অভ্যাসে বাড়তি ওজন

ব্যায়াম করছেন, খাওয়া কমিয়েছেন- তাও দেহের ওজন কমছে না! কারণ থাকতে পারে অনেক। তবে কয়েকটি অভ্যাসও হতে পারে দেহে চর্বি জমার কারণ।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2017, 09:35 AM
Updated : 9 Dec 2017, 09:36 AM

বিভিন্ন গবেষণায় কয়েকটি অভ্যাসের বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেছে, যেগুলো থাকলে দেহের বাড়তি ওজন কমানোর চেষ্টা বৃথা যেতে পারে।

নিজেই মিলিয়ে দেখুন তো এসব অভ্যাস আপনার আছে কিনা?

ডায়েট পানীয়: ক্যালরি মুক্ত হলেও অন্যভাবে আপনার খরচ বাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ দেহে ক্যালরির চাহিদা মেটাতে অন্যান্য খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়তে দেখা যায়।

‘আমেরিকান জার্নাল অফ পাবলিক হেল্থ’য়ে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে জানা যায়, যারা ডায়েট কোমল পানীয় পান করেন তারা সারাদিনে সাধারণ কোমল পানীয় পানকারীদের চেয়ে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করতে পারেন। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, যারা ডায়েট বা সাধারণ কোনো রকম কোমল পানীয় পান করেন না তাদের তুলনায় স্থূলব্যক্তিদের মধ্যে যারা ডায়েট কোমল পানীয় পান করেন তারা সারাদিনে ৮৮ থেকে ১৯৪ পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ করতে পারেন।

ঘন ঘন বাইরে খাওয়া: বন্ধুদের আড্ডা বা সময় কাটাতে রেস্তোরাঁ ঘন ঘন যাওয়া হলে খেয়াল রাখুন কোন ধরনের খাবার খাচ্ছেন।

গ্রিল্ড বা ঝলসানো, সৌটেই বা অল্প তেলে হালকা ভাজা খাবারের তুলনায় রুটিজাতীয়, ফ্রাই, ক্রিস্পি, স্মুদি বা ক্রিম দেওয়া খাবারে স্বাভাবিক ভাবেই বেশি চর্বি থাকে। তাই খাবার বাছাই করুন সাবধানে।

এমনকি খাবারের স্বাদ বাড়াতে বাড়তি ‘টপিং’ বা মসলা ছিটানো বাদ দিন। আলাদা চিজ বা পনির না চেয়ে বরং মেয়োনেইজ দিয়ে কাজ সারুন।

ছুটির দিনে অলস সময়: যুক্তরাষ্ট্রের ‘নর্থওয়েস্টার্স ইউনিভার্সিটি’র করা এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা দেরিতে ঘুমায় আর পরদিন বেলা করে ওঠে- তাদের ওজন বাড়ে।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা মধ্যরাতের পরে ঘুমাতে গিয়েছে এবং দেরিতে উঠে দুপুরের কাছাকাছি সময়ে দিনের প্রথম খাবার খেয়েছেন তারা বেশি ক্যালরি গ্রহণ করেছেন। আর সারাদিনে তারা বেশি ফাস্ট ফুড গ্রহণ করেছেন সেই তুলনায় ফল বা সবজি খেয়েছে কম।

অন্যদিকে তুলনামূলকভাবে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা মধ্যরাতের আগেই ঘুমিয়ে পরদিন সকাল ৮টার মধ্যে বিছানা ছেড়েছেন তাদের ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ স্বাভাবিক ছিল।

আসল কথা হচ্ছে, ছুটির দিনেও সপ্তাহের অন্যান্য সময়ের মতো সকালে ওঠার অভ্যাস রাখুন। এতে রুটিনের ব্যাঘাত হবে না। ফলে অন্যান্য দিন যা খাচ্ছেন একই রকম খাওয়া ছুটির দিনেও চালিয়ে যেতে পারবেন।

মানসিক চাপে মিষ্টি খাওয়া: অফিসে কাজের চাপ কিংবা অন্য কোনো কারণে বিষণ্নতা থেকে অনেকেরই মিষ্টি খাবারের প্রতি ঝোঁক বাড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘হার্ভার্ড মেডিকল স্কুল’য়ের এক পর্যবেক্ষণের ফলাফল থেকে জানানো হয়, মানসিক চাপ দেহে কর্টিসল হরমোনের পরিমাণ বাড়ায়। যা থেকে মিষ্টি ও চর্বিজাতীয় খাবার গ্রহণের আসক্তি হয়। তাই হাতের কাছে স্বাস্থ্যকর নাস্তা রাখুন। যেমন- বাদাম।

একই ব্যায়ামে অভ্যস্ত থাকা: শরীরচর্চার কিছু নিয়ম আছে। নিজের মতো করলেই হয় না। ‘আমেরিকান কলেজ অফ স্পোর্টস মেডিসিন’য়ের ‘হেলন্থ অ্যান্ড ফিটনেস’ জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় স্বাভাবিক ব্যায়ামের চাইতে ‘হাই ইনটেনসিটি ইন্টার্ভাল ট্রেইনিং (এইচআইআইটি) বেশি মাত্রায় চর্বি পোড়াতে সক্ষম। বিশেষ করে পেটের মেদ।

এই ব্যায়াম এরকম হতে পারে- একটানা একই ব্যায়াম না করে বরং ৩০ সেকেন্ড স্কিপিংয়ের পর ৬০ সেকেন্ট দ্রুত হাঁটা। আবার হতে পারে- শরীরের উপরের অংশের ব্যায়াম কিছুক্ষণ করে নিচের অংশের ব্যায়াম করা। এই ধরনের ব্যায়াম হৃদপিণ্ডের গতি বাড়ায় ফলে শরীরের চর্বি দ্রুত পোড়ে।

তবে যে কোনো ব্যায়ামের জন্য প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

ধূমপান: এই বাজে অভ্যাস নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। বরং আরেকটা তথ্য জেনে রাখুন। ‘আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকল নিউট্রিশন’ প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানানো হয়, অধূমপায়ীদের চাইতে ধূমপায়ীদের কোমরের পরিধি বেশি। কারণ পেশির পরিমাণ কম আর পেটের চর্বি বেশি। যা ধূমপানের প্রত্যক্ষ প্রভাবে হয়। তাই ফুসফুসকে আরাম দিতে আর বাড়তি ওজন ঝারতে এই অভ্যাসও ঝেরে ফেলুন।

আরও পড়ুন