ নেই বলে প্রচার করা হচ্ছে তারা আসলে কানাডার নাগরিক নয় রিফিউজি। তাদের কাজের অনুমতিই নেই।

যারা সঠিক তথ্য প্রদান করেন তারা বৈধভাবেই এখানে থাকার সুযোগ পান, যারা পারেন না তারা ওই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। তবে অনেকে আইনজীবীদের সহায়তায় মিথ্যা অথবা সত্য-মিথ্যার সংমিশ্রনে তথ্য দিয়ে নিজেদের অবস্থান প্রমাণ করে রাজনৈতিক আশ্রয় পান। প্রশ্ন হচ্ছে যারা মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন তারা কি নৈতিক কাজ করছেন? তারা কি মনে করেন এটা অন্যায় নয়? যারা আইনি সহায়তা করছেন তারাও মোটা অংকের বিনিময়ে সে কাজটি করছেন। মিথ্য তথ্য তৈরি ও প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করছেন। সেটা কি তাদের পেশা ও শপথের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ? আইনের মানুষ হয়ে অর্থের বিনিময়ে বেআইনি কাজ করা কতটা যৌক্তিক? যদি মনে করেন কারও উন্নত ও নিরাপদ জীবনের জন্য সেটা করাই যায়। তাহলে প্রশ্ন, অস্বাভাবিক শরণার্থীর কারণে সমাজে যে সংকট তৈরি হচ্ছে ও ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে সেক্ষেত্রে নাগরিক হিসেবে আপনার দায় কী?  

কোনো দেশে আইনের শাসন থাকলে এবং তার অপব্যবহার হলে— সেটা কি আইনের শাসনের দুর্বলতা নয়? যদি অন্যায়, অনৈতিক অভিবাসন প্রত্যাশীদের পক্ষে লিখি তাহলে কানাডার আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা-অসম্মান জানানো হয়। আর যদি কানাডার আইনের শাসনের পক্ষে লিখি তাহলে অভিবাসন প্রত্যাশীদের স্বার্থের বিপক্ষে চলে যায়। তাদের স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষাকে আঘাত-আহত করা হয়। কানাডার নাগরিক হিসেবে আমাদের অবস্থান একরকম আর বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের অবস্থান হয় তার বিপরীতমুখী। তাহলে কোনটা করা আমাদের জন্য সমীচীন? 

আমরা এদেশে এসেছি আইনের শাসনের জন্য। সেটা যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, ভেঙ্গে পড়ে তাহলে আমরা যে উদ্দেশ্যে এখানে এসেছি সেটা নিয়ে কি গর্ব করার কোনো কারণ থাকবে? তার দুর্বলতার ক্ষতির স্বীকার কি আমরা হবো না? ইতোমধ্যে আঞ্চলিক সরকারগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের নানা দুর্বলতার কথা বলছে, অভিযুক্ত করছে। কানাডার সামাজিক সুযোগ-সুবিধার সংকট ও চাপের কথা বলছে। বিপুল শরণার্থীর চাপে সামাজিক সমস্যা তৈরি করছে। আর্থিক সংকটের এই সময়ে প্রায় বিলিয়ন ডলারের বাড়তি বাজেট তৈরি করতে হচ্ছে। যাদের করের অর্থ এখানে যাচ্ছে, সেই জনগণ কি এগুলো স্বাভাবিকভাবে নেবে, নিচ্ছে? এ বিষয়ে আপনাদের বক্তব্য কী? 

কানাডার বেগমপাড়া ও লুটেরা বিরোধী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে প্রতিনিয়ত আমরা বলছি যে, বাংলাদেশের অর্থপাচারকারী, দুর্নীতিবাজ, লুটেরাদের স্থান এখানে হবে না। যখন থেকে বলছি তখন থেকেই প্রবাসীদের একাংশ প্রশ্ন করছেন, যারা দেশ থেকে অর্থপাচার করে আনছে শুধু কি তারাই দুর্নীতিবাজ? যারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে, ভুল কাগজ দিয়ে, জালিয়াতির মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা খরচ করে কানাডায় আশ্রয় নিচ্ছেন, তারা কি দুর্নীতিবাজ নন? সেটাও যদি অন্যায় হয় তাহলে তা নিয়ে আপনাদের বক্তব্য কোথায়? যদিও আমরা বার বার বলেছি, আমরা ব্যক্তির অসততা, অনৈতিকতা নিয়ে নয় বরং যারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করে সমষ্টির অর্থ আত্মসাৎ করছে তার বিরুদ্ধে কথা বলছি। তারপরও তারা আমাদের অভিযুক্ত করে বলছে, অন্যায় তো অন্যায়ই তার কোন ব্যক্তি-সমষ্টি হয় না।   

কানাডা একটি মানবিক দেশ কিন্তু তাদের সেই মানবতা পক্ষপাতহীন নয়। ইউক্রেইনের জন্য তাদের দরজা উন্মুক্ত থাকলেও ফিলিস্তিনের জন্য থাকে না। তাহলে কীভাবে বলবেন তাদের এই ভাবনা নিরপেক্ষ? কানাডা অনেক বড় দেশ তাদের জায়গার অভাব নেই, তাহলে কেন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে না? বাংলাদেশের মত ছোট দেশ, বিশাল জনসংখ্যার ওপর কেন মানবতার কথা বলে এই ভার চাপিয়ে দেয়া হলো? তাহলে বাংলাদেশ থেকে যে কয়েক হাজার শরণার্থী এখানে এসেছে তাদের কেন ফিরিয়ে দেয়া হবে? বাংলাদেশ যদি ১৫ লাখ রোহিঙ্গার দায় নিতে পারে তাহলে আপনারা কেন ২৫ হাজার বাংলাদেশীর দায় নিতে পারবেন না?

আমরা রাজনীতির ওপরে মানবতাকে স্থান দেই। কিন্তু সেই মানবতা কাদের জন্য? যাদের জীবন প্রকৃতই বিপন্ন, সংকটাপন্ন ও হুমকির মুখে তাদের জন্য। কিন্তু এই রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টা যদি অবিশ্বাস ও অনির্ভরতার স্থানে চলে যায় ও নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে যাদের প্রকৃতই ভবিষ্যতে এই সুযোগ দরকার হবে, তারা কি তা পাবে? নিশ্চিতভাবেই বঞ্চিত হবে। 

অভিবাসন সুবিধা নিতে যারা অনিয়মের আশ্রয় নিচ্ছেন তাদের কারণে যারা বৈধ ও সঙ্গত কারণে যারা কানাডায় আসতে চাইবেন তারা ভুক্তভোগী হবেন। অভিবাসীদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনরা ভিসা বঞ্চিত হবেন। কীভাবে? তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ এখানে উল্লেখ করছি। এ বছরের ৩ থেকে ২২ এপ্রিল কানাডায় আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতার একটি আসর বসতে চলেছে। ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ১৬ জন দাবাড়ু এবং সংশ্লিষ্ট মোট ৪০ জন ভিসার আবেদন করেছিলেন, তাদেরকে ভিসা প্রদান করা হয়নি। সর্বশেষ তথ্য মতে, ৪ মাস আগে আবেদন করে মাত্র ২ জন ভিসা পেয়েছেন। অথচ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট। শুধু শরণার্থী এবং অভিবাসী সংকটের কারণেই বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীরা ভুক্তভোগী হলেন ও একটি আন্তর্জাতিক আয়োজন অনিশ্চিত হতে চলেছে।   

কানাডায় বেকারত্বের সমস্যা ছিলই। করোনা, ইউক্রেইন যুদ্ধ অর্থনৈতিক সংকটকে তীব্র করেছে। পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে শরণার্থীর ঢল। যেটা এই সংকটে নতুন মাত্রা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি কানাডার বাঙালি কমিউনিটির ভাবনায় দ্বিধাবিভক্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একটি অংশ মনে করে যারা রিফিউজি হিসেবে এসেছেন তারা কানাডার সংকটকে বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশে এমন কোনো অবস্থা তৈরি হয়নি যে ঝাঁকে ঝাঁকে কানাডায় এসে এমন কর্মহীন অনিশ্চয়তার অবস্থায় পড়তে হবে। কারণ তারা যে পরিমাণ অর্থ খরচ করে এখানে এসেছেন, এর সঙ্গে মামলা-মোকদ্দমায় যে পরিমাণ অর্থ খরচ করবেন সেটা খুব লাভের কিছু হবে না। তারচেয়ে বড় বিষয় যে মানসিক ও সময়ের ক্ষতির স্বীকার হবেন তা বহন করা কঠিন হবে। অতঃপর লেখাপড়া, পেশা ও পরিবারের বিষয় তো আছেই। যারা সরাসরি অবিভাসন নিয়ে আসেন তাদেরই এখানে প্রতিষ্ঠা পেতে ৫-৭ বছর লেগে যায়। আর এই শরণার্থীদের সংগ্রাম হবে আরও যন্ত্রণাময় ও কঠিন। তারপরও সবার আবেদন গৃহীত হবে এমনটা নয়। গতবছর বাংলাদেশে থেকে আসা শরণার্থীদের আবেদনের ৪ ভাগের একভাগ গৃহীত হয়েছে মাত্র। এ বছর নিঃসন্দেহে তার চেয়ে অনেক কম হবে সংশ্লিষ্টদের মতামতে এমন ধারণা স্পষ্ট। উপরন্তু এর সঙ্গে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির প্রশ্নটি তো আছেই। 

সুতরাং যারা যৌক্তিক ও উপযুক্ত কারণ ছাড়া কোনোভাবে কানাডায় এসে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার মাধ্যমে এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করার চিন্তা করছেন, তাদের বলি এখানকার বর্তমান বাস্তবতায় সেই ভাবনা পরিহার করুন।