৫০ টাকার মসজিদ

রাজশাহীর ঐতিহ্য আম ব্যবহার করা হয়েছে এর টেরাকোটায়, আছে আমের প্রতিকৃতি।

মুরসালীন আবদুল্লাহমুরসালীন আবদুল্লাহ
Published : 16 Jan 2023, 05:00 PM
Updated : 16 Jan 2023, 05:00 PM

প্রতি বছর ডিসেম্বর এলেই আমরা পুরো পরিবার কোথাও না কোথাও ঘুরতে যাই। ২০২২ সালের ডিসেম্বরেও আমরা সবাই মিলে রাজশাহী গেলাম।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় আমার এক মামা থাকেন, তার নাম সোহরাব হোসেন। সোহরাব মামার আমন্ত্রণেই আমাদের রাজশাহী যাওয়া।

অনেক ভোরে রওনা দিয়েছিলাম, দুপুর নাগাদ আমরা রাজশাহী পৌঁছে সোহরাব মামার বাসায় উঠলাম। তার বাসা আমার ভীষণ পছন্দ হলো, বাসার সামনে একটা মাঠ, মাঠের একপাশে খেলার জন্য স্লিপারও আছে, আরেক পাশে আছে দোলনা।

সেইদিন রাতেই আমরা ও সোহরাব মামা মিলে ঠিক করছিলাম পরের দিন কোথায় বেড়াতে যাব। তখন সোহরাব মামা বলল, ‘চলো তোমাকে ৫০ টাকার বাঘা মসজিদ দেখাতে নিয়ে যাই।’ আমি একটু অবাক হওয়ায় মামা বললো কাল গেলেই সব বুঝতে পারবে।

সকালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে খেজুরের রস খেয়ে আমরা রওনা দিলাম বাঘা মসজিদের উদ্দেশ্যে।

মসজিদটি প্রথম দেখাতেই আমার অনেক ভালো লাগলো। মসজিদের দেয়ালে অনেক সুন্দর সুন্দর আল্পনা করা। শুক্রবার থাকায় সেদিন সেখানে অনেক মানুষ ছিল। ঘুরে ঘুরে মসজিদ দেখতে দেখতে মামাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘এবার বলো মামা, ৫০ টাকার বাঘা মসজিদ মানে কী?’। তখন মামা আমাকে মসজিদের ইতিহাসটা বললেন...

১৫২৩ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয় এ মসজিদ। প্রায় ৫০০ বছর আগের পুরনো এ স্থাপনাটি হুসনী শাহ বংশের প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন শাহের পুত্র সুলতান নাসির উদ্দীন নুসরত শাহ নির্মাণ করেন। ১০ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির মূল আকর্ষণ হচ্ছে অসাধারণ নান্দনিক কারুকার্য আঁকা দেয়ালের ইট।

একটা মজার ব্যাপার কি জানো? রাজশাহীর ঐতিহ্য আম ব্যবহার করা হয়েছে এর টেরাকোটায়, আছে আমের প্রতিকৃতি। এর নান্দনিক কারুকার্য ও অনন্য সৌন্দর্যের কারণে ১৯৯৯ সালে ছাপা হওয়া ৫০ টাকা নোটে মসজিদটি স্থান পায়। সেখান থেকেই এর নাম ‘৫০ টাকার নোটের বাঘা মসজিদ’। লোকভাষায় এটি ‘৫০ টাকার মসজিদ’ নামে পরিচিত।।

মামার কাছ থেকে মসজিদের ইতিহাস জানতে জানতে এর আশপাশ ঘুরে দেখলাম। মসজিদের এক পাশে একটা বড় পুকুর আছে। আরেক পাশে একটা মাজার আর তার পাশে একটা জাদুঘরও আছে।

এবার আমাদের যাওয়ার সময় হলো। আমি মামাকে অনেক ধন্যবাদ জানালাম। মামার জন্য আজ অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমার ইচ্ছে আমি আবার বেড়াতে আসবো রাজশাহী।  

লেখক: ছাত্র, সপ্তম শ্রেণি, কসমোপলিটান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা 

কিডজ ম্যাগাজিনে বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!