সঠিকভাবে ব্লাশ ব্যবহারে মুখের আদলে সুক্ষ্ম ও সুগঠিতভাব আনা যায়।
Published : 22 Jan 2024, 11:29 AM
ব্লাশ মেইকআপের ক্ষেত্রে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে এবং ত্বকের সঠিক বর্ণ অনুযায়ী ব্যবহার করা হলে চেহারার সৌন্দর্য আরও অনেক গুণ বেড়ে যায়।
ব্লাশ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ত্বকের রং এবং ‘টোন’য়ের কথা মাথায় রাখা জরুরি। এতে করে সাজগোজের নিখুঁতভাবের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য সৃষ্টি করা সম্ভব।
রিয়েলসিম্পল ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন রূপ বিশেষজ্ঞ এলাইনা বাদ্র বলেন, “মেইকআপের সময় ফাউন্ডেশন বা শ্যাডো যেমন গায়ের রংয়ের ভিত্তিতে নির্বাচন করা হয়, একইভাবে ব্লাশ নির্বাচন করার সময় ত্বকের টোনের প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি।”
তিনি বলেন, “সঠিক ব্লাশ বাছাই করার সময় গায়ের রং অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। সেই সাথে ‘আন্ডারটন’ উষ্ণ না শীতল সেদিকেও মনোযোগী হতে হবে।”
“গায়ের রং উজ্জ্বল হলে ব্লাশ হিসেবে গোলাপি, চা, পেস্টাল ধর্মী রং বেছে নেওয়া যেতে পারে। যাদের গায়ের রং কিছুটা চাপা তাদের জন্য কিছুটা গাঢ় রংয়ের ব্লাশ দেখতে চমৎকার লাগে। এক্ষেত্রে গাঢ় বেরি রং বাছাই করা যায়। যাদের গায়ের রং কিছুটা মাঝারি তাদের সঙ্গে পিচ অথবা গোলাপি রং বেশ মানানসই।”- বলেন তিনি।
তিনি আরও যোগ করেন, “উষ্ণ টোনগুলোতে লালচে আন্ডারটোন ব্লাশ ব্যবহারে ভালো লাগে। পিচ, ট্রু গোলাপি এমনকি লাইলাক জাতীয় ও ‘অলিভ’ বা জল্পাই রংয়ের টোন মানিয়ে যায়। যাদের ত্বক কিছুটা শীতল আন্ডার টোনের তাদের শীতল রংয়ের ব্লাশ যেমন- ‘রোজি পিঙ্ক’, ‘বেরি’ এবং ‘প্লাম’ এই জাতীয় ব্লাশে বেশ সুন্দর লাগে।”
ঠোঁটের রংয়ের সঙ্গে মানানসই
‘ন্যাচারাল লুক’ বা ‘নো মেকআপ লুক’ তৈরি করতে লিপস্টিকের রংয়ের সাথে মিল রাখার পরামর্শ দেন বার্মিংহাম নিবাসী রূপ বিশেষজ্ঞ নেইল ইয়ং।
“মেইকাপের সৌন্দর্য বাড়াতে ব্লাশের টোন বাছাই করাটা জরুরি। ব্লাশের রং ঠোঁটের রংয়ের থেকে এক ধাপ হেরফের হতে পারে”- বলেন তিনি।
মেইকআপের ক্ষেত্রে ‘মনোক্রোমেটিক’ বা এক রঙা চিন্তা করা যেতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ- যদি লাল অথবা গোলাপের রংয়ের লিপস্টিক ব্যবহার করা হয় সেক্ষেত্রে ব্লাশের বেইজ গোলাপ ধর্মী হতে পারে। এতে চেহারাটা অনেক বেশি উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত দেখাবে।
ব্লাশ ব্যবহারের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় সমূহ
ইয়ং বলেন, “যখন আমি কারও মেইকআপ করে দেই তখন কিছুটা সময় নিয়ে মেইকাপে কী কী উপাদান ব্যবহার করা হবে তা ঠিক করি।”
“ব্লাশ চেহারার আকৃতি সুদৃঢ় করতে ও সৌন্দর্য বাড়াতে এবং এর কাঠামো ঠিক করতে ভূমিকা রাখে” বলেন তিনি।
উদাহরণ স্বরূপ- প্রলোভনমূলক ভাব তৈরি করতে স্ট্রবেরি গোলাপি রং বাছাই করা যেতে পারে। কিছুটা প্রাচীন বা ৯০ দশকের ভাব সৃষ্টি করতে চান তাহলে ‘মভ’ অথবা বাদামি টোন বেশ ভালো মানিয়ে যায়। এসব কিছুই নির্ভর করবে কীভাবে মেইকাপ করতে চাচ্ছেন তার ওপর।
ব্লাশের ধরন
ব্লাশের রং নির্বাচন করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ একইভাবে এর ধরন নির্ধারণ করাও জরুরি। পাউডার ব্লাশ কোনো রকমের ‘শিমার’ ছাড়া দেখতে ম্যাট লুক দেয়। অন্যদিকে এতে শিমার যোগ করা হলে আলোর প্রভাবে আরও বেশি চকচকে ও দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
ব্লাশে গ্লিটার ব্যবহারে দেখতে ভালো লাগে। যেখানে আলোর প্রভাব কম সেখানে নিজেকে অনেক উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় করে তুলতে এমনটা ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও নিয়মিত ত্বকে উজ্জ্বল আভা ফুটিয়ে তুলতে রিফ্লেক্টর বা প্রতিফলক সমৃদ্ধ ব্লাশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ত্বক দেখতে খুব প্রাকৃতিক ও কোমল লাগে।
ব্লাশ ব্যবহারের স্থান সম্পর্কে সতর্ক থাকা
ব্লাশের রং ও টেক্সচারের পাশাপাশি মুখে ঠিক কোন অংশে ব্লাশ ব্যবহার করা হবে তা চিহ্নিত করাও মেইকআপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
“যদি চেহারায় ‘ভলিউম’ বা উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান তাহলে ক্রিম ব্লাশ অথবা পার্ল সমৃদ্ধ ব্লাশ ব্যবহার করা যায়। এতে মুখে উজ্জ্বল আভা ফুটে ওঠে”- বলেন ইয়ং।
গালের হাড়ের ওপরের অংশ ব্লাশ ব্যবহারে চেহারা দেখতে সুক্ষ্ম ও মুখের আকার সুগঠিত লাগে।
ছবির মডেল: আশা। আলোকচিত্র: রাইনা মাহমুদ। বিন্যাস ও পরিকল্পনা: আলি আফজাল নিকোলাস। সৌজন্যে: ত্রয়ী ফটোগ্রাফি স্টুডিও।
আরও পড়ুন