গবেষকরা বলেন, “যত বেশি হাঁটবেন, ততই ‘স্টেপ কাউন্ট’ বাড়বে আর ততই কমবে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি।”
‘জেএএমএ’ শীর্ষক জার্নালে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়। এতে গবেষকরা বলেন, গতি যেমনই হোক, একদিনে একজন মানুষের ‘স্টেপ কাউন্ট’য়ের সংখ্যার সঙ্গে তার মৃত্যুঝুঁকির শক্ত সম্পর্ক আছে।
গবেষণার প্রধান, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট (এনসিআই)’য়ের পেদ্রো সেইন্ট-মরিস বলেন, “হাঁটাহাঁটি শরীরের জন্য উপকারী তা আমরা আগে থেকেই জানি, তবে ঠিক কতগুলো ‘স্টেপ কাউন্ট’ মৃ্ত্যুর ঝুঁকি কমাতে পারে এবং কতটুকু গতিতে হাঁটা জরুরি সে আমাদের জানা ছিলনা। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতেই এই গবেষণা, যা হাঁটার উপকারিতা ও তা সঠিকভাবে করতে সাহায্য করবে সাধারণ মানুষকে। প্রযুক্তিপণ্যগুলো থেকে পাওয়া ‘স্টেপ কাউন্ট’য়ের যথাযথ প্রয়োগ তারা করতে পারবে।”
এর আগেও এই বিষয় নিয়ে গবেষণা হয়েছে, তবে সেগুলোর অংশগ্রহণকারীরা ছিলেন বয়স্ক এবং বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত।
এই গবেষণায় অংশ নেয় ৪০ ও তদূর্ধ বয়সের ৪,৮০০ জন মানুষ। ২০০৩ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী সবোর্চ্চ সাত দিন ‘অ্যাক্সেলেরোমিটার’ পরিধান করেছেন। ২০১৫ সাল থেকে এই অংশগ্রহণকারীদের মৃত্যুর হার বিবেচনায় রাখা হয় ‘ন্যাশনাল ডেথ ইনডেক্স’য়ের সাহায্যে।
মৃত্যুর হার, ‘স্টেপ কাউন্ট’ ও হাঁটার গতি হিসেবে করে এদের মধ্যকার সম্পর্ক চিহ্নিত করে গবেষকরা। সেখানে বিবেচনায় রাখা হয় ‘ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড বিহেভিওরাল রিস্ক ফ্যাক্টর’, ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’ এবং গবেষণার শুরুতে তাদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা।
দেখা যায়, দিনে চার হাজার ‘স্টেপ কাউন্ট’য়ের তুলনায় আট হাজার ‘স্টেপ কাউন্ট’ মৃত্যুর ঝুঁকি কমিয়ে আনে ৫১ শতাংশ। একইভাবে ১২ হাজার ‘স্টেপ কাউন্ট’য়ে মৃত্যুর ঝুঁকি কমবে ৬৫ শতাংশ। তবে হাঁটার গতির সঙ্গে মৃত্যুর ঝুঁকির কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাননি গবেষকরা।
নারী-পুরুষ সবার ক্ষেত্রেই একই ফলাফল প্রযোজ্য, বয়সজনীত কোনো তারতম্যই লক্ষ্য করেননি গবেষকরা। পাশাপাশি হৃদরোগ ও ক্যান্সারে মৃত্যুর ঝুঁকি আরও বেশি মাত্রায় কমবে বলে দাবি গবেষকদের।
তবে বর্তমান পরিস্থিতে ঘরে থেকে এত হাঁটা সম্ভব নয়। তাই ভারতীয় প্রতিষ্ঠিত পুষ্টিবিদ পুজা মাখিজা পরামর্শ দিতে গিয়ে বলেন, “ঘরে অন্তত পাঁচ হাজার পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করুন। শরীরে যতটুকু কুলায় সেরকম পরিশ্রম করার চেষ্টা করুন। তবে খেয়াল রাখতে হবে অভিকর্ষ বলের বিপরীতে কিছু না করা; যেমন- ব্যায়ামের জন্য সিঁড়ি বেয়ে ওঠা। স্কিপিং হতে পারে হাঁটার ভালো বিকল্প।”
আরও পড়ুন