পাহাড়ের কোল জুড়ে নেমেছে ঝুম বৃষ্টি। গ্রীষ্মের প্রখর তাপে শুকিয়ে যাওয়া প্রকৃতি, জুম চাষ, সবুজ বনানী সবই যেন বৃষ্টিতে নতুন প্রাণ ফিরে পায়।
Published : 30 Jun 2015, 05:12 PM
প্রাণের জোয়ারে পাহাড়গুলো এখন বেশ কচকচে সবুজ। বড় বড় বৃষ্টির অবিরত ফোটায় সবুজ পাহাড়ের রাজ্য ডানা মেলেছে। এমন বর্ষায় ঝরনার সত্যিকারের রূপ দেখা যায়।
তাই ঝরনা রূপ দেখতে চাইলে এখনই উপযুক্ত সময়।
হাজাছড়া ঝরনা। রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার ১০ নম্বর রাস্তার পাশে এই ঝরনা পযর্টকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। রাস্তা থেকে ১৫ মিনিট ঝিরিপথ ধরে হেঁটে পৌঁছানো যায় ঝরনার পাদদেশে। সম্মোহনী কলকল শব্দ দূর থেকেই ঘোরের সৃ্ষ্টি করে।
সবুজে ঘেরা ঝিরি পথ পেরোলেই স্বাগতম জানাবে হাজাছড়া বিশালকায় ঝরনা। পুরো বর্ষায় হাজাছড়ার রূপের তুলনা সে নিজেই।
রাস্তার দুপাশ জুড়ে আদিবাসীদের বসবাস। পথের ধারেই নানান শস্যের জুমের ক্ষেত। চলতে চলতে হঠাৎ চেনা রংধনু, ছুঁয়েছে পাহাড়ের চূড়া!
গাড়ির পথ শেষ করে এবার হাঁটার পালা। বেশি দূরের পথ নয়। তবে ঘোর বর্ষার কারণে ঝিরির পুরো পথে কোথাও কোমর সমান পানি কোথাও বা আরও বেশি। এই পথ ধরেই ঝরনার দিকে এগিয়ে যাওয়া।
পাহাড়ের কোল জুড়ে আঁকাবাঁকা রেখার মতো বয়ে চলেছে ঝিরির স্রোতধারা। ঝরনা থেকেই সাধারণত ঝিরির সূচনা হয়। কিছুদূর অগ্রসর হতেই কানে আসে ঝরনার কলকল ধ্বনি। বহুবার এই ঝরনায় গেলেও এত তীব্র শব্দ আগে কখনও শোনা হয়নি।
ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ঝরনায় চোখে পড়তেই আটকে যেতে হয়। এমন বিশালাকৃতির ঝরনা! তীব্রগতিতে বয়ে পড়ছে জলের ধারা। কাছে যেতেই জল নিংড়ানো হালকা হালকা শিশির ভিজিয়ে দিল সবাইকে। ঝরনার সামনে দাঁড়িয়ে মুগ্ধ অভিযাত্রীর দল।
যেভাবে যাবেন
প্রথমে যেতে হবে খাগড়াছড়ি অথবা দিঘীনালা। দিঘীনালা বাসটার্মিনাল থেকে মোটরবাইক বা চাঁদের গাড়ি করে বাঘাইহাটের আগে ১০ নম্বরে নেমে ১৫ মিনিটের হাঁটাপথ শেষ করে ঝরনায় পৌঁছানো যায়।
প্রয়োজনীয় তথ্য
ঝরণা দেখতে গিয়ে এর আশপাশে কোনো প্ল্যাস্টিক, বোতল, প্যাকেট ফেলে ঝরনাকে নোংরা করবেন না। প্রকৃতিকে তার মতো করে থাকতে দিন। উপভোগ করুন তার সৌন্দর্য।
হাজাছড়া ঝরনা ভ্রমণে কোনো তথ্য ও সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন— ০১৮১৫ ৮৫৬৪৯৭, ০১৫৫৬-৭১০০৪৩(ট্র্যাভেল ইন সিএইচটি)।
ছবি: লেখক।