রুটির মধ্যে মাংস, মাছ বা ডিমের পুরের সঙ্গে লেটুস পাতা, মেয়নেইজ, চিজের আস্তর দিয়ে তৈরি খাবার। নেই তেমন শিল্পের ছোঁয়া তারপরও ঢাকা শহরের বেশ কয়েকটি দোকান এই খাবার বিক্রি করে খ্যাতি অর্জন করেছে।
Published : 16 Aug 2015, 04:56 PM
সব রেস্তোরাঁর বার্গার দেখতে একই রকম হলেও ভিন্ন ভিন্ন রন্ধন পদ্ধতির কারণে স্বাদে রেয়েছে বৈচিত্র্য।
আমেরিকান বার্গার
বাড়ি ২৪ রোড ১১ বনানী
বার্গার খাওয়ার অল্প কিছু ভালো জায়গা হল এই আমেরিকান বার্গার। গ্রিলে তৈরি চমৎকার ‘স্মোক ফ্লেইভার’ নাকে ও পেটে দুটোতেই ভালো লাগবে। ১৬ ধরনের বার্গার পাওয়া যায় এখানে। স্যান্ডউইচ পাবেন ৬ ধরনের। আরও আছে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ও কোমল পানীয়। সিঙ্গেল ও ডাবল চিজ বার্গার বহুল বিক্রিত। এদের আসন ব্যবস্থা ১০ জনের। সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্য্ন্ত খোলা।
দ্য ব্যাক ইয়ার্ড শেফ
বার্গারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে গুরমে বার্গার। ৪শ’ টাকা মূল্যের এই বার্গারে ব্যবহার করা হয় তাদের নিজস্ব ক্রিম অফ মাশরুম সস। এছাড়াও আছে ৫২০ টাকার জুসি লুসি বার্গার। যার প্যাটির ভেতরে চিজ রেখে তা রান্না করা হয়।
বার্গার অ্যান্ড বুস্ট
২০১১ সালে ধানমণ্ডি ৪/এ গলিতে যাত্রা শুরু করেছিল বার্গার অ্যান্ড বুস্ট, জানালেন ধানমণ্ডি শাখার ম্যানেজার নাসির। বর্তমানে বনানী ছয় নম্বর রোডে এবং যমুনা ফিউচার পার্কে রয়েছে আরও দুটি শাখা।
নাসির বলেন, “বিফ বার্গারের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ডাবল হুপার চিজ বার্গার, দাম ৩৮৫ টাকা। দুটি প্যাটি আর দুই স্লাইস চিজের কারণেই এমন নামকরণ। আর চিকেন বার্গারের মধ্যে জনপ্রিয় বার্গারটির নাম তেরিয়াকি চিকেন বার্গার, দাম ৩২৫ টাকা। এতেও মিলবে দুটি প্যাটি ও দুই স্লাইস চিজ।”
বার্গারের পাশাপাশি মিলবে পাঁচ ধরনের স্যান্ডউইচ, দুই ধরনের রোল, তিন ধরনের সালাদ, ফ্রাইড চিকেন, চিকেন উইংস, লেমন পেপার স্টেক, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, সাত স্বাদের স্মুদি, জুস, চা এবং কফি।
ধানমণ্ডি শাখায় বসার ব্যস্থা আছে ৩০ জনের। ওয়াইফাই আছে।
লাইভ কিচেন
২০১৩ সালের জুন মাসে বনানীতে চালু হয়েছিল। তবে এবছরের মার্চ মাসে শাখাটি স্থান পরিবর্তন করে বনানী তিন নম্বর রোডের এফ ব্লকে প্ল্যাটার রেস্তোরাঁর সঙ্গে মিলিতভাবে চালু হয়েছে।
এছাড়াও ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর মীনা বাজারের পেছনেও একটি শাখা আছে তাদের। দুই শাখাতেই বসার ব্যবস্থা আছে একশ জনের বেশি। ধানমণ্ডি শাখা খোলা থাকে সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। বনানী শাখা দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। ওয়াইফাই আছে।
রেস্তোরাঁটির বনানী শাখার ম্যানেজার আতিকুর রহমান বলেন, “মোট ১৪ ধরনের বার্গার মিলবে এখানে। দাম ১৭৫ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাড়ে তিনশ টাকা। আমাদের সিগনেচার বার্গারটির নাম সিগনেচার বিবিকিউ বিফ বার্গার, দাম আড়াইশ টাকা। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় বার্গার হল চিজি ডিলাইট এবং ফিলি চিজ স্টেক বার্গার। দাম আড়াইশ টাকা।”
ম্যাডশেফ
ম্যাডশেফের ইতিহাস জানালেন কর্ণধারদের মধ্যে একজন, আরমান।
তিনি বলেন, “২০১৪ সালের জুলাইতে ধানমণ্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল রোডে কার্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন ম্যাডশেফের কর্ণধার লাবিব। সেসময় আমি চিপস অ্যান্ড গ্রেভি নামে একটি কার্ট নিয়ে ব্যবসা করছিলাম। ব্যবসার সুত্র ধরেই আমাদের পরিচয় হয়। পরে দুই জন মিলে ম্যাডশেফ ওরিয়েন্টাল নামে একটি কার্ট শুরু করি। আর এবছরের মার্চ থেকে চালু হয় ম্যাডশেফ রেস্তোরাঁ।”
তিনি আরও বলেন, “ম্যাডশেফের সিগনেচার বার্গারের নাম গারলিক মেয়ো। এছাড়াও রেগুলার বার্গারের মধ্যে আছে নাগা ব্লাস্ট, তন্দুরি চিকেন, স্মোকউড বিবিকিউ, হাওয়াইয়ান চিকেন। সবগুলোরই দাম ২২০ টাকা। গুরমে বার্গারের মধ্যে ৩২০ টাকায় মিলবে দ্যা কিউবান, ৩৬০ টাকায় ম্যাডাম লুসি, ২৮০ টাকায় নাটি এলভিস এবং ৪১০ টাকায় চিজুজ।”
টেকআউট
ধানমণ্ডি সীমান্ত স্কয়্যার প্রাঙ্গনের ফুডকোর্টে বার্গার বিবেচনায় সম্ভবত সবচাইতে পরিচিত টেকআউট। চালু হয়েছিল ২০১৪ সালের জুনে। আর এবছরের জুনে বনানীর সাত নম্বর রোডে ছোট পরিসরে একটি রেস্তোরাঁ চালু করেছে তারা।
টেকআউটের চার কর্ণধারের মধ্যে একজন ফাহিম কবির বলেন, “অন্যান্য বার্গারের সঙ্গে টেকআউটের বার্গারের মূল পার্থক্য হল সস। প্যাটিতে থাউজেন্ড আইল্যান্ড সসের একটি রেন্ডিশন ব্যবহার করি, যা আমাদের নিজস্ব রেসিপিতে তৈরি করা হয়। প্যাটির জন্য কিমা করা মাংস কেনা হয় বেঙ্গল মিট থেকে। তবে এই কিমা প্যাটিতে পরিণত করার পুরো প্রক্রিয়াটাই আমাদের নিজস্ব।”
দুটি চিকেন প্যাটির মাঝে চিজ দিয়ে তৈরি হয় চিকেন চিজ ডিলাইট, দাম ২২০ টাকা। বিফ বেকন এবং ২০০ গ্রাম ওজনের প্যাটিওয়ালা বার্গারটির নাম বিফ অ্যান্ড বেকন, দাম ৩২০ টাকা। আর চিকেন সুপ্রিমে মিলবে দুটি চিকেন প্যাটি এবং বিফ বেকন, দাম ৩২০ টাকা।
ফাহিম কবিরের মতে, জনপ্রিয়তার দিক থেকে এখন পর্যন্ত সবার উপরে আছে বিফ চিজ ডিলাইট বার্গার। ২২০ টাকার এই বার্গারে থাকে দুটি বিফ প্যাটি, মাঝে এক স্লাইস চিজ।”
বার্গারে ঝালের পরিমাণ নির্ধারণ করারও সুযোগ মিলবে এখানে।
ফাহিম কবির বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি ঝাল খেতে পছন্দ করি। এ থেকেই ঝালের পছন্দের ধারণাটি মাথায় আসে।”
এছাড়াও মিলবে নুডুলস, শেইক, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ওয়েজেস এবং জুস। নুডুলস এবং শেইকের দাম পড়বে ৮০ থেকে দেড়শ টাকা।
ওয়াও বার্গার
রাস্তায় ঠেলাগাড়ির ওপর বিক্রিবাট্টা শুরু করলেও বর্তমানে রাজধানী জুড়ে তাদের রয়েছে চারটি বিক্রয়কেন্দ্র। দুটি বনানীতে একটি নিকেতন এবং একটি উত্তরাতে।
দাম ১২০ থেকে ২৫০ টাকা।
আরও রয়েছে
কেএফসি’র তাদের অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি ক্রিসপি, জিঞ্জার বার্গার এবং হট জিঞ্জার বার্গার বেশ বিক্রি হয়।
মাছের স্বাদে বার্গারে খেতে চাইলে রয়েছে খিলগাওয়ের ফিশ ফিশ। তাদের রয়েছে ফিশ বার্গার। এই এলাকায় আরও আছে অ্যাপেলিয়ানো বার্গার, দাম ১২৫ থেকে ২২৫ টাকা।
ছবি: মাহমুদুল হাসান মেহরাজ, আবরার হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট ফেইসবুক পেইজ থেকে।