গরমে চোখের যত্ন

সূর্যের তাপে আর ঝলসানো আলোয় চোখের ক্ষতি হতে পারে। তাই এই গরমে চোখ ভালো রাখতে হলে চাই সচেতনতা।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2016, 09:29 AM
Updated : 6 June 2016, 09:29 AM

মুম্বাইয়ের আই সাইট আই কেয়ার অ্যান্ড সার্জারির কর্ণধার ড. নিখিল নাসতা স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে জানিয়েছেন গরমে চোখ ভালো রাখার প্রয়োজনীয়তা এবং উপায়—

গরমে আমাদের চোখ লম্বা সময় পর্যন্ত সূর্যের আলোর নিচে থাকে। এর ফলে চোখের সমস্যাও তৈরি হওয়ার সুযোগ পায়।

ড. নাসতা বলেন, “গ্রীষ্মকালে সকাল ১০টার পরে এবং বিকাল ৪টার আগে ঘরের বাইরে ঘুরাঘুরি এড়িয়ে চলা উচিত। এই সময় সূর্যের তেজ সর্বোচ্চ থাকে এবং চোখের ক্ষতিও সর্বোচ্চ হয়। যেহেতু কাজের জন্য ঘরের বাইরে যেতেই হয় তাই কিছু নিয়ম জেনে নিতে হবে যেন চোখের ক্ষতি ঠেকানো যায়।

বড় বারান্দা ওয়ালা টুপি: রোদ চশমা চোখকে ছায়া দিতে পারে। তবে চশমার ফাঁক দিয়ে অতিবেগুনি রশ্মি চোখের ঠিকই প্রবেশ করে। এই রশ্মি চোখের দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতি করে। এ থেকে রক্ষা পেতে চওড়া কিনারযু্ক্ত এবং মাথাকে ছায়া দিতে পারে এমন টুপি পরতে হবে।

অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে চোখের নিচের পাতায় ক্যান্সার হতে পারে, যা পরে পুরো চোখে ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।

পর্যাপ্ত ঘুম: বিশেষজ্ঞরা জানান, দীর্ঘ সময় জেগে থাকলে দৃষ্টি শক্তির গভীরতা হ্রাস পায়।

ড. নাসতা বলেন, “চোখের দৃষ্টি স্বাভাবিক রাখতে হলে অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা নির্বিঘ্ন ঘুমের প্রয়োজন। দীর্ঘ সময় জেগে থাকলে চোখের অভ্যন্তরে থাকা জলীয় পদার্থ শুকিয়ে যায়। চোখ শুষ্ক অনুভব হয় এবং চুলকায়।”

সাঁতারের সময় গগল পরা: সুইমিং পুল বা যে কোনো জলাধারে সাঁতার কাটতে গেলে অবশ্যই সাঁতারের জন্য ব্যবহৃত গগল পরতে হবে।

ড. নিখিল নাসতার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুইমিং পুলের পানিতে থাকা ক্লোরিন এবং অন্য জলাধারের পানিতে থাকা অনুবীক্ষণীক জীবাণু চোখে প্রবেশ করে ক্ষতি সাধন করে। ক্লোরিন সাধারণত চোখের কর্নিয়ার উপর একটি স্তর তৈরি করে, যা চোখের দৃষ্টি ঝাপসা করে দেয়।

সুইমিং পুল ছাড়া, অন্য জলাধারে ক্লোরিন না দেওয়ার কারণে জীবাণু জন্মানোর সুযোগ পায় যা চোখে চুলকানী এবং অন্য অসুখ সংক্রামণের কারণ হয়।

সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা পেতে চওড়া কার্নিশযুক্ত টুপি ব্যবহার করতে হবে। ছবি: রয়টার্স।

ড. নাসতা পরামর্শ দেন, কনট্যাক লেন্স খুলে তারপরে পানিতে ঝাঁপ দিতে। না হলে পানির মধ্যে থাকা ক্লোরিন বা জীবাণু চোখের প্রকৃত লেন্স এবং কনট্যাক লেন্সের মধ্যে আঁটকে থাকে।

হাত পরিষ্কার রাখা: বিশেষজ্ঞরা বলেন, চোখ বারবার কচলালে চোখে সংক্রামণ হওয়ার সম্ভবনা থাকে। একমাত্র হাত বার বার ধুয়ে পরিষ্কার রাখলেই এই ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকা যায়। তাই চোখে কোনো ওষুধ দেওয়ার আগে অথবা কনট্যাক লেন্স পরার আগেও হাত ধুয়ে নেওয়া উচিত। এভাবে চোখে সংক্রামণ প্রতিরোধ করা যায়।

আর্দ্র দেহ, সুস্থ চোখ: চোখের সুস্থতার জন্য দেহে প্রচুর পরিমাণে জলীয় পদার্থ থাকতে হবে। খাদ্য তালিকায় তরমুজ, শসা, পানি সমৃদ্ধ অন্য সব ফল এবং সবজি নিয়মিত যোগ করলে শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় থাকে। এ ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে পানি পানে চোখের স্বাভাবিক ক্রিয়া বজায় থাকে। চোখ ভালো রাখতে সব ধরনের ভিটামিন এবং মিনারেল তো খেতে হবেই। প্রয়োজনে, ভিটামিন সি, ই এবং জিংকের সম্পূরক উৎস থেকেও পুষ্টি গ্রহণ করতে হবে। তবে অবশ্যোই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে।