Published : 15 Oct 2012, 12:52 PM
আজ থেকে ঠিক আটানব্বই বছর আগে – ১৯১৪ সালে – বুদ্ধগয়ায় গিয়ে, বুদ্ধমূর্তি দর্শন করে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবলভাবে আবেগাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। বিনম্র-চিত্তে ঝুঁকে পড়ে তিনি বুদ্ধমূর্তিকে তাঁর গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। এ বিষয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত ১৯৪৩ সালের বিশ্বভারতী কোয়ার্টারলি (Visva-Bharati Quarterly, April, 1943) জার্নালের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রবন্ধে কৃষ্ণ কৃপালিনী উল্লেখ করেন:
Only once in his life, said Rabindranath, did
he feel like prostrating himself before an image, and that was when he saw the Buddha at Gaya.
মৃত্যুর কয়েক বছর আগে – ১৯৩৫ সালে – বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর "বুদ্ধদেব" শিরোনামের রচনায় উল্লেখ করেন:
আমি যাঁকে অন্তরের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব বলে উপলব্ধি
করি, আজ এই বৈশাখী পূর্ণিমায় তাঁর জন্মোৎসবে আমার
প্রণাম নিবেদন করতে এসেছি।
আজকের এই অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের জীবনের এই দু'টি ঘটনাকে বিশেষভাবে মনে পড়ছে। মনে পড়ছে এই কারণে যে, যে বুদ্ধকে তিনি মনুষ্যত্বের সর্বোত্তম উৎকর্ষের প্রতিরূপ বলে বিবেচনা করতেন- তাঁরই ভক্তবৃন্দের জীবনসম্পদ আজ বিপন্ন, প্রার্থনাঘর আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত। কবিগুরুর সেই অমরবাণী "হে মোর দূর্ভাগা দেশ যাদের করেছো অপমান, অপমানে হতে হবে তাদের সবার সমান" খুব মনে পড়ছে।
২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ পার্বত্য চট্টগ্রামের রামু, উখিয়া ও আশপাশের এলাকায় যে নারকীয় ঘটনা ঘটেছে, আমাদের স্বজন বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনাগৃহে ও আবাসস্থলে যে আক্রমণ হয়েছে, তা আমাদের সবাইকে বিমুঢ় করেছে, উদ্বেগাকুল ও ক্ষুব্ধ করেছে। অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এমন একটা ক্ষতি হয়েছে আমাদের প্রিয় বৌদ্ধভাইবোনদের, এমন একটা অসম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে তাদের বিশ্বাস আর যাপিত জীবনের প্রতি, আজ যেন সভ্যতার সংকট দেখা দিয়েছে। যে রাতে বুদ্ধের মন্দির আর তাঁর আদর্শের মানুষদের ঘরে আগুন দেওয়া হয়, সে রাতে কেবল বৌদ্ধসম্প্রদায়ের আত্মাই পোড়েনি, পুড়েছে বাংলাদেশের আত্মাও। দেশের আত্মা থাকে দেশবাসীর হৃদয়ে, মানুষে-মানুষে সম্পর্কের বুননে। দেশ কোনও বিমূর্ত বিষয় নয়। দেশ মানে দেশবাসীর সংহতি, নাগরিক আত্মীয়তা এবং প্রতিবেশিতায় আস্থা ও বিশ্বাস। রামুর আগুনখেকোরা দেশের আত্মাকে দগ্ধ করেছে। আর তা করা হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মের নামে। তা করা হয়েছে বাঙালিত্বের নামেও। রাঙামাটি থেকে রামুতে, ২০০১ থেকে ২০১২-তে তারা কেবল হিন্দু, বৌদ্ধ, চাকমা-মারমা-ত্রিপুরা-গারো ও রাখাইন সমাজকেই আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করেনি, তাদের আসল নিশানায় ছিল বাংলাদেশ এবং তার বহুজন-জাতি-ধর্মের হাজার বছরের পরিচয়। প্রতিটি সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত আক্রমণে প্রথমত যা আক্রান্ত হয়েছে তা আমাদের জাতীয় সংহতি।
সাম্প্রতিক রাঙামাটিতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর বাঙালির নামে সন্ত্রাস এবং কক্সবাজার অঞ্চলের রামু ও উখিয়াতে বৌদ্ধসম্প্রদায়ের ওপর চালানো সহিংসতাকে তাই সর্বজনীন দেশের ধারণাকে হুমকির মুখে ফেলে। মুক্তিযুদ্ধের জনপ্রিয় স্লোগানগুলোর মধ্যে ছিল, 'বাংলার হিন্দু, বাংলার খ্রিস্টান, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার মুসলমান, আমরা সবাই বাঙালি।' বায়ান্নোর একুশের চেতনার ধারাবাহিতায় উপনিবেশবাদী পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় সংগ্রামের শ্লোগান হিসেবে তা ভুল ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশে যেহেতু অবাঙালি জনগোষ্ঠীও আছে তাই স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের পর ওই সচেতন সাবধানতার প্রয়োজন ছিল যাতে বাঙালি জাতি-রাষ্ট্রের পরিচয় অতিক্রম করে রাষ্ট্রটি হয় বাঙালি-অবাঙালি নির্বিশেষে সবার। রাষ্ট্রটি হয় গণতান্ত্রিক এবং মানবিক। দুঃখজনকভাবে তা হয়নি। নতুন রাষ্ট্রে অবাঙালিদের পরিচয়ের স্বীকৃতি না থাকায় তারাও রাষ্ট্রকে আপন ভাবতে পারল না। রাষ্ট্রও সংখ্যালঘিষ্ঠের সুরক্ষায় সচেষ্ট হল না। সংখ্যাগরিষ্ঠের নিরব আধিপত্য এবং সরব সাম্প্রদায়িক-সহিংসতা বাঙালি ও মুসলমান ভিন্ন অন্য জাতি ও সম্প্রদায়কে কোনঠাসাই করে রাখল। সম্রাট অশোক, সম্রাট আকবর এবং মহাত্মা গান্ধি থেকে শুরু করে মাওলানা ভাসানী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অসাম্প্রদায়িক দেশনির্মাণের কর্মসূচি গভীরে শেকড় গাড়তে পারল না।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ একদিকে, রাষ্ট্র বা দেশের ধর্মভিত্তিক এককবাদী আত্মপরিচয় নির্মাণের ঔপনিবেশিক প্রকল্পকে প্রত্যাখান করেছিল, একই সঙ্গে বঙ্গীয় সাংস্কৃতিক জমিনে বহুত্ববাদের সুপ্রাচীন ধারাকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এই ব-দ্বীপের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান সমাজ-ইতিহাসের দীর্ঘকাল ধরেই জন-জাতি-ধর্ম-সংস্কৃতির বহুত্ববাদকে ধারণ করে এসেছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মের পরিচয়ে রাষ্ট্রে এককবাদী পরিচয়ের প্রাবল্য মূলত ঔপনিবেশিক শক্তির 'ভাগ কর এবং শাসন কর' নীতি ও কৌশলের প্রেক্ষিত থেকে সৃষ্ট। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উৎসারিত ধর্মীয় বহুত্ববাদ উপমহাদেশীয় রাজনীতিতে নজিরবিহীন এবং শাসকগোষ্ঠীর বিভেদ-সৃষ্টিকারী রাজনীতির প্রতি শোষিত সম্প্রদায়ের ঐতিহাসিক জবাব। স্বাধীন বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল সংবিধান গণমানুষের আকাঙ্খাসঞ্জাত এই বহুত্ববাদী চেতনার উপরে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তা বরাবরই দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ডানপন্থী রাজনীতির আক্রমণের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হয়।
একদিকে, সামরিক শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রের সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে ধর্মীয় এককবাদী পরিচয়কে প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস চলেছে; অন্যদিকে, জন-জাতি-ধর্ম-সংস্কৃতির বহুত্ববাদ বার-বার সহিংস আক্রমণের শিকার হয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসকে এর আগে ধারাবাহিকভাবে সংঘটিত বাউল সম্প্রদায়, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ছায়ানট সাংস্কৃতিক আন্দোলন, হিন্দু বা কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের উপর সংঘটিত আক্রমণগুলো থেকে পৃথক করে দেখার সুযোগ নেই। এ সব আক্রমণের মধ্যদিয়ে ধর্মীয় ডানপন্থা বাংলার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের ভিন্নতা এবং বহুবাদীতার চিহ্নগুলো মুছে এককবাদী পরিচয় নির্মাণে সদা সচেষ্ট। ৯/১১-উত্তর বিশ্বে যুদ্ধাপরাধী জুনিয়র জর্জ বুশের 'হয় তুমি আমাদের পক্ষে অথবা বিপক্ষে' নীতি বা তথাকথিত 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একক পরাশক্তিবাদী রাজনৈতিক বিষবাষ্পের আবহ তৈরি করেছে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের বহুত্ববাদী চেতনা ও ধারা ক্রমবর্ধমানভাবে দেশি এবং বিদেশি ডানপন্থী রাজনীতির আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংহতি হয়েছে আক্রান্ত।
আমাদের তাকাতে হবে আরও গভীরে। রামু-ঊখিয়ায় বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের ঊপর আক্রমণ দৃশ্যত সাম্প্রদায়িক মনে হলেও এটা আসলে জাতীয় সংহতির ওপর রাজনৈতিক আক্রমণ। তারা এক ঢিলে সংখ্যাগুরুকে অপরাধী আর সংখ্যালঘুকে প্রতিপক্ষ করতে চেয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক ও সুদূরপ্রসারি। বৌদ্ধধর্মাবলম্বী চীন, জাপান এবং আশিয়ানভুক্ত দেশসমূহকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার নীল-নকশা করা হয়েছে। মুখ্যত বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের আরাকান থেকে মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের সূত্র ধরে এরা এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে যেন মনে হয় বাংলাদেশ কেবল মুসলমানদের দেশ। সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু উভয়েরই এরা দুশমন। এমন সর্বনাশা ভুলের কারণেই পাকিস্তান আজ ধ্বংসের কিনারে। রামু-বিপর্যয়ে অন্ধকারের শক্তি যে ধ্বংসের বার্তা বহন করে এনেছে, তার মধ্যে আগামিদিনের বাংলাদেশের সমূহ বিপদ সবাইকে বুঝতে হবে। অন্যদিকে তাকাতে হবে কোনঠাসা, আগ্রাসনে চাপা-পড়া জনগোষ্ঠীর আহত আত্মার গভীরেও।
রাষ্ট্রের চরিত্র নিয়ে আজ আমাদের ভাবতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল শুধু স্বাধীন দেশ নয়, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেরও। পরিতাপের কথা, গত চারদশকে রাষ্ট্র তার গণতান্ত্রিক চরিত্র অর্জন করতে পারেনি। তাই আক্রান্ত বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের প্রতিরক্ষায় স্বতস্ফুর্তভাবে রাষ্ট্র-প্রশাসন এগিয়ে আসেনি। ভাবতে হবে আমাদের বর্তমান সংবিধান নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের ফসল হিসেবে আমরা পেয়েছিলাম ৭২-এর সংবিধান যার অন্যতম ভিত্তি ছিল অসাম্প্রদায়িকতা। উপর্যপুরি সেনা-স্বৈর-মৌলবাদী শাসনে সে সংবিধানের সর্বজনিন চরিত্রকে মলিন করা হয়েছে। সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে যুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকে পরিহাস করা হয়েছে। কার্যত তাকে পরিণত করা হয়েছে একটি বিশেষ ধর্মের সংবিধানে।
আরও ভাবতে হবে সংখ্যাগুরু-মনস্তত্ত্বে সাম্প্রদায়িক হিংসা-বিদ্বেষের উপস্থিতির কথা। তেমনই বিশ্বায়িত দুনিয়ায় তথ্যপ্রযুক্তির অভাবিত উন্নতির কারণে গুগল-ফেসবুক-ইউটিউব-এর মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনও স্থানের ঘটনা যত দ্রুত ও ব্যাপকতার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষকেও প্রভাবিত করে এবং নতুন সব ঝুঁকির মুখে আমাদের ঠেলে দেয় তার ভয়াবহতা নিয়েও। পাশ্চাত্যে ক্রমাগত ইসলামবিদ্বেষ ও মুসলিম দেশগুলোতে আগ্রাসনে আতঙ্কিত মুসলিম চেতন স্পর্শকাতর হয়ে আছে। সংখ্যাগুরুর এই তটস্থ মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার অপশক্তিরও অভাব নেই। অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতা-বোধে জর্জরিত অবাঙালি ও অমুসলিম জনগণও ভীত ও আহত। প্রতিটি সম্প্রদায় ও পরিচয়কে পরস্পরের বিরুদ্ধে চালনা করার এই পরিস্থিতি বাংলাদেশ সরকার ও রাষ্ট্রের জন্য গুরুতর নিরাপত্তা-উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান, সমুদ্রসীমা, খনিজ সম্পদ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা মিলিয়ে এই পরিস্থিতিকে মোটেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
রামুর পোড়া বুদ্ধমূর্তিগুলো ও বৌদ্ধ ভাইবোনদের অশ্রুতে আমরা কোন সত্য প্রত্যক্ষ করব? এভাবেই কি জাতি, সমাজ, সম্প্রদায় আর ধর্মের মধ্যকার বৈচিত্র্য আমরা ফাটলে পরিণত হতে দেব? দেশ, সমাজ, সম্প্রদায় ভাগের শেষে এমনকী পরিবার-ভাগের শেষে আমরা কি আমাদের মনটাকেও ভাগ করতে বসব? এভাবে ভাঙতে-ভাঙতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াব আমরা? একটাই দেশ আমাদের, একটাই রাষ্ট্র আমাদের, একে আমরা আর ভাগ হতে দিতে পারি না। এখনই প্রয়োজন বাংলার হিন্দু, বাংলার খ্রিস্টান, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার মুসলমান আর বাংলার জাতিগত সংখ্যালঘুরা এক হয়ে স্বদেশকে আপন করার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার।
সেটাই একাত্তরের পথ। পথ-হারানো বাংলাদেশকে তাই আবার একাত্তরের অভিজ্ঞতা ও ঐক্যের কাছেই ফিরতে হবে। সে ঐক্যের লক্ষ্য হবে সাংবিধানিকভাবে স্বদেশকে ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে দেশবাসীর হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। সে বাংলাদেশে জাতিগত সংখ্যালঘু, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার হিন্দু, বাংলার খ্রিস্টান, বাংলার মুসলমান সবাই হবে এ দেশের সন্তান – এই বলে আমরা গর্ব করতে পারি।
আমার এ বক্তব্যের শেষে আমি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা 'নবযুগ' প্রবন্ধ থেকে ক'টি বাক্য উদ্ধৃত করতে চাই।
নজরুল আমাদের সবাইকে উদাত্ত চিত্তে আহবান করে বলেন:
এসো ভাই হিন্দু! এসো মুসলমান! এসো বৌদ্ধ!
এসো ক্রিশ্চিয়ান! আজ আমরা সব গণ্ডী কাটাইয়া,
সব সংকীর্ণতা, সব মিথ্যা, সব স্বার্থ, পরিহার করিয়া
প্রাণ ভরিয়া ভাইকে ভাই বলিয়া ডাকি।
আসুন নজরুলের অমরবাণী
গাহি সাম্যের গান
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই,
নহে কিছু মহীয়ান
আমরা স্মরণ করি এবং হৃদয় দিয়ে আত্মস্থ করি।
( ১১ অক্টোবর ২০১২ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে রামু-উখিয়া-পটিয়াতে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের উপর সহিংসতার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আয়োজিত সেমিনারে প্রবন্ধটি উত্থাপিত হয়। প্রবন্ধ রচনায় আমাকে সাহায্য করেন অধ্যাপক আহমেদ রেজা, ফারুক ওয়াসিফ, আবু আহসান মিশু, সানজীব হোসেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন তরুণ শিক্ষক।)
অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন: উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।