মুখে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ

নানান কারণে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2023, 01:49 PM
Updated : 17 April 2023, 01:49 PM

গরমকালে ঘাম হবেই। তবে সবসময় মুখ ঘেমে থাকার অন্য কারণ থাকতে পারে।

শরীর ঘামের মাধ্যমে তাপমাত্রা বের করে দেয় ও শীতল করে। এর মাত্রাত্রিরিক্ততাকে চিকিৎসা শাস্ত্রে বলে ‘হাইপারহাইড্রোসিস’। যা দেহের নির্দিষ্ট কিছু অঙ্গে প্রভাব ফেলে।

যে কোনো কারণেই বেশি ঘাম হতে পারে। অনেকক্ষেত্রে কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে।

হিন্দুস্থানটাইমস ডটকম’য়ে এক সাক্ষাৎকারে ভারতের ‘স্কিন ক্রাফট ল্যাবস’য়ের প্রধান ডা. কোস্তভ গুহ ব্যাখ্যা করেন, “অনেকেই অতিরিক্ত মুখ ও মাথা ঘামা নিয়ে বিচলিত থাকেন। যদিও ঘাম হওয়া খুব একটা আরামদায়ক অনুভূতি নয়। এটা দেহের সঠিক তাপমাত্রা ধরে রাখতে সহায়তা করে। তবে খুব বেশি ঘাম হওয়া হাইপারহাইড্রোসিস’য়ের লক্ষণ।”

তিনি আরও বলেন, “মুখ ও মাথা ঘামার অর্থ হতে পারে ‘ক্রেনিওফেইশল হাইপারহাইড্রোসিস’। এ কারণে শরীর থেকে ঘাম নিঃসৃত হয়ে শীতল হয়, তাপমাত্রা কমে কিন্তু হাইপারহাইড্রোসিস হলে কারণ ছাড়া ঘাম হয় এবং শরীর ঠাণ্ডা করার প্রয়োজন হয় না। ১০০ জনের মধ্যে প্রায় দুতিনজন এই সমস্যায় ভোগেন।”

কারণ

ডা. কৌস্তভ গুহ বলেন, “হাইপারথায়রয়েডিজমের পাশাপাশি বংশগতি, দীর্ঘ ঘাম গ্রন্থি, আবহাওয়া, বাহ্যিক আবেগ, নির্দিষ্ট ওষুধ, অরিতিক্ত আবেগ- মুখ ও মাথা ঘামার অন্যতম কারণ।”

পুনে’তে অবস্থিত ‘কোরেগাঁও পার্ক’য়ের পরামর্শক ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. হিতাশা পাতিল একটা তালিকায় ‘হাইপারহাইড্রোসিস’য়ের কিছু সাধারণ লক্ষণ সম্পর্কে জানান।

তিনি বলেন, “সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে হাতের তালু, পায়ের তলা, বাহুমূল ও মুখ ঘামা। মুখ অতিরিক্ত ঘামার অন্যতম কারণ হল ‘একক্রিন’ গ্রন্থির অতিরিক্ত উত্তেজনা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর নির্দিষ্ট কারণ থাকে না, এটা বংশগতও হতে পারে।”

উদ্বেগ, মেনোপোজ, হাইপারথায়রয়ডিজম বা ওষুধ যেমন- ইনসুলিন, পিলোকারপিন ইত্যাদি ব্যবহারের কারণে এমনটা হতে পারে।”

অতিরিক্ত ঘাম কমানোর উপায়

অতিরিক্ত ঘাম হওয়া ক্ষতিকর নয়। তবে তা ব্যক্তির আত্মবিশ্বাসে ব্যাঘাত ঘটায়, অন্তরঙ্গ সময়ের ওপর প্রভাব রাখে। আর জীবন মান অনেকটাই কমিয়ে আনে। এই সমস্যা বন্ধ করা গেলেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

ডা. হিতাসা পাতিল ‘ফেইশল হাইপারহাইড্রোসিস’ বা অতিরিক্ত ঘাম কমানো উপায় সম্পর্কে জানান।

·        অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড সমৃদ্ধ অ্যান্টিপার্সপিরান্ট ব্যবহার।

·        বোটক্স ঘামগ্রন্থির স্নায়ুকে নিস্ক্রিয় করে যা প্রায় আট মাস বা তার বেশি সময় স্থায়ী হয়।

·        অ্যান্টিকোলিনারজিকস ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমে মুখের ঘাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

·        হতাশা বা উদ্বেগ কমানোর জন্য ব্যবহৃত ওষুধ অতিরিক্ত ঘাম সৃষ্টি করে।

·        ঘাম নিয়ন্ত্রণের অন্যতম উপায় হল পাউডার ব্যবহার করা।

·        ঘাম কমানোর শেষে উপায় হল সার্জারি করে স্নায়ু কাটার মাধ্যমে ঘাম নিয়ন্ত্রণ করা।

অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণের সহজ উপায় সম্পর্কে ডা. কৌস্তভ গুহ ‘ফেইশল হাইপারহাড্রোসিস’ নিয়ন্ত্রণ করতে ডাক্তার অ্যান্টিপার্সপিরান্ট, বোটক্স ইঞ্জেকশন, মুখে ওষুধ খাওয়া, লোনটোফোরেসিস, সিমপ্যাথিকন্টোমি বা ঘাম গ্রন্থি অপসারণ করার পরামর্শ দেন।

নিয়মিত গোসল করা, আরামদায়ক পোশাক পরা (সুতি কাপড় যা বাতাস চলাচলে সহায়তা করে), কম ক্যাফেইন গ্রহণ, মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলা ইত্যাদি উপকারী।

এছাড়াও ঘাম মুছতে হাতের কাছে সব সময় তোয়ালে রাখা উচিত।

আরও পড়ুন

Also Read: ঘাম কমাতে সারা শরীরে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা কতটা উপযোগী?

Also Read: ঘাম থেকে সুখের অনুভূতি

Also Read: রাতে ঘুমের সময় ঘাম হওয়ার কারণ আর প্রতিকারের পন্থা

Also Read: ঘামে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ

Also Read: রান্নার উপকরণ দিয়ে ঘামের গন্ধ দূর