গাছ থেকে পেড়ে খেতে চাইলে যেতে হবে পাবনা কিংবা দিনাজপুর।
Published : 26 May 2015, 03:59 PM
গ্রীষ্মের সবচেয়ে লোভনীয় ও স্বল্পমেয়াদী ফল লিচু। দেশের সব ফলের বাজার এরইমধ্যে লিচুর রংয়ে রাঙাতে শুরু করেছে। বাগানগুলোর গাছে গাছেও এখন থোকায় থোকায় পাকা লিচু আছে। বাংলাদেশের পাবনা ও দিনাজপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি লিচুর চাষ। গাছ থেকে পেড়ে লিচু খেতে চাইলে এই দুই জায়গা থেকে ঘুরে আসা যায়।
পাবনার লিচু বাগান
পাবনা জেলার সবচেয়ে বেশি লিচুর চাষ হয় ঈশ্বরদীতে। এরই মধ্যে বাগানগুলোতে লিচু পাড়া শুরু হয়ে গেছে। নাটোরের বনপাড়া ছেড়ে পাবনার সড়কে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে শত শত লিচুগাছ। গাছের ডালে ডালে পাকালিচুর থোকা। অনুমতি নিয়ে যে কোনো বাগানে ঢুকে পড়তে পারেন।
এখানকার চাষীরা বেশ অতিথি পরায়ণ। লিচু দিয়ে আপ্যায়নে তাদের আনন্দেরও শেষ নেই। বাগান থেকে কম দামে পছন্দের লিচু কেনাও যাবে। লিচু বাগানে বেড়ানোর জন্য ঈশ্বরদীর সবচেয়ে ভালো জায়গা ছলিমপুর আর মিরকামারী। এখানকার সব বাগানই মূলত মহাসড়কের দুইপাশে।
যাতায়াত ও থাকা
ঢাকা থেকে বাসে ও রেলে ঈশ্বরদী যাওয়া যায়।
ঢাকার কল্যাণপুর, গাবতলী থেকে ঈশ্বরদী এক্সপ্রেস, পাবনা এক্সপ্রেস ও সনি এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন বাস সার্ভিস রয়েছে। ভাড়া ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা।
এছাড়া ঢাকা থেকে আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস, রাজশাহী রথকে কপোতাক্ষ ও মধুমতি এক্সপ্রেসে পাবনা যাওয়া যায়।
খুলনা থেকে যায় সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস, রূপসা এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস। এবং সৈয়দপুর থেকে রূপসা এক্সপ্রেসে ঈশ্বরদীতে যাওয়া যায়।
ঢাকা থেকে ঈশ্বরদীর ট্রেনের ভাড়া ২২৫ থেকে ৮১০ টাকা।
ঢাকা থেকে রাতের বাসে গিয়ে দিনভর ভ্রমণ শেষে আবার রাতের বাসে ফেরা সম্ভব। আর থাকতে চাইলে ঈশ্বরদী ভালো। এখানে থাকার জন্য সাধারণ মানের কিছু হোটেল আছে। ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনের পাশে আছে হোটেল ফয়সাল, ঈশ্বরদী ও উত্তরা। এসব হোটেলে আড়াইশ থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকায় থাকা যায়।
দিনাজপুরের লিচু বাগান
এই জেলার সব জায়গাতেই লিচুর চাষ হয়। তবে সবচেয়ে পুরানো এবং বেশি লিচুর চাষ হয় জলা সদরের মাশিমপুরে। দিনাজপুর শহর থেকে রামসাগরমূখী সড়ক ধরেই যেতে হয় মাশিমপুর।
তিন, চার কিলোমিটার চলার পরে সড়কের দুইপাশে শুধুই লিচুর গাছ মাশিমপুরের পরিচিতি জানান দেবে।
মূল সড়ক ছেড়ে ছোট কোনো পার্শ্ব সড়কে ঢুকে পড়লেই পাওয়া যাবে পুরানো গাছের বড় বড় লিচু বাগান।
এ সময়ে মাশিমপুর গেলে দেখা যাবে বাড়িতে বাড়িতে লিচু পাড়ার ব্যস্ততা। তবে এখানে মাদ্রাজি ও বোম্বাই জাতের লিচুর চাষ বেশি।
এছাড়া জেলার ফুলবাড়ি, কাহারোল, বিরামপুর, বীরগঞ্জ ছাড়াও অন্যান্য সব উপজেলায় প্রচুর লিচুর চাষ হয়। এসব যায়গায় চায়না থ্রি, বেদানা জাতের লিচুর চাষ বেশি।
যাতায়াত ও থাকা
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর দ্রুতযান এক্সপ্রেস সপ্তাহের বুধবার ছাড়া প্রতিদিন ছাড়ে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে। আর আন্তঃনগর একতা এক্সপ্রেস মঙ্গলবার ছাড়া প্রতিদিন ছাড়ে সকাল ১০টায়। ভাড়া শোভন সিট ৩৩৫ থেকে ১ হাজার ২৮৫ টাকা।
দিনাজপুর শহরে ভালো মানের থাকার জায়গার মধ্যে আছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের পর্যটন মোটেল (০৫৩১-৬৪৭১৮)। এসি রুমের ভাড়া ১ হাজার ৯শ’ থেকে ২ হাজার ৩শ’ টাকা। ইকনোমি রুম ৭শ’ টাকা।
এছাড়া দিনাজপুরের অন্যান্য সাধারণ মানের হোটেলে ১শ’ থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকায় থাকার ব্যবস্থা আছে। কয়েকটি সাধারণ মানের হোটেল হল— মালদহ পট্টিতে হোটেল ডায়মন্ড, নিমতলায় হোটেল আল রশিদ, হোটেল নবীন, হোটেল রেহানা, নিউ হোটেল ইত্যাদি।