সাওল জীবনব্যবস্থা যেমন

নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসই যেখানে মুখ্য বিষয়, কেমন সেই খাদ্যাভ্যাস?

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2019, 10:26 AM
Updated : 22 August 2019, 10:26 AM

রাজধানীর ইস্কাটনে এক দশক ধরে বিনা অস্ত্রোপচারে হৃদযন্ত্রের ‘ব্লক’য়ের চিকিৎসা করছে সাওল হার্ট সেন্টার বাংলাদেশ। রোগীর খাদ্যাভ্যাসকে কড়া নিয়ন্ত্রণে রেখে ‘ব্লক’য়ের কারণ নির্মূল করাই এই চিকিৎসার প্রধান হাতিয়ার, যাকে বলা হয় সাওল জীবনব্যবস্থা।

এই জীবনব্যবস্থার করণীয় বর্জণীয় বিষয়গুলো নিয়েই আজকের আয়োজন।

যেকোনো সমস্যার কারণ দূর করা গেলে সমস্যা আপনা থেকেই সমাধান হয়ে যায়, ‘ব্লক’য়ের ক্ষেত্রেও ব্যাপার এমনই সহজ। তো এই যে ‘ব্লক’ তৈরি হচ্ছে তার মূল উপকরণ হল ‘ট্রাইগ্লিসেরাইড’ এবং ‘কোলেস্টেরল’।

এইদুটোর শরীরে প্রবেশ বন্ধ করলেই তো ‘ব্লক’ হওয়ার সম্ভাবনা দূর হয়ে যাবে।

এখানেই আসে সাওল জীবনব্যবস্থা। ‘ট্রাইগ্লিসেরাইড’য়ের উৎস হল সব ধরনের তেল। আর ‘কোলেস্টেরল’য়ের উৎস হল সকল প্রাণিজ খাবার।

তাই ‘ট্রাইগ্লিসেরাইড’ বন্ধ করতে চাইলে তেল একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে।

সাওলজীবন-ব্যবস্থার বক্তব্য হল খাবারে স্বাদ আনে মসলা, তেল নয়। কারণ তেলের নিজস্ব কোনো স্বাদ নেই। আর শরীরের জন্য যতটুকু তেল দরকার তা প্রতিটি খাবারে প্রাকৃতিকভাবেই বিদ্যমান। প্রশ্ন আসতে পারে তেল ছাড়া কীভাবে রান্না হবে?

উত্তর হল পানি। প্রতি সপ্তাহে সাওল হার্ট সেন্টারের সেমিনারে একথা শুনে অনেকেই অবাক হন, এ যেন এক অসম্বব কল্পনা। চোখের সামনে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করার জন্য রান্নার সেমিনারও হয় এখানে।

এবার বন্ধ করতে হবে ‘কোলেস্টেরল’, যার উৎস হল সকল প্রাণিজ খাবার। অর্থাৎ মাছ, মাংস, দুধ, ডিম সবকিছুতেই ‘কোলেস্টেরল’ আছে কিন্তু উদ্ভিজ্জ কোনো খাবারেই তা নেই। এদের মধ্যে দুধ আবার অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার এবং তা থেকে ‘কোলেস্টেরল’ আলাদা করে ফেলা সম্ভব।

উপায় হল দুধ ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করলে উপরে যে সর পড়ে সেটা্ই হল দুধের ‘কোলেস্টেরল’।

কয়েকবার দুধ ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করলে তা থেকে সিংহভাগ ‘কোলেস্টেরল’ বের করে ফেলা যাবে। এভাবে সর ফেলে দিলে দুধ পান করা যায় নিশ্চিন্তে।

এদুটি প্রধান উপাদান ছাড়াও ধমনিতে ‘ব্লক’ তৈরি করতে সহায়ক উপাদানগুলো হল- ‘এলডিএল’, ‘এইচডিএল’, ‘ভিএলডিএল’ ও ‘কোলেস্টেরল-এলডিএল’য়ের অনুপাত।

মোট ছয়টি উপাদান মিলে হয় ‘লিপিড প্রোফাইল’। ‘ব্লক’ হওয়া রুখতে চাইলে ‘কোলেস্টেরল’ থাকতে হবে ১৩০ এর নিচে, ‘ট্রাইগ্লিসেরাইড’ থাকা চাই ১০০ এর নিচে, ‘এলডিএল’ থাকতে হবে ৭০ এর নিচে।

এদের মধ্যে এইচডিএল হল উপকারী যা ‘কোলেস্টেরল’য়ের মাত্রা কমানোর চেষ্টা করে। এটা মাত্রা বাড়াতে হবে আর সেজন্য বেশি বেশি হাঁটতে হবে।

‘ব্লক’ হওয়ার প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস, মানসিক চাপ, ধূমপান, মদ্যপান এবং অতিরিক্ত ওজন। রক্তচাপ ৮০/১২০ এর মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেজন্য উপরের বিষয়গুলো মেনে চলার পাশাপাশি লবণ খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে।

রক্তে শর্করার মাত্রা খালি পেটে থাকবে ৫.৫ আর ভরা পেটে থাকবে ৭.৭।

সাওল জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে তাদের সাপ্তাহিক সেমিনারে যোগ দিতে পারেন বিনামূল্যে।

সূত্র: সাওল হার্ট সেন্টার।

আরও পড়ুন