৭৫ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় ২৪ বছর বয়সের আগেই। অর্থ্যাৎ তরুণ নারী এই উচ্চ ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।
Published : 09 Oct 2023, 08:23 AM
নারীর মানসিক স্বাস্থ্য আগের তুলনায় খারাপের দিকে যাচ্ছে। ১৯ শতাংশ নারী, অর্থাৎ প্রতি পাঁচ জনে প্রায় একজন অস্থিরতা নয়ত অবসাদে ভুগছেন।
নারীর তুলনায় পুরুষের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা কিছু কম বলে জানাচ্ছে এজেন্ডা অ্যালায়েন্স ডটকম। মানসিক সমস্যায় ভুগছেন এরকম পুরুষের হার ১২ শতাংশ।
ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেস্টারের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে যারা একবার হলেও নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন, তাদের ৭৩ শতাংশ নারী। বিশেষ করে টিন এজ মেয়েদের মধ্যে নিজের ক্ষতি করার প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।
১৩ থেকে ১৬ বছর বয়সী মেয়েদের এমন আচরণ ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ৬৮ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার তথ্য এসেছে সমীক্ষায়।
যৌন নির্যাতনের শিকার নারীর মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব
সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হলে নারীদের মনোজগতে যে বিরাট প্রভাব পড়ে তা একেবারে স্পষ্ট। মানসিক সমস্যায় ভোগা ৫৩ শতাংশ নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
শিশুকালে ও পরিণত বয়সে শারীরিক যৌন সহিংতার শিকার হওয়া নারীর এক তৃতীয়াংশ, অর্থ্যাৎ ৭৮ শতাংশের বেশি আজীবন প্রাণঘাতি ট্রমা থেকে বার হতে পারেন না। এদের মধ্যে ১৬ শতাংশ পিটিএসডি বা পোস্ট ট্রমাটিক ডিজঅর্ডারে ভুগে থাকেন।
শিশু বয়সে ও বড় হয়ে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ, বা প্রতি তিনজনের একজন নারী আত্মহননের পথ বেছে নেন। আর প্রতি পাঁচজনে একজন বা ২২ শতাংশ নিজের কোনো না কোনো ক্ষতি করে বসেন।
দারিদ্র্য থেকে মানসিক রোগ
দরিদ্র নারীর মানসিক সুস্থতাও থাকে পড়তির দিকে। দরিদ্র নারীর মধ্যে ২৯ শতাংশের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা যায়। বিপরীতে এই ধরনের সমস্যা বিত্তশালী নারীর মধ্যে কম; ১৬ শতাংশের ক্ষেত্রে এমন দেখা যায়।
দরিদ্র নারী এবং একই সঙ্গে নির্যাতিত হলে নারীর মানসিক স্বাস্থ্য আরও ভেঙ্গে পড়ে।
কালো, এশীয় এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নারীর মানসিক স্বাস্থ্য
কালো, এশীয় এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্তাসহ আরও অনেক বৈষম্যের শিকার নারীর মানসিক স্বাস্থ্য সব সময় চ্যালেঞ্জের মুখে থাকে। সামাজিক কুসংস্কার ও বর্ণবাদ কমন মেন্টাল ডিজঅর্ডার বাড়িয়ে তোলার ঝুঁকি তৈরি করে বরবার।
২৯ শতাংশ কালো, ২৪ শতাংশ এশীয় এবং ২৯ শতাংশ মিশ্র-বর্ণের নারীর বেলায় সাধারণত এমন ডিজঅর্ডার দেখা যায়। সাদা ও ব্রিটিশ নারী সেই তুলনায় এমন মানসিক সমস্যায় কম ভোগেন; পরিসংখ্যান বলছে, তাদের ক্ষেত্রে এই হার ১৬ শতাংশ।
তরুণী ও মেয়েদের মানসিক রোগ
তিন চতুর্থাংশ, অর্থ্যাৎ ৭৫ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় ২৪ বছর বয়সের আগেই। অর্থ্যাৎ তরুণ নারী এই উচ্চ ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।
২৫ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণী নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করেন। পুরুষের চেয়ে নারীর এই পরিসংখ্যান দ্বিগুণ।
২৬ শতাংশ তরুণী উদ্বেগ ও বিষণ্ণতার মত কমন মেন্টাল ডিজঅর্ডারে ভোগেন। তরুণ পুরুষের তুলনায় এই হার তিনগুণ।
১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী প্রতি সাত জন তরুণীর মধ্যে একজনের পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা পিটিএসডি রয়েছে। এদের মধ্যে ৭২ শতাংশের আত্মহত্যার প্রবণতার কারণে কাউন্সেলিং নিতে হচ্ছে।