ফুটবলে লাতিন সৌন্দর্য ‘ট্রি অফ ড্রিমস’

প্রদর্শনীর কেন্দ্রবিন্দু হলো একটি গাছ যার নাম ‘কনমেবল’, এটিকে লাতিন আমেরিকান ফুটবলের 'শক্তি' হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2022, 04:07 PM
Updated : 8 Dec 2022, 04:07 PM

বিশ্বকাপের উত্তেজনা আর উন্মাদনা থেমে নেই। এরই মাঝে কাতারের দোহায় চলছে লাতিন ফুটবলের সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী ‘কনমেবল- ট্রি অফ ড্রিমস’।

এ ‘স্বপ্নের গাছ’ দেখতে পাওয়া যাবে দেশটির একটি পরিকল্পিত শহর ‘মুশিরেব ডাউনটাউন দোহার’ সিকাত আল ওয়াদিতে, ইতোমধ্যে লাতিন আমেরিকান ফুটবল ভক্তদের কাছে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

‘দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন’ (কনমেবল) অনুসারে এ গাছের নাম ‘কনমেবল- ট্রি অফ ড্রিমস’। এ প্রদর্শনীতে লাতিন আমেরিকান ফুটবল কীভাবে পুরো ইতিহাস জুড়ে বিকশিত হয়েছে তা অনুরাগীরা ঘুরে ঘুরে দেখতে পাবে, খেলতে পারবে ইন্টারেক্টিভ গেমস যা ফুটবলে আপনার দক্ষতা যাচাই করে দেবে।

প্রদর্শনীতে আসা অনেক দর্শকের মাঝে পাওয়া গেলো সুদান থেকে আসা আয়মান ও তার আট বছর বয়সী ছেলে ফাদলকে। পিতা-পুত্র প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপ উপভোগ করতে কাতারে এসেছে।

আয়মান জানান, এ প্রদর্শনী তার ছেলেকে ফুটবল তারকা হওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা দুজনই বেশ ফুটবল ভক্ত, ট্রি অফ ড্রিমসের গ্যালারিগুলো আমাকে সাহস দিচ্ছে, দেখে মনে হচ্ছে একদিন আমার ছেলেও কিংবদন্তিদের একজন হতে পারে! এ গাছ সত্যি আশ্চর্যজনক, সবকিছু নিখুঁত।”

ইকুয়েডর থেকে আসা আরেক ফুটবল অনুরাগী ড্যানিয়েল বলেন, “পুরো প্রকল্পটি অসাধারণ। সমস্ত বিশ্বকেই যেন দেখায় এ গাছ। এখানে আপনি ফুটবল কিংবদন্তিদের ছবি তুলতে পারবেন এবং ফুটবলে আপনার দক্ষতা যাচাই করতে পারবেন। খেলাগুলো মজার, ইন্টারেক্টিভ, সবাই আনন্দ পাবে।”

প্রদর্শনীর কেন্দ্রবিন্দু হলো একটি গাছ যার নাম ‘কনমেবল’, এটিকে ফুটবলে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের শক্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেন গাছটির মধ্য দিয়ে স্পন্দিত হচ্ছে ওই মহাদেশের শক্তি। দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের আবেগ, লড়াই, সৌন্দর্য ও শ্রেষ্ঠত্বকে অনুভব করা যায় এতে।

‘দ্য ট্রি অফ ড্রিমস’ নামে ৬.১ মিটার উঁচু এ গাছটিতে সদস্য সংস্থাগুলোর নাম খোদাই করা আছে। এতে তিনটি অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে- সেরা খেলোয়াড়, হোম অফ দ্য আইকন এবং সেরা টুর্নামেন্ট।

সেরা খেলোয়াড় গ্যালারিতে অতীত ও বর্তমানের শীর্ষ দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল খেলোয়াড়দের প্রতিমূর্তি প্রদর্শিত হচ্ছে। ফুটবল ভক্তরা নিজের ইচ্ছেমতো দল নির্বাচন করতে পারে, ইন্টারেক্টিভ ডিসপ্লেতে বানাতে পারে তাদের প্রিয় খেলোয়াড়দের নিয়ে সেরা স্কোয়াড।

এতে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন গেম রয়েছে। ‘গোলাসো’ গেমে যে কেউ ফুটবলে তার কিক করার দক্ষতা পরীক্ষা করতে পারে, মাঠের তৎপরতা পরীক্ষা করার জন্য ‘ফাস্টেস্ট জিঙ্গা’ এবং শার্পশুটিং দক্ষতা পরীক্ষা করার জন্য আছে ‘কনমেবল কর্নার’। 

প্রতিমূর্তি বানানো খেলোয়াড়দের মাতৃভূমি হলো এমনসব দেশ যা দেখামাত্র ফুটবল অনুরাগীরা তাদের অতীত স্মৃতিচারণে ফিরে যাবে। দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসের দুই সেরা খেলোয়াড়কে দেখা যাবে এখানে- ম্যারাডোনা ও পেলে। ভক্তরা চাইলে তাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলতে পারে!

প্রদর্শনীতে প্রথম বিশ্বকাপের ঐতিহাসিক ট্রফিগুলো রয়েছে: জুলে রিমে ট্রফি, তিয়েন্টো ফুটবল, উভয়ই উরুগুয়ে বিশ্বকাপ ১৯৩০ এবং ওবদুলো ভারেলার এঙ্কেল বুট, ব্রাজিল বিশ্বকাপ ১৯৫০। সেরা টুর্নামেন্ট গ্যালারিতে দর্শকরা দক্ষিণ আমেরিকার সেরা টুর্নামেন্টগুলোই যেন আবার দেখতে পাবে। এটিতে ৭×৪ আকারের ফুটবল মাঠ রয়েছে যেখানে সবাই খেলতে পারে।

‘দ্য ট্রি অফ ড্রিমস’ প্রদর্শনী দোহার স্থানীয় সময় সকাল নয়টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা থাকে এবং বিশ্বকাপ চলাকালীন ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।

কিডজ ম্যাগাজিনে বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!