আপনার চারপাশের মানুষগুলোর অধিকাংশই কি শরীরের গড়ন নিয়ে অসচেতন? তাহলে আপনার জন্যেই গবেষকরা এনেছেন খুশির খবর। তা হল, এমন মানুষের আশপাশের থাকার কারণেই আপনার খাদ্যাভ্যাস কিংবা নিজের শরীরের প্রতি সন্তুষ্টি বাড়বে।
একজন মানুষের শারীরিক সন্তুষ্টির মাত্রার উপর তার চারপাশের সামাজিক পরিবেশ কতটা প্রভাব ফেলে, এই বিষয়ে করা পর্যবেক্ষণে কানাডাতে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াটারলু’র গবেষকরা দেখতে পান, শরীরের ওজন, গড়ন ও বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে সচেতন নয় এমন মানুষের সঙ্গে মেলামেশায় রয়েছে ইতিবাচক প্রভাব।
কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াটারলু’র ‘পোস্ট ডক্টরাল’ শিক্ষার্থী ক্যাথরিন মিলার বলেন, “নিজের শরীর সম্পর্কে আমাদের অনুভূতির একটি বড় অংশ নির্ভর করে শারীরিক গড়ন নিয়ে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের আশপাশের মানুষগুলো যদি তাদের শারীরিক গড়ন নিয়ে অতিরিক্ত সচেতন না হয়, তবে আমাদের নিজের শরীরের প্রতি সন্তুষ্টির মাত্রা বাড়ে।”
এই গবেষণায় জন্য ১৭ থেকে ২৫ বছর বয়সি একশজন নারীকে নিয়ে কাজ করেন গবেষকরা। প্রতিদিন অংশগ্রহণকারীরা শারীরিক বিষয় নিয়ে কতটুকু আলোচনা করেন, নিজের গড়ন নিয়ে ওই নারী কতটুকু সন্তুষ্ট, ক্ষুধার অনুভূতিকে তারা কতটা গুরুত্ব দেন নাকি একটি নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাসই অনুসরণ করেন এইসব নিয়ে পর্যালোচনা করেন গবেষকরা।
ফলাফলে দেখা গেছে, নিজের শারীরিক গড়ন নিয়ে অসন্তুষ্টি ওই ব্যক্তির মন-মেজাজ, আত্মবিশ্বাস, অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদির উপর মারাত্বক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াটারলু’র অধ্যাপক অ্যালিসন কেলি বলেন, “যাদের সঙ্গে আমরা সময় ব্যয় করি তারা আমাদের দৈহিক গড়নের সন্তুষ্টিকে যে প্রভাবিত করে সেটা বিবেচনায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি শারীরিক গড়ন নিয়ে অসচেতন মানুষদের সঙ্গে সময় কাটাই তবে নিজের শারীরিক গড়ন যেমনই হোক না কেনো তা নিয়েই আমরা সন্তুষ্ট থাকতে পারব।
‘বডি ইমেইজ’ নামক জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।
এছাড়াও শরীরের গড়ন সুন্দর করার জন্য অস্বাস্থ্যকর ও ক্ষতিকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার আশঙ্কা কমবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার অনুপ্রেরণা যোগাবে এই মানুষগুলো।
মিলার বলেন, “নারীরা যদি তাদের শারীরিক ওজন আর গড়নের ওপর থেকে মনোযোগ সরাতে পারে, তবে পুরো সমাজেই নারীর শারীরিক গড়ন নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসা সম্ভব।”
নারীদের জানা উচিত যে আশপাশের মানুষের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলার সুযোগ আছে তাদের হাতের মুঠোতেই।
প্রতীকী ছবির মডেল: বিনি, অনন্যা, ইমু এবং অর্পা। ছবি: আসাদুজ্জামান প্রামানিক।
আরও পড়ুন