Published : 21 Aug 2016, 11:06 AM
সাম্প্রতিককালে ভারতের উত্তরপূর্বের তিনটি রাজ্যের ঘটনাপ্রবাহে নতুন করে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে গোটা দেশে। মণিপুরে ১৬ বছরের অনশন ভঙ্গ করে রাজনীতিতে আসার কথা জানিয়েছেন ইরম শর্মিলা চানু। আরুণাচল প্রদেশে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কালিখো পুলের। এছাড়া ত্রিপুরা দখল করে সেখান থেকে কম্যুনিস্ট শাসকদের বিতাড়ন করতে আগরতলায় যান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আপাতদৃষ্টিতে তিনটি ঘটনার মধ্যে কোনো প্রত্যক্ষ যোগাযোগ নেই, কিন্তু তিনটি ঘটনার মধ্যে দিয়েই নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে উত্তরপূর্ব ভারতকে নিয়ে।
মণিপুরকন্যা চানু আন্দোলন শুরু করেছিলেন মণিপুরসহ গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন (আফস্পা) প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে। নিতান্ত গান্ধীবাদী সেই আন্দোলন চলেছিল টানা ১৬ বছর। এই ১৬ বছর তিনি নিজের হাতে জল পর্যন্ত স্পর্শ করেননি। হাসপাতালে জোর করে খাওয়ানো হত তাঁকে। তাঁর বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা তো ছিলই, ছিল রাজনৈতিক মহলের প্রলোভন। তবু এতদিন মচকাননি লৌহমানবী ইরম শর্মিলা চানু। কিন্তু নিতান্ত ব্যক্তিগত জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে গত ৯ আগস্ট তিনি অনশন ভঙ্গ করেন এক নার্সের হাত থেকে মধু খেয়ে। সবাই জানতেন, দীর্ঘদিনের ব্রিটিশ প্রেমিককে বিয়ে করার জন্যই অনশন ভাঙতে উদগ্রীব ছিলেন তিনি। কিন্তু ভাঙার পরেই ঘোষণা করেন, তিনি সক্রিয় রাজনীতি করবেন। সংসদীয় রাজনীতিতে জিতে এসে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। মুখ্যমন্ত্রী হয়েই তিনি সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করবেন। কুড়িজন নির্দল বিধায়ককে তিনি তাঁর সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
কিন্তু অনশন ভাঙার কিছুক্ষণের মধ্যেই বোঝা গেল, তাঁর কাছের লোকজন মনে করছেন জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন চানু। আত্মীয়স্বজন থেকে শরু করে আন্দোলনের সঙ্গীরা– সবাই মনে করছেন, তিনি ভুল পথে চলছেন। অনশন ভাঙার আগেই দাদা সিংহজিৎ জানিয়ে দেন, মা সখীদেবী চান না পরাজিত মেয়ে বাড়ি ফিরুক।
চানু অনশন ভঙ্গ করে বলেন, আফস্পা এখনও ওঠেনি। তাই তিনি এখন বাড়ি ফিরছেন না। মায়ের সঙ্গেও দেখা করছেন না!
দীর্ঘদিনের শুভানুধ্যায়ী প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুরেশের বাড়িতে রাত কাটাতে গিয়েছিলেন চানু। কিন্তু চানুর নাম নিয়েই তৈরি করা সংগঠন 'শর্মিলা কানবা লুপ'-এর প্রতিবাদে তাঁকে সুরেশের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। সেখান থেকে অন্য একটি জায়গায় যান তিনি। প্রতিবাদী মহিলারা সেখানেও ভ্যান থেকে নামতে দেননি চানুকে। শেষে পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। রাতে অবশ্য শরীর খারাপ হওয়ায় তাঁকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পর দিন তিনি হাসপাতালে তাঁর সেই চেনা ঘরেই কাটান। সকালে মধু আর জল খেয়ে দিন শরু করেন। তারপর খান হরলিক্স। দুপুরে গলা ভাত। আপাতত তিনি হাসপাতালেই থাকবেন বলে মনস্থির করেছেন। পরে আশ্রমবাসী হবেন।
শোনা যাচ্ছে, চানু ইসকনের (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস) স্থানীয় আশ্রমে পাকাপাকিভাবে থাকতে চান। সূত্রের খবর, কাছের লোকদের কাছে প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় চানুর আর দাঁড়ানোর কোনো জায়গা রইল না। সে কথা বুঝতে পেরেই হাসপাতালে ফিরে গেছেন তিনি।
অনশন ভেঙে 'দেবী' থেকে 'মানবী' হয়েছিলেন শর্মিলা। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে বুঝে গেলেন, এই মানবীর সঙ্গে নেই মণিপুরের সাধারণ মানুষ। শর্মিলা কিন্তু মনে করেন, তিনি সঠিক রাস্তাতেই আছেন, বরং তাঁর নামে গড়ে ওঠা সংগঠন উল্টো রাস্তায় হাঁটছে।
গতকাল তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর নামে বই ছাপিয়ে এই সংগঠন নিজেদের কথা ঢুকিয়েছে। তাঁর লেখা বিকৃত করেছে। তাঁর মন্তব্য, "ওরা আমাকে জনবিচ্ছিন্ন করতে চাইছে।"
এমনকি নিজের মা-ভাইয়ের অবস্থানেরও বিরোধিতা করেছেন শর্মিলা। তাঁর ভাষ্য, "ওঁরা আসলে পরিবর্তন চায় না। আমি কিন্তু প্রকৃত গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকে লড়ে যাব।"
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে শর্মিলার নামে গড়ে ওঠা সংগঠন 'শর্মিলা কানবা লুপ' তাদের শিরোনাম থেকে 'শর্মিলা' নামটিই ছেঁটে দিয়েছে। সংগঠনের নতুন নাম হয়েছে 'আফস্পা কানবা লুপ'।
এদিকে শর্মিলার বন্ধু সুরেশ জানিয়েছেন, প্রেমিক ডেসমন্ডকে ইরমার লোকজন মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল। তাঁর নামে আসা টাকাপয়সাও এই সংস্থা নয়ছয় করেছে। সে কারণেই শর্মিলা ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে অনশন তুলে নিয়েছেন।
২০০০ সালের ২ নভেম্বর মালোম বাস স্ট্যান্ডে ১০ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে জঙ্গি সন্দেহে সেনাবাহিনী গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আফস্পা তোলার দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শর্মিলা। নয় ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট শর্মিলা মায়ের কাছে শপথ করেছিলেন, আফস্পা যতদিন না উঠবে ততদিন তিনি বাড়ি ফিরবেন না। মায়ের মুখও দেখবেন না!
কিন্তু গত ২৬ জুলাই অনুগামীদের অন্ধকারে রেখে তিনি হঠাৎই ঘোষণা করেন: অনশন ভাঙতে চান, লড়তে চান ২০১৭ সালের নির্বাচন।
স্থানীয় সময় সকাল ১১টা নাগাদ তিনি ইম্ফল হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে জেলা দায়রা আদালতে ঢোকেন। সেখান থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়েই দেখেন, তাঁর জন্য মালা নয়, অন্যকিছু অপেক্ষা করে আছে।
দীর্ঘদিনের সঙ্গী বাবলু লইতংবামের কথায়, "স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে বড় সত্যাগ্রহ আন্দোলন যে পরাজয় স্বীকার করল, তাতেই মন ভেঙে যাচ্ছে।"
সবচেয়ে বড় কথা, শর্মিলা আজ নিজের আন্দোলনকে আদালতে অপরাধ হিসেবে মেনে নিয়েছেন।
আগে ৩০৯ ধারায় তাঁকে আত্মহত্যার চেষ্টার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি নিজেকে একবারও অপরাধী বলেননি। ফলে জামিন নেননি। ওই দিন তিনি তা মেনে নিয়েই ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নেন।
এদিকে নির্জলা মিথ্যে কথা বলতে গিয়ে ত্রিপুরার লোকজনের কাছে ধরা পড়ে গেলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ রাজ্যে (পশ্চিমবঙ্গ) যেমন গোয়েবলসের কায়দায় একের পর এক মিথ্যে বলে শেষ পর্যন্ত তাঁকে সত্যিতে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেন; ঠিক সেই রকমই চেষ্টা করেছিলেন ত্রিপুরার মানুষকে বিভ্রান্ত করার। কিন্তু এমন একটা বিষয় নিয়ে তিনি মুখ খুলতে গেলেন যে বিষয়টা ত্রিপুরার মানুষ খুব ভালো করেই জানেন। ফলে মিথ্যে বলে ধরা পড়ে গিয়ে একরকম নিজেকে হাস্যাস্পদ করে তুললেন মমতা।
কী বলেছিলেন তিনি?
"শুনেছি রেল নিয়ে খুব নাচানাচি হচ্ছে। করেছে কে? সিপিআই(এম)ও করেনি, বিজেপিও না। ২০১০ সালে যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম তখন করে দিয়ে গেছি। মুকুল রায়কে পাঠিয়ে ধর্মনগর থেকে আগরতলা রেল চালিয়ে দিয়েছিলাম।"
এই নির্লজ্জ ভাষণ সাধারণের কাছে ফাঁস হয়ে গিয়েছে। তার কারণ এই রেল চলাচল শুরু হয়েছিল ২০০৮ সালে। আগরতলা থেকে ব্রডগেজ লাইন প্রকল্প ঘোষিত হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। সেই সময় দেবগৌড়ার নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় ছিল। রেলমন্ত্রী ছিলেন রামবিলাস পাসোয়ান। বরং রেলমন্ত্রী হয়ে এই ব্রডগেজ প্রকল্প পিছিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। ৯ আগস্ট বিবেকানন্দ ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে মমতা ছাড়াও হাজির ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাস। কংগ্রেস ত্যাগ করে তৃণমুল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া বিধায়করাও হাজির ছিলেন। ছিলেন সে রাজ্যে মমতার প্রধান ভরসা সুদীপ রায় বর্মন।
ওই সভায় পশ্চিমবঙ্গের সম্পর্কেও অসংখ্য মিথ্যে কথা বলা হয়। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভাড়া করে নেওয়া শিল্পীকে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের নামে কুৎসামুলক গান প্রচারিত হয়। অবশ্য কংগ্রেসের সঙ্গে গোসা করে আগেই যাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের কিছু বলতে দেওয়া হয়নি। কথা ছিল এক লক্ষ লোকের সমাবেশ হবে। কিন্তু কোথায় কী? কুড়ি হাজার লোক এসেছিল কিনা সন্দেহ। মাইক লাগানো হয়েছিল অনেক দূর পর্যন্ত, তাতেও কাজ হয়নি। সারা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গাড়ি পাঠিয়েও লোক আনা যায়নি।
মমতা বলেন, ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত সেখানে যে কংগ্রেস সরকার ছিল তার সঙ্গে তিনি নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ছিলেন। সন্তোষমোহন দেব, মানোরঞ্জন ভক্তদের সঙ্গে এ রাজ্যে আসতেন তিনি। সেই সময় কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও রিগিংয়ের একের পর এক অভিযোগ ওঠা ওই সরকারকে দরাজ সার্টিফিকেট দেন তিনি। কংগ্রেস বরাবরই সিপিআই(এম)-এর শাগরেদ। "১৯৯৩ সালে কংগ্রেস কী করে সিপিআই (এম)-কে পাওয়ারে এনেছিল জানি। নরসিমা রাও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আন্ডারস্ট্যাডিং করে সিপিআই (এম)-কে পাওয়ারে আনা হয়েছিল।"
ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ত্রিপুরায় প্রতিবাদ মিছিল হয়। সেই ব্যাপারে এতদিন রাগ পুষেছিলেন মমতা। ৯ আগস্ট ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, 'যান গিয়ে দেখে আসুন কোথায় অত্যাচার হচ্ছে? সবুজ সাথি প্রকল্পে ১৪ লক্ষ সাইকেল দেওয়া হয়েছে। ২ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হচ্ছে। ৪১টা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি করেছি। বামফ্রন্ট সরকার দেনা করে গিয়েছিল। যার রাজস্ব আসে তার ডাবল দেনা। এসব একেবারে পাল্টে দেব। এখানে আছে শুধু লুঠপাট আর চিট ফান্ড, কুৎসা আর ষড়যন্ত্র। এখানে স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল কিছু নেই। সব করে দেব। মঞ্চে মমতা যখন এইসব বলছেন তখন শ্রোতারা মাঠ ফাঁকা করে চলে যেতে শুরু করেছে।
মাত্র সাড়ে পাঁচ মাস অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে থাকা কালিখো পুলকে কি খুন করা হয়েছে? এই প্রশ্নে ক্ষোভে উত্তাল হয়েছে উত্তরপূর্ব প্রান্তের রাজ্যটির সাধারণ মানুষ ও পুলের ঘনিষ্ঠ নেতারা। স্বল্প সময়ের মধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে দ্রুত 'মানুষের মুখ্যমন্ত্রী' হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তাই গভীর রহস্যের গন্ধই পাচ্ছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা।
তাঁরা বলেছেন, শেষের দিনগুলোয় অনুশোচনায় দগ্ধ হতে হতে কালিখো পুল বলতেন, "আমি আমার জনগণের কাছে যাব। মানুষ নিশ্চয়ই আমায় গ্রহণ করবে।" ফের কংগ্রেসে ফেরার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছিলেন তিনি।
রাজ্যের প্রাক্তন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকিকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছিলেন তিনি। বিজেপির প্ররোচনায় পা দিয়ে ১১ জন বিক্ষুব্ধ কংগ্রেসি ও ১০ জন বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। সঙ্গে পেয়েছিলেন দুই ডজন নির্দলীয় বিধায়কের সমর্থনও। আনজাও জেলার কামান মিশমি উপজাতি গোষ্ঠীর সদস্য পুল ছোটবেলা থেকেই লড়াই করেছেন দারিদ্র্যের সঙ্গে। ছোটবেলাতেই হারিয়েছেন মা-বাবাকে। আসবাব তৈরি করে, বেড়া বেঁধে পেট চালাতেন। ফলে অনাথ ও দরিদ্রদের প্রতি সহানুভুতিশীল পুল ক্ষমতায় এসেই জনতার দরবার শুরু করেছিলেন। সেখানে এসে খালি হাতে কেউ ফিরত না। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে রোগী আনার কাজে দিয়ে দিতেন নিজের হেলিকপ্টার। ইটানগরের নীতিবিহারে তাঁর সরকারি বাসভবন হয়ে উঠেছিল অসুস্থ রোগীদের আত্মীয়দের থাকার জায়গা। এমনকী দিল্লি গিয়ে অরুণাচল ভবনে খবর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের খবর নিয়ে আসতেন তিনি।
তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই কার্যত গণবিক্ষোভ শরু হয়ে যায় অরুণাচল প্রদেশে। পুলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে কংগ্রেসে ফিরেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চাওনা মেইন ও তাপাং তালো। তাঁদের বাড়ি ভাঙচুর করে উম্মত্ত জনতা। ইটানগরে কার্ফু জারি করা হয়। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্য মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
বিক্ষুব্ধ মানুষ ও পুলের ঘনিষ্ঠ নেতারা দাবি করতে থাকেন, ডায়েরিতে বেশ কয়েকটি নাম লিখেছিলেন প্রয়াত নেতা। সেই নামগুলো প্রকাশ করতে হবে। আরও কিছু লেখা ছিল, প্রকাশ করতে হবে সেগুলোও। রাজ্যের ডিজিপি এস নিত্যানন্দন জানিয়েছেন, পুল একটি বড় লেখা রেখে গেছেন। সেটা ঠিক সুইসাইট নোট নয়। অন্যান্য তথ্যপ্রমাণের সঙ্গে সেটিও পাঠানো হয়েছে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য। পুলের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়া পেমা খাণ্ডু বলেছেন, পুলের মতো দয়ালু এবং দক্ষ নেতা রাজ্যে খুব কমই এসেছেন।