চোখ ভালো রাখার খাবার

চোখের কিছু সমস্যা এড়াতে ও দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার জন্য কিছু খাবার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখা জরুরি।

তানভীর মাহমুদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2015, 10:41 AM
Updated : 27 Dec 2015, 10:59 AM

পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এরকম খাবারের নাম জানানো হয়।

পালংশাক: পালংশাকে আছে প্রচুর পরিমাণে ‘লুটিন’ নামক পুষ্টি উপাদান, যা চোখে ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এতে আরও আছে বিটা ক্যারোটিন আর জিক্সান্থিন; দুটোই চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

ঝিনুক: ঝিনুকের মাংসে উপস্থিত জিংকের পরিমাণ অন্য যে কোনো খাবারের চেয়ে বেশি। ‍যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের খাদ্য ও পুষ্টিবিদ ক্যারোলিন কফম্যান বলেন, “জিংক যকৃতে জমে থাকা ভিটামিন এ ব্যবহার করে রেটিনায় মেলানিন তৈরি করতে সাহায্য করে। মেলানিন আমাদের চোখের ওপর একটি রক্ষাকারী আবরণ তৈরি করে।”

তিনি আরও বলেন, “কেবল ঝিনুকেই দৈনিক চাহিদার চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি জিংক থাকে।

গ্রিন টি: এই চায়ের অসংখ্য উপকারিতার কথা জানা গেছে। এটি চোখের জন্যও উপকারী। যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য ও পুষ্টিবিদ এবং এবিসি নিউজের মেডিকল কন্ট্রিবিউটর ডেভিড ক্যাটজ বলেন, “সবুজ চা, ফ্ল্যাভানয়েড নামক উপাদানের সমৃদ্ধ উৎস। এতে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রেটিনাকে সূর্যালোকের তেজস্ক্রিয়তা থেকে রক্ষা করে।”

এছাড়াও প্রাণীদের উপর গবেষণায়, কিছু বিশেষ প্রকারের গ্লুকোমার ঝুঁকি হ্রাসের সঙ্গে সবুজ চা পানের সম্পর্ক প্রমাণিত হয়েছে। 

আখরোট: আখরোটে আছে উদ্ভিজ্জ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, যা সামুদ্রিক খাবার থেকে ভিন্ন। এটি রক্ত প্রবাহ, লিপিডের মাত্রা ইত্যাদি ঠিক রাখতে সাহায্য করে, যা চোখ ও অপরাপর দেহযন্ত্রগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

কুমড়া: বিশেষজ্ঞদের মতে ক্যারোটিনয়েডস লুটিন ও জিক্সান্থিন বার্ধক্যজনিত চোখের সমস্যা প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পুষ্টি উপাদান।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থিত নোভা সাউথস্ট্রিম ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ অপটোমারি’তে অবস্থিত অকুলার নিউট্রিশন ক্লিনিক’য়ের পরিচালক কিম্বার্লি রিড বলেন, “বয়স্ক লোকজন, যারা বার্ধক্যজনিত ‘ম্যাকুলার ডিজেনারেশন’য়ের ঝুঁকিতে আছেন; তাদের জন্য এসকল পুষ্টি উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

কুমড়া লুটিন ও জিক্সান্থিনের চমৎকার উৎস। এছাড়াও কুমড়ায় প্রচুর ভিটামিন এ আছে।

স্যামন মাছ: ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড যা ফিশ অয়েল নামে পরিচিত, বিশেষভাবে পরিচিতি পাওয়ার কারণ হল এর অসামান্য স্বাস্থ্যগুণ। সামুদ্রিক মাছ থেকে প্রাপ্ত ওমেগা থ্রি চোখের কোষের কাঠামো স্থিতিশীল রাখে এবং কোষগুলোর মধ্যে যোগাযোগে সহায়তা করে।

কফম্যান জানান, “স্যামন মাছে প্রাপ্ত ফ্যাটি এসিড বয়স্কদের মধ্যে ‘ম্যাকুলার ডিজেনারেশন’য়ের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে।”

পাশাপাশি স্যামন মাছে উপস্থিত পুষ্টি উপাদান গ্লুকোমা ও শুষ্ক চোখ থেকেও রক্ষা করে।

আসল কথা হচ্ছে, চোখ ভালো রাখার খাবার সাধারণ স্বাস্থ্যপ্রদ খাদ্যাভ্যাসের বাইরে কিছু নয়।

ক্যাটজ বলেন, “চোখের জন্য উপকারী বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সাধারণত সুষম খাবারেই থাকে, বিশেষত রঙিন শাকসবজিতে।”

তার মতে, “চোখ রক্ষা করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে, পুরো দেহের কথা ভেবেই পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা।”

ছবি রয়টার্স।