ওজন বাড়তি মানেই কি অসুস্থ?

অতিরিক্ত ওজন সুস্বাস্থ্যের অন্তরায়। তবে স্বাভাবিকের চাইতে একটু বাড়তি ওজন শরীরের জন্য ক্ষতিকর নাও হতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2018, 10:49 AM
Updated : 27 May 2018, 10:49 AM

বাড়তি ওজন বা ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’য়ের মাত্রা বেশি হলে শরীরের সকল সমস্যা জন্য দায়ী করা হয়। ‘ওবেসিটি’ বা অতিরিক্ত বাড়তি ওজনের ব্যাপারটা বাদ দিলে কিছুটা বাড়তি ওজন কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?

বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, যারা বাড়তি ওজনধারী তাদের জন্য সব ধরনের রোগবালাইয়ের আশঙ্কা আসলেই বেশি।

‘আর্কাইভস অফ ইন্টারনাল মেডিসিন’ নামক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, যাদের ওজন স্বাভাবিকের চাইতে কিছুটা বেশি বা ‘ওভারওয়েট’ তাদের কোলেস্টেরল, রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে ৫০ শতাংশ। তবে যাদের ওজন অতিরিক্ত বেশি বা ‘ওবিস’ তাদের এসব রোগের আশঙ্কা ৭৫ শতাংশ। আর স্বাভাবিক ওজনের একজন ব্যক্তির ঝুঁকি ২৫ শতাংশ।’

চিন্তার বিষয় হল ওজনের এই পরিমাপ কতটা যুক্তিসঙ্গত? ওজন মাপার যন্ত্র এবং ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স (বিএমআই)’ কোনোটাই চর্বি আর পেশির মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারে না। যেমন, প্রতিটি পেশাজীবী খেলোয়াড়ের বিএমআই মাত্রা বেশি। তবে সেটার কারণ চর্বি নয়, পেশি।

এই তথ্য যদি বিবেচনা করা না হয় তাহলে স্বাভাবিকের চাইতে ওজন একটু বেশি হওয়ার কি রোগবালাইয়ের কারণ হতে পারে?

২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ বিশেষজ্ঞ ক্যাথরিন ফ্লিগাল বলেন, “‘অভারওয়েট’ বা ওজন সামান্য বেশি তবে ‘ওবিস’ বা অতিরিক্ত মোটা না, সেক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকি এক শতাংশও বাড়ে না।”

আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, ২০১৩ সালে ক্যাথরিন ফ্লিগাল আরেক গবেষণায় দেখান, যাদের বিএমআই’য়ের মাত্রা ২৫ থেকে ৩০, যা নিঃসন্দেহে বাড়তি ওজন, তাদের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি স্বাভাবিক বিএমআই মাত্রা অধিকারীদের তুলনায় সাত শতাংশ কম। অর্থৎ অকাল মৃত্যুর ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ওজনের চাইতে একটু বেশি ওজন থাকাই ভালো।

তবে তার এই গবেষণা প্রচুর বিতর্কের সম্মুখীন হয়।

তার সমালোচনাকারীরা ২০১৬ সালে একটি গবেষণায় দেখান, প্রতি ইঞ্চি চর্বির আস্তর বৃদ্ধির কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি কতটা বাড়ে। এখানে ফ্লিগাল বলেন, এই গবেষণা পুরানো গবেষণার তথ্যের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে, নতুন তথ্য এখানে ব্যবহার হয়নি।

ফ্লিগালের গবেষণাও ফেলনা নয়। বরং ২০০০ সালে স্বাস্থ্যকর বিএমআই মাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৭, যা ১৯৭০ সালে ছিল ২৩.৭। তাই বলে স্বাভাবিক ওজনধারীরা যে ওজন বাড়াবেন তা কিন্তু উচিত হবে না।

সারমর্ম হল ওজন যদি স্বাভাবিকের চাইতে সামান্য বেশি হয় তবে তা নিয়ে ব্যস্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সামান্য বাড়তি ওজন নিয়েও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া সম্ভব।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন