কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ ভালো না হলে কর্মজীবী মায়ের সন্তান লালনপালনের ওপর বাজে প্রভাব পড়তে পারে।
Published : 14 Dec 2019, 03:37 PM
দীর্ঘ কর্মজীবনের কোনো এক সময় কর্মক্ষেত্রে বাজে পরিবেশের ভোগান্তি সহ্য করেছেন হয়ত অনেকেই। একজন কর্মী তার সহকর্মীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার সময় হয়ত কখনই ভাবেন না তার ব্যবহারের কী প্রভাব পড়বে তার সহকর্মীর উপর। তবে গবেষকরা ভেবেছেন। তাই মায়েদের উপর কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের কী প্রভাব পড়ে তা নিয়ে গবেষণা করেছেন।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানানো হল বিস্তারিত।
কানাডার কার্লটন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এই গবেষণা করেন, যার বিষয়বস্তু ছিল কর্মক্ষেত্রে খারাপ ব্যবহারের সংস্পর্শে আসার কারণে কর্মজীবী মায়েদের সন্তান লালনপালন কীভাবে প্রভাবিত হয়।
গবেষণার জন্য কর্মজীবী নারীদের কর্মক্ষেত্রের খারাপ অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। পরে তাদের স্বামীদের কাছে জানতে চাওয়া হয় তাদের স্ত্রীর উপর এর কী প্রভাব পড়েছে। বা মা হিসেবে তাদের শাষণের মাত্রা বেড়ে গেছে কিনা?
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায় অপ্রীতিকর কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ মায়েদের সন্তান লালনপালনের ক্ষেত্রে কঠোর হওয়ার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। গবেষকদের মতে, কর্মক্ষেত্রে খারাপ পরিবেশ মায়েদের মধ্যে এই ধারণা সৃষ্টি করে যে অভিভাবক হিসেবে তারা অযোগ্য। আর একারণেই তারা সন্তানদের সঙ্গে কঠিন হওয়া শুরু করেন। এটা প্রমাণ করতে যে তারা মা হিসেবে অযোগ্য নন।
গবেষণার সহকারী লেখক ডা. ক্যাথরিন ডুপ্রে বলেন, “একাধিক অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা এখন জানি যে কর্মক্ষেত্রে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রভাব অত্যন্ত নেতিবাচক এবং তার প্রভাব বেশ সুদূর প্রসারিত। যেমন, কর্মক্ষেত্রে অসৌজন্যমূলক আচরণের শিকার কর্মীদের কাজে আগ্রহ কমে যায়, মানসিক চাপ বেড়ে যায়, মনযোগ নষ্ট হয়, সিদ্ধান্ত নেওয়া স্পৃহাও কমে যায়।
মোকাবেলা করার উপায়
অসৌজন্যমূলক আচরণের আওতায় অনেক কিছুই আছে। যেমন- সহকর্মীকে অবজ্ঞা করা, কারও সম্পর্কে খারাপ প্রতিবেদন দেওয়া, অন্যের কাজের কৃতিত্ব নিজে নিয়ে নেওয়া ইত্যাদি। বিশেজ্ঞদের মতে, এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে মোকাবেলা করা সহজ কাজ নয়। সহকর্মীদের কাছ থেকে এমন ব্যবহার পেলে তার মুখোমুখি হওয়া এবং সরাসরি তার খারাপ ব্যবহারের কারণ জানতে চাইতে পারেন। তবে একাধিক সহকর্মীর কারণে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ নষ্ট হলে অন্য চাকরি খোঁজাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
সেচ্ছায় বদলি নেওয়ার চেষ্টাও করা যেতে পারে। তবে সবচাইতে বড় কাজ হবে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ যাতে কখনই ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করতে না পারে সেই চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন