রোহিঙ্গাদের জীবনযুদ্ধের গল্প শিশু সাংবাদিকদের বয়ানে

একটি শিশু যে পরিবেশে যেসব অধিকার পেয়ে বড় হওয়ার কথা, সেসব অধরাই থেকে যায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা পরিবারে জন্ম নেওয়া শিশুদের জীবনে।

সুলাইমান নিলয়বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2017, 07:32 PM
Updated : 29 Nov 2018, 05:24 AM

কক্সবাজারের দুটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে আসা ২০ জন শিশু সাংবাদিকের অনুসন্ধানে এমন চিত্রই উঠে এসেছে।

কুতুপালং ও বালুখালীতে রোহিঙ্গাদের বড় দুটি আশ্রয় শিবির ঘুরে এসে নিজেদের অভিজ্ঞতা আর রোহিঙ্গাদের বঞ্চনার গল্প তারা তুলে ধরেছে এক আলোচনায়।

বিশ্ব শিশু দিবস সামনে রেখে রোববার কক্সবাজারের রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্টে এই আলোচনার আয়োজন করে বাংলাদেশে শিশু সাংবাদিকতার প্রথম ওয়েবসাইট ‘হ্যালো’। ‘ঝুঁকিতে রোহিঙ্গা শিশু’ শিরোনামে এই আয়োজনের সঙ্গে ছিল জাতিসংঘের শিশু তহবিল-ইউনিসেফ।

কক্সবাজারের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাড়ে তিনশ শিশুর মধ্যে থেকে বাছাইয়ের পর এই ২০ শিশু সাংবাদিককে সাংবাদিকতা ও ভিডিওগ্রাফির ওপর প্রশিক্ষণ দেয় হ্যালো।

শনিবার তাদের প্রথম ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ ছিল কুতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। সেই অভিজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের সঙ্কটের সমাধানে নিজেদের মতামতগুলোও তারা রোববারের আলোচনায় তুলে ধরে। 

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর সঞ্চালনায় ইউনিসেফের পক্ষে এ আলোচনায় অংশ নেন সংস্থার মুখপাত্র শাকিল ফয়জুল্লাহ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন ইউনিসেফের মুখপাত্র শাকিল ফয়জুল্লাহ

ক্যাম্পের অভিজ্ঞতা থেকে শিশু সাংবাদিকরা জানায়, আশ্রয় শিবিরের রোহিঙ্গা শিশুদের বঞ্চনার শুরু হয়েছে তাদের জন্মের আগে থেকেই। রাখাইনের গ্রামে অধিকারবঞ্চিত জীবনে তাদের অনেকের পরিবারকে এমন পরিস্থিতিতে দিন পার করতে হয়েছে, যেখানে একটি শিশুর সব অধিকার নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব।

যুগ যুগ ধরে নিপীড়নের মধ্যে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়েছে পরিবারগুলো। সেই দুষ্টচক্রে যোগ হয়েছে বাল্য বিয়ে, অশিক্ষা, কুশিক্ষা আর অসচেতনতা।

কক্সবাজারের সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লামিয়া আক্তার জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এমন নারীর দেখা সে পেয়েছে, যার শারীরিক গঠন থেকে কৈশোরের ছাপ দূর না হলেও এরইমধ্যে সে পাঁচ সন্তানের মা।

এই নারীদের অনেকের মধ্যে বয়স বাড়িয়ে বলার প্রবণতা লামিয়ার শিশু চোখেও ধরা পড়েছে।

দুই সন্তানের এক মা প্রথমে নিজের বয়স ২৫ বছর বলে দাবি করলেও পরে লামিয়ার কাছে স্বীকার করে নেন, তার কেবল ১৫ পার হচ্ছে।

আশিকুর রহমান নামে এক শিশু সাংবাদিক জানায়, ক্যাম্পে স্যানিটারি টয়লেট থাকার পরও রোহিঙ্গাদের কাউকে কাউকে সে খোলা জায়গায় মল ত্যাগ করতে দেখেছে। তাদের ঘরের আশেপাশের পরিবেশ স্যাঁতস্যাঁতে, অস্বাস্থ্যকর।

টয়লেট থাকার পরও খোলা জায়গায় মল ত্যাগের কারণ জানতে চাইলে রোহিঙ্গা পরিবারগুলো আশিককে বলে- ছোট বাচ্চা, কিচ্ছু হবে না।

আশিক জানায়, অনেক রোহিঙ্গা রোগীকে সে ঘরে শুয়ে থাকতে দেখেছে, যাদের চিকিৎসা নিয়ে কোনো অভিযোগ নাই। তারা চিকিৎসা পাওয়ার কথা বলেছে, কিন্তু ডায়রিয়া থেকে সেরে উঠতে পারছে না।

“এক শিশুর দেখলাম অনেক খারাপ অবস্থা, টয়লেট করছে আর পানি খাচ্ছে। আমি তার বাবাকে বললাম, একে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান। উনি বললেন, বাচ্চাটাকে ওষুধ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু ভালো হচ্ছে না।”

ক্যাম্পের ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে আশিক জানতে পেরেছে, ওষুধ খেলেও অনেক রোহিঙ্গা বিশুদ্ধ পানি পান করছে না, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ল্যাট্রিন ব্যবহার করছে না। ফলে ডায়রিয়া তাদের ছাড়ছে না।

তাছাড়া অনেকের ঘরের পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে পয়ঃনিষ্কাশনের নালা; সেখানে বড়রাও আক্রান্ত হচ্ছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী ও ইউনিসেফের মুখপাত্র শাকিল ফয়জুল্লার সঙ্গে শিশু সাংবাদিকের দল

শিশু সাংবাদিক রেখা আক্তার জানায়, রোহিঙ্গাদের বাড়ির পাশে যেখানে টয়লেটের ব্যবস্থা, সেখানেই বাচ্চারা খেলছে। ধুলো মাটির সঙ্গে তাদের শরীরে লাগছে নোংরা। সেই নোংরা হাতেই আবার খাবার খাচ্ছে।

এদের সচেতন করার খুব বেশি উদ্যোগ চোখে পড়েনি রেখার।

এক প্রশ্নের জবাবে রেখা জানায়, এ বিষয়গুলো ঠিকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলে রোহিঙ্গারা তা বুঝবে বলেই তার মনে হয়েছে।

শিশু সাংবাদিক ইব্রাহিম খলিলের অ্যাসাইনমেন্ট ছিল রোহিঙ্গাদের জন্য পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিয়ে। সে দেখেছে, এ পর্যন্ত যে ব্যবস্থা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা করতে পেরেছে, ক্যাম্পের বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার জন্য তা পর্যাপ্ত নয়।

এক জায়গায় সে এমনও পেয়েছে, যেখানে ৪০০ ঘরের জন্য রয়েছে মাত্র আটটি টয়লেট।

ইব্রাহিম জানায়, ক্যাম্পে গোসলের ব্যবস্থাও ভালো না। একটি টিউবওয়েলে একত্রে পাঁচজনকে গোসল করতে হয়। ময়লা পানি নিষ্কাশন বা ঢেকে দেয়ার ব্যবস্থাও নেই।

 

শিশু সাংবাদিক রেশমী আক্তার জানায়, উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পে ইউনিসেফের অনেক অস্থায়ী স্কুল রয়েছে। সেখানে খাতা-কলম দেওয়া হলেও বই পায়নি শিশুরা।

ইউনিসেফের জন্য এটা কঠিন অভিযোগ- তৌফিক ইমরোজ খালিদীর এমন দৃষ্টি আকর্ষণী মন্তব্যে সংস্থাটির মুখপাত্র শাকিল ফয়জুল্লাহ বলেন, “এটা বোধ হয় ঠিক নয়, কারণ আমি নিজে যখন গিয়েছিলাম, তখন দেখেছি, এদেরকে বার্মিজ ভাষায় লেখা বই দেওয়া হয়েছে।”

রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য শিক্ষার যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাতে আরেকটি ত্রুটির কথা তুলে ধরে রেশমী। সে জানায়, ক্যাম্পে ১৫ বছরের বেশি বয়সী কোনো শিশুর জন্যই শিক্ষার কোনো ব্যবস্থা এখনও হয়নি।

বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে শাকিল ফয়জুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম অনুসারে ওই বয়সী রোহিঙ্গাদের জন্য ‘নন-ফরমাল’ শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

“এখন পর্যন্ত আমরা সব করছি ছয় মাসের হিসাব করে। এখানে ধরে নেওয়া হচ্ছে, এরা এক সময় তাদের দেশে চলে যাবে।”

রোহিঙ্গাদের সঙ্কটের সমাধানে নিজেদের মতামতগুলোও তুলে ধরেছে শিশু সাংবাদিকরা

ক্যাম্প ঘুরে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা দেখার কথা বলেছে শিশু সাংবাদিক তাসরিফ ওমর ।

আর জান্নাতুন নাঈম জেরিন বলেছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে শিশুদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থাও সে দেখেছে; যদিও সেই সুযোগ অনেকেই নিতে পারে না।

জেরিন জানায়, ক্যাম্পের জীবনে বাবা-মায়েরা এই সব শিশুদেরকে অভিভাবক ছাড়া বিনোদনের জন্য পাঠাতে ভয় পায়।

আলোচনার এক পর্যায়ে তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, সেই শিশুরা কেমন আছে, যারা তাদের চোখের সামনে বাবা-মা, ভাই-বোনদের খুন হতে দেখেছে। জঘন্য নির্যাতন তাদের দেখতে হয়েছে, যা তাদের শিশু মনের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলার কথা।

জবাবে একজন শিশু সাংবাদিক বলে, মানসিকভাবে রোহিঙ্গা শিশুরা ভালো নেই। ক্যাম্পে তাদের জন্য মনো চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা সে বালুখালীতে দেখেনি।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইউনিসেফ মুখপাত্র বলেন, জেরিন যে বিনোদন কেন্দ্রের কথা বলেছে, ইউনিসেফ সেগুলোকে বলে শিশুবান্ধব কেন্দ্র। অনেক সংস্থাই এরকম কেন্দ্র করেছে; কোনো শিশু সেখানে যাওয়ার পর প্রথমেই তাদের কাউন্সেলিং করা হয়।

“কারণ আমরা জানি, এই শিশুরা এমন জিনিস দেখেছে, যেটা একজন শিশুর দেখার কথা না, দেখা উচিতও না। এ জন্য তারা আসামাত্র একজন কর্মী তার সাথে কথা বলে। তার অভিজ্ঞতা জানার চেষ্টা করে। তাকে বোঝানো হয় যে সে হয়ত শৈশব হারিয়েছে, তার মানে এই নয় যে সে তার ভবিষ্যৎকেও হারিয়ে ফেলেছে।”

রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে আলোচনায় শিশু সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন ইউনিসেফের মুখপাত্র শাকিল ফয়জুল্লাহ

 

সেখানে শিশুদের যা ইচ্ছা, সেটা করার ব্যবস্থা রয়েছে জানিয়ে শাকিল ফয়জুল্লাহ বলেন, কারও হয়ত ফুটবল খেলার ইচ্ছা, সে সেটা খেলতে পারে। কেউ ছবি আঁকে। কেউ দল বেঁধে গান গায়। লাফাতে ইচ্ছা করলে সে লাফায়। যার মাধ্যমে তারা মানসিক ভীতি থেকে রেহাই পেতে পারে।

তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া সোয়া ছয় লাখ মানুষের প্রায় ৬০ শতাংশই শিশু। ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে তাদের যেতে হয়েছে। যে দীর্ঘ পথ তারা অতিক্রম করে এসেছে, সেটাও স্বাভাবিক পথ ছিল না।

তাদের সাহায্য করবার জন্য ক্যাম্পে কী ব্যবস্থা আছে- বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদকের এমন প্রশ্নে ইউনিসেফের মুখপাত্র বলেন, “আমাদের প্রথম কাজ ছিল এই শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। কারণ আমরা স্বাভাবিকভাবেই জেনেছি, এই শিশুরা ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছে।”

এক শিশুকে দেখার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ৯ বছর বয়সী ওই শিশুর বাঁ পায়ে গুলি লেগেছিল। শিশুটি এখনো বিশ্বাস করছে না যে তাকেই গুলি করা হয়েছিল। সে মনে করে, তাকে গুলি করা হয়েছে ভুল করে।

“এমন এক হাজারের বেশি শিশুকে আমরা খুঁজে পেয়েছি, যাদের বাবা-মা মারা গেছে, বা তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের বিষয়টাও আমরা দেখছি। আমাদের প্রথম কাজ তাদের সুরক্ষা দেওয়া, পরে অন্য কাজ। শিক্ষা, পানি সরবরাহসহ অন্য কাজও আমরা করছি।”

শাকিল জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৩৩টি বিনোদন কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার জন্য ১৭টি স্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে। আরও আছে ১৫টি পুষ্টি সেবা কেন্দ্র।

“আমরা দুই লাখের মত মানুষের জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করতে পেরেছি। শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা প্রায় ৪০০টি কেন্দ্র করেছি। আমাদের লক্ষ্য দেড় হাজার শিক্ষা কেন্দ্র তৈরি করা, যাতে এই শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া যায়।”

আলোচনার এক পর্যায়ে তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে, এটা ঠেকানোর কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

জবাবে ইউনিসেফের মুখপাত্র বলেন, সেখানে প্রতিদিন খাবার পানি লাগে ৯০ লাখ লিটার। এই বিপুল সংখ্যক মানুষষের জন্য পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা কঠিন।

সব সংস্থা কাজ শুরু করার পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনেক টয়লেট তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি জানা গেছে, সেসব টয়লেটের ৩৮ শতাংশ এখন আর ব্যবহারোপযোগী নয়, কারণ বিপুল সংখ্যক মানুষ সেগুলো ব্যবহার করছে।

“এই জায়গায় অনেক বড় একটা ঝুঁকি রয়েছে। তবে একটা সফলতা আছে, আমরা এখানে এক মাসের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কলেরার ভ্যাক্সিনেশন করতে পেরেছি। সাত লাখ মানুষকে ভ্যাক্সিন খাওয়ানো হয়েছে।”

শিশু সাংবাদিকের দল আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা ঘুরে দেখে ত্রাণ বিতরণ পরিস্থিতি, জরুরি স্বাস্থ্যসেবার প্রাপ্যতা, পানি আর পয়ঃনিষ্কাশন সঙ্কট, সংক্রামক রোগের বিস্তারের চিত্র যেমন তুলে এনেছে, তেমনি কক্সবাজারে বন উজাড় করে বসতি স্থাপন, এইডস ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা, কিশোরী মায়েদের কষ্টের কথা তারা আলোচনায় তুলে ধরেছে।

অনুষ্ঠানের শেষ দিকে ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। সেখানে শিশু সাংবাদিক তানভীর জানতে চায়- রোহিঙ্গা ক্যাম্পের টিউবওয়েলগুলো আর্সেনিক মুক্ত কি-না।

জবাবে ইউনিসেফের শাকিল বলেন, তার সংস্থা টিউবওয়েল বসানোর আগে আর্সেনিক আছে কি-না তা পরীক্ষা করে দেখেছে।

কক্সবাজারের রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্টে রোববার ‘হ্যালো’ ও ইউনিসেফ আয়োজিত ‘ঝুঁকিতে রোহিঙ্গা শিশু’ শিরোনামে গোলটেবিল আলোচনায় প্রশ্ন করছেন এক শিশু সাংবাদিক।

রোববারের আলোচনায় বিপুল উৎসাহে সাংবাদিকতার প্রথম অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছে শিশুরা

টিউবওয়েলের পাশে টয়লেট বানানোর কারণ এক শিশু সাংবাদিক জানতে চাইলে শাকিল বলেন, টয়লেট থেকে বেরিয়েই যাতে ক্যাম্পের বাসিন্দারা হাত ধুতে পারে, সেজন্যই এ ব্যবস্থা।

“তবে এখানে একটা বিষয় খেয়াল রাখা হয়, টিউবওয়েল যেন টয়লেট থেকে উঁচুতে থাকে, টয়লেটের ময়লা যেন পানির সাথে না মিশতে পারে।”

শিশু সাংবাদিক আশিক বলে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে রোহিঙ্গা শিশুদের সচেতন করতে ইউনিসেফের পক্ষ থেকে একটি দলকে দায়িত্ব দেওয়া হলে শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপ কমত।

জবাবে শাকিল বলেন, এ কাজটি তারা করছেন। তবে কাজটি সময়সাপেক্ষ।

অনুষ্ঠান শেষে তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “প্রশিক্ষণ শেষ করার পরের দিনই যাদের কাজে পাঠানো হয়েছিল, তারা কাজ থেকে ফিরে এসে অভিজ্ঞতার কথা বলেছে। তারা যেমন শিখেছে, তাদের অভিজ্ঞতার কথা শুনে আমরাও সমৃদ্ধ হয়েছি। ”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক মনে করেন, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে যারা রোহিঙ্গা শিবিরে কাজ করছেন, তাদের থেকে আলাদা একটি পরিপ্রেক্ষিত এই শিশু সাংবাদিকদের কাজের মধ্যে দিয়ে সামনে এসেছে।

প্রথম ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ সেরে আসা অনুসন্ধিৎসু এই শিশুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমরা সাংবাদিকতার প্রশিক্ষণ নিয়েছ একদিন আগে। তোমাদের সাংবাদিকতার বয়স একদিন। কিন্তু তোমরা একটা বড় কাজ করতে গিয়েছিলে।”