হলুদ, বাসন্তী, সবুজ ও কমলা রং বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।
Published : 08 Feb 2015, 06:00 PM
শীতের ঠাণ্ডা বাতাসকে বিদায় জানিয়ে এরই মধ্যে বইতে শুরু করেছে বসন্তের হাওয়া। আর বসন্ত বরণ করে নিতে আয়োজনের শেষ নেই। সব থেকে বেশি উৎহ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
আর তাদের কথা মাথায় রেখেই শহরের বিভিন্ন দোকান বিশেষ করে দেশীয় ফ্যাশন ঘরগুলোও সেজে উঠেছে ফাল্গুনের আমেজে।
মেয়েদের জন্য রয়েছে শাড়ি, থ্রি-পিস, সিঙ্গেল কামিজ এবং ছেলেদের জন্য থাকছে পাঞ্জাবি ও ফতুয়া। তাছাড়া বাচ্চাদের জন্যও রয়েছে শাড়ি, থ্রি-পিস ও পাঞ্জাবি।
বসন্তের পোশাকের জন্য বিভিন্ন বয়সি মেয়েরা ভিড় জমাচ্ছেন শাড়ি কেনার জন্য। বসন্ত উপলক্ষে হলুদ, বাসন্তী, সবুজ ও কমলা রং বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।
এ বিষয়ে নগরদোলা’র ম্যানেজার নুসরাত জাহান বলেন, “যেহেতু বসন্তে সবাই বাসন্তী ও হলুদ রং বেশি প্রাধান্য দেয়, তাই ক্রেতার চাহিদা বিবেচনায় রেখে পোশাকগুলোতেও এই রংগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। তবে হলুদ এবং বাসন্তী রঙের উপর সবুজসহ অন্যান্য রংও ব্যবহার করা হয়েছে।”
ডিজাইন ও কাপড়ের মান ভেদে শাড়ির দাম ভিন্ন হতে পারে। যেমন মেশিন এমব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক ইত্যাদি শাড়ির দাম পড়বে ১ হাজার ৯শ’ ৯০ থেকে ২ হাজার ৯০ টাকা।
ফ্যাশন ঘর রঙ’য়ের পোশাকগুলোতে হলুদ ও বাসন্তী রংয়ের পাশাপাশি লাল রংয়ের আধিক্যও চোখে পড়ার মতো। কাপড়ের মান এবং বৈচিত্র্যভেদে রঙের শাড়িগুলো পাওয়া যাবে ১ হাজার ৩শ’ থেকে ৯ হাজার টাকায়।
বাসন্তী, হালকা হলুদ এবং গোলাপি রং প্রাধান্য দিয়ে কে ক্র্যাফট বাজারে এনেছে ফাল্গুনের বিশেষ শাড়ি যা পাওয়া যাবে ১ হাজার ৫০ থেকে ২ হাজার ৫০ টাকার মধ্যে।
হাফ শিল্ক বা কটনের মধ্যে শাড়ি কিনতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন অঞ্জন’স থেকে। হালকা কাজের বৈচিত্র্যময় শাড়িগুলো পাওয়া যাবে ১ হাজার ৯শ’ থেকে ৩ হাজার ৫শ’ টাকার মধ্যে।
বসুন্ধরার নীলআচল শাড়ীজ’য়ে থাকছে ফাল্গুনের শাড়ির উপর ১০ শতাংশ ছাড়। এখানে ১ হাজার ৯৫০ থেকে ২০ হাজার টাকায় কাঞ্জিবরণ (কাতান), কাতান, কটন ও জর্জেটের শাড়ি পাওয়া যাবে। এর মধ্যে কাঞ্জিবরণ(কাতান) শাড়ির দাম তুলনামূলক বেশি।
এছাড়াও শাহাবাগের আজিজ সুপার মার্কেটেও ফাল্গুন উপলক্ষে রয়েছে বিশেষ আয়োজন। একটু ভিন্নতা আনার জন্য কিনে নিতে পারেন কমলা কিংবা কলাপাতা রংয়ের সুতি শাড়ি।
নন্দন কুটির’য়ের শাড়িগুলো পাওয়া যাবে ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৮৫০ টাকায়। এছাড়াও কাপড়ের মান এবং নকশা ভেদে ১ হাজার ২শ’ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে মানানসই শাড়ি পাওয়া যাবে এখানে।
কম বয়সি মেয়েদের মধ্যে শাড়ির পাশাপাশি সালোয়ার কামিজ এবং সিঙ্গেল কামিজের জনপ্রিয়তাও নেহাত কম নয়। নগরদোলায় ফাল্গুনের বিশেষ থ্রি-পিস পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার ৯৯০ থেকে ২ হাজার ৭৯০ টাকার মধ্যে এবং ১ হাজার ২৯০ থেকে ১ হাজার ৬৯০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে সিঙ্গেল কামিজ।
রঙ’য়ের বিক্রয়কর্মী রাবেয়া জানান, থ্রি-পিসের ক্ষেত্রে মেয়েরা এমব্রয়ডারি ও টাইডাই করা থ্রি-পিসই বেশি কিনছেন। তাছাড়া হাতের কাজ করা সিঙ্গেল কামিজও বেশ জনপ্রিয়।
সেলাই ছাড়া বা ‘আন-স্টিচ’ থ্রি-পিস ১ হাজার ৮শ’ থেকে ২ হাজার ৭শ’ টাকা এবং সেলাই করা বা ‘স্টিচ থ্রি-পিস’ পাওয়া যাবে ৩ হজার ৬৮০ থেকে ৪ হাজার ৩৮০ টাকার মধ্যে। আর বাটিকের থ্রি-পিস পাওয়া যাবে ১ হাজার ১৮০ থেকে ১ হাজার ২৮০ টাকায়। তাছাড়া সিঙ্গেল কামিজ পাওয়া যাবে ১ হাজার ৮৫০ থেকে ২ হাজার ৬৫০ টাকার মধ্যে।
এছাড়া কে ক্র্যাফট থেকে চুড়িদারসহ থ্রি কোয়ার্টার হাতার সুতি কাপড়ের কামিজ পাওয়া যাবে ২ হাজার ২শ’ থেকে ৩ হাজার ২শ’ টাকায়।
অঞ্জন’স’য়ে পাওয়া যাচ্ছে লিলেন ও সুতি কাপড়ের বাহারি সব সালোয়ার কামিজ। হাতের কাজের এসব সালোয়ার কামিজ পাওয়া যাবে ২ হাজার ২৯৫ থেকে ৪ হাজার ৪৯৫ টাকায়।
তুলনামূলক কম দামের মধ্যে সালোয়ার কামিজ বা সিঙ্গেল কামিজ পাওয়া যাবে শাহাবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে। বাসন্তী, হালকা হলুদ কিংবা হলুদ-সবুজের মিশেলে রঙিন সালোয়ার কামিজগুলোর দাম পড়বে ১ হাজার ২শ’ থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকার মধ্যে। আর শুধুমাত্র কামিজ কিনতে চাইলে গুনতে হবে ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা।
এছাড়াও ফাল্গুন উপলক্ষে দোকানগুলোতে স্থান পেয়েছে নানান ধরনের ফতুয়া। দেশি দশ’য়ের বুটিক হাউজগুলোতে মেয়েদের ফুলহাতা ফতুয়া পাওয়া যাবে ১ হাজার ৫০ থেকে ২ হাজার ৫০ টাকায়।
এছাড়াও শাহাবাগে পাওয়া যাচ্ছে ফাল্গুনের বিশেষ ওড়না এবং ম্যাচিং সালোয়ার। হলুদ বা বাসন্তী রংয়ের ওড়না কিনতে খরচ করতে হবে ২শ’ থেকে ৩৫০ টাকা এবং সে সঙ্গে ম্যাচিং সালোয়ার পাওয়া যাবে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকায়।
ফাল্গুন উপলক্ষে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদের জন্য রয়েছে বিশেষ আয়োজন। দেশীয় উৎসবগুলোতে ফ্যাশন সচেতন তরুণদের মধ্যে পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। নগরের ফ্যাশন ঘরগুলোতে ছেলেদের পোশাকের মধ্যে পাঞ্জাবির আধিক্য তাই চোখে পড়ার মতো।
হলুদ, হালকা সবুজ কিংবা সোনালি রংয়ের সুতি কিংবা সিল্কের পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে দেশাল, বাংলার মেলা এবং কে ক্র্যাফটে।
হাল্কা কাজের উপর ফুল হাতার পাঞ্জাবিগুলোর দাম ১ হাজার ২শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা। সবুজ এবং হলুদের ওপর হাল্কা কাজের অঞ্জন’সয়ের পাঞ্জাবি কেনা যেতে পারে ১ হাজার ২৫০ থেকে ২ হাজার ৮৫০ টাকায়। এছাড়া কম বাজেটের মধ্যে ফাল্গুনের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে আজিজ সুপার মার্কেটে। হলুদ, নীল বা ক্রিম রংয়ের পাঞ্জাবির দাম পড়বে ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা।
যারা কবিতা ভালবাসেন তাদের জন্য ফাল্গুন উপলক্ষে বিশেষ ফতুয়া এবং কোটি বাজারে এনেছে আজিজ সুপার মার্কেটের কাপড়-ই বাংলা। চাইলেই ফাল্গুনের সকালে জীবনানন্দের কবিতা সম্বলিত ফতুয়া পড়ে বসন্ত বরণ উৎসবে যোগ দিতে পারেন অনায়াসে। ফাল্গুনের এই বিশেষ ‘জীবনানন্দ ফতুয়া’ পাওয়া যাবে ৫৫০ টাকায়। সঙ্গে খাদি কাপড়ের সুকান্তের কবিতা সম্বলিত কোটি কিনে নিতে পারেন ৭৫০ টাকায়।
পয়লা ফাল্গুন উপলক্ষে পরিবার-প্রিয়জন সকলের কথা মাথায় রেখে বিশেষ ‘ফ্যামিলি সিরিজ’ বাজারে ছেড়েছে অঞ্জন’স। একই রংয়ের বং নকশার পাঞ্জাবি, শাড়ি এবং ছোট বাচ্চাদের পাঞ্জাবি ও সালোয়ার কামিজ সম্বলিত ‘ফ্যামিলি প্যাকেজ’ পাওয়া যাবে ১০ হাজার টাকায়।
এছাড়া প্রেমিক যুগলদের জন্য অঞ্জন’সের পক্ষ থেকে থাকছে ‘কাপল ড্রেস’। একই রং ও নকশার শাড়ি এবং পাঞ্জাবির এই সেট কিনতে হলে খরচ করতে হবে ৫ হাজার টাকা।
এছাড়া ছোট বাচ্চাদের নিয়ে বিপনিবিতানগুলোর আয়োজনও কম নয়। কে ক্র্যাফট’য়ে ছোট মেয়েদের টপস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকায়। শাড়ি এবং সালোয়ার কামিজের দাম পড়বে ১ হাজার ৪শ’ থেকে ২ হাজার টাকা। এছাড়া ছেলেদের ফতুয়া এবং পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ৫৫০ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকায়।
শাহাবাগ থেকে শিশু মেয়েদের ফ্রক কিংবা টপস পাওয়া যাবে ৫শ’ থেকে ৮৫০ টাকায়। ছেলেদের ফতুয়া এবং পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ৩শ’ থেকে ১ হাজার টাকায়।