ব্রণ থাকলে যেভাবে মুখ ধুতে হবে

বেশি মুখ ধুলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2023, 08:13 AM
Updated : 7 March 2023, 08:13 AM

যাদের ত্বকে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বেশি তারা দিনে কতবার মুখ ধুবেন এটা নিয়ে সংশয়ে থাকেন।

ত্বকের সুস্থতায় পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। তবে খুব বেশি ত্বক পরিষ্কার করা হলে নানান সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

অতিরিক্ত মুখ ধোয়ার ফলে ত্বকের ক্ষতি

ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে যে, তেলের কারণে মুখে ময়লা বাঁধে। ফলে ব্রণ বা ব্রেক আউট দেখা দেয়।

তবে ব্রণ ওঠার আরও কারণ থাকতে পারে। তাই বার বার মুখ ধোয়া এই সমস্যার সমাধান করতে পারে না।  

যুক্তরাষ্ট্রের আইডাহো’র ক্লিনিকাল চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কার্ল থর্নফেল্ড বলেন, “মুখ ধোয়ার মাধ্যমে মেইকআপ, ময়লা ও ব্যাক্টেরিয়া দূর করে। তাই অনেকেই মনে করেন বার বার মুখ ধুলে ব্রণ কমে।”

রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই চিকিৎসক আরও বলেন, “কিন্তু ঘন ধন মুখ ধোয়া বা জোরে ঘষে মুখ ধোয়া ত্বকের সুরক্ষার স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে; যা জ্বলুনি বাড়ানোর পাশাপাশি ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বাড়ায়।”

তিনি আরও বলেন, “অনেক ক্লেঞ্জারে ব্রণ কমানো উপকরণ যেমন- স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেঞ্জয়েল পারক্সাইড যা তেল দূর করে।”

এসব উপকরণ অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ত্বকের প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক তেল দূর করে ফেলে।

সতর্ক করে ডা. থর্নফেল্ড বলেন, “তেলের অভাবে ত্বকের প্রাকৃতিক সুরক্ষার স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেল নিঃসরণ বাড়ে, লোমকূপ আবদ্ধ হয়ে যায়, ত্বকে প্রদাহ, লালচেভাব দেখা দেয়। ফলাফল হিসেবে হয় ‘ব্রেক আউট’।”

ব্রণ থাকলে দিনে কতবার মুখ ধোয়া যাবে

প্রতিটা ত্বক বিশেষজ্ঞই মনে করেন, ত্বক ভালো রাখতে দিনে দুবার (সকাল ও সন্ধ্যা) ত্বক পরিষ্কার করাই যথেষ্ট।

রাতে জমে থাকা তেল পরিষ্কার করতে সকালে মুখ ধোয়া প্রয়োজন। আর সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে মেইকআপ, ময়লা ও ব্যাক্টেরিয়া দূর করতে ভালো মতো ত্বক পরিষ্কার করা উচিত।

শরীরচর্চা, খেলাধূলা করা বা ঘাম হয় এমন কোনো কাজের পরে মুখ ধোয়া প্রয়োজন বলে জানান, ডালাসের বোর্ড প্রত্যয়িত ত্বক বিশেষজ্ঞ রেবেকা মার্কাস।

তিনি আরও বলেন, “শরীরচর্চার পরে ঘাম ও সিবাম ত্বকে স্থায়ী করতে না চাইলে দ্রুত মুখ ধুয়ে নিতে হবে।”

মুখ খুব বেশি ধোয়া বা কড়া প্রসাধনী ত্বকে ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা এটা বোঝার উপায় হল খসখসে, নির্জীব ত্বক, অতিরিক্ত তৈলাক্ততা, লালচেভাব, শক্তভাব ও সংবেদনশীলতা ইত্যাদি।

ক্লেঞ্জার নির্বাচনের উপায়

ব্রেক আউট কমায় ও ত্বকের সুরক্ষার স্তর ভালো রাখে এরকম মৃদু ফেইসওয়াশ বাছাই করা উপকারী।

কানাডা’র মেডিকেল ও কসমেটিক ত্বক বিশেষজ্ঞ ডুসান সাজিক বলেন, “ব্রণ প্রবণ ত্বকের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা ক্লেঞ্জার ব্যবহার করা উচিত। এড়াতে হবে কড়া এক্সফলিয়েন্টস। না হলে ত্বকে জ্বলুনি ও ব্রণের প্রবণতা বাড়বে।”

ডা. সাজিক বলেন, “মুখ ধোয়ার সময় মৃদু, ত্বক সুরক্ষক উপকরণ সমৃদ্ধ ক্লেঞ্জার ব্যবহার করা উপকারী। সাধারণত এই ধরনের প্রসাধনী সংবেদনশীল ও ব্রণ প্রবণ ত্বকের জন্য তৈরি করা হয়ে থাকে।”

এই ধরনের ক্লেঞ্জার সক্রিয় ব্রেকআউট কমানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতেও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। ত্বক পরিষ্কার হলে এবং ব্রেকআউটের প্রবণতা কমলে নন-মেডিকেটেড, মৃদু ফেইসওয়াশ দিয়ে সকাল ও রাতে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে।

দিনে দুবার মৃদু ফেইসওয়াশ ব্যবহার করার পাশাপাশি ব্রেকআউট কমাতে উপকারী কয়েকটি উপায়ের কথা বলেন ডা. সাজিক।

দিনে বার বার মুখে হাত না দেওয়া। প্রতিবার মুখ ধোয়ার পরে তেলবিহীন ময়েশ্চারাইজার করা। সপ্তাহে একবার বালিশের ওয়াড় পরিবর্তন করা। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও শরীরচর্চা করা। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা।

ব্রণের জন্য উপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ যেমন- লেজার বা কেমিকাল পিল ব্যবহার করা।

গুরুতর ব্রণের সমস্যায় বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ও ত্বক পরিচর্যায় পরিবর্তন আনা।

আরও পড়ুন:

Also Read: আগে মুখ ধোয়া না-কি দাঁত ব্রাশ করা উচিত?

Also Read: মুখ জুড়ে উজ্জ্বল আভা

Also Read: মুখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দেওয়ার উপকারিতা