লেকের পাড়ে কৃষ্ণচূড়া গাছে থাকতো দুটি বাচ্চা ভূত। একজনের নাম নাটু আর তার বড় ভাই মাটু।
Published : 23 Jan 2024, 03:49 PM
ঢাকার গুলশানে মনিরা ও মিরা খালামনির বাসা। ওদের বাসার পাশে গুলশান লেক। লেকের পাড়ে কৃষ্ণচূড়া গাছে থাকতো দুটি বাচ্চা ভূত। একজনের নাম নাটু আর তার বড় ভাই মাটু।
ওদের বাবার আনা আঠারো বালতি দুধ আর উনচল্লিশ বাটি মিষ্টি পেট ভরে খেয়ে নাটু আর মাটু সাতান্ন বছর ধরে ঘুমিয়ে ছিলো। আজ খালামনির বাসায় দারুণ খাবার রান্না হচ্ছে। কারণ, আব্দুল্লাহ ভাইয়া কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যাচ্ছে।
রান্না হচ্ছে পোলাও, গরুর মাংস, টিকিয়া, খাসির কোরমা, ইলিশ মাছ ভুনা, রূপচাঁদা মাছ ভাজি, রোস্ট, জর্দা পোলাও আর পায়েস। খালু কয়েক রকমের মিষ্টিও কিনে এনেছে। রান্নার সুন্দর গন্ধে নাটু আর মাটু ভূতের ঘুম ভেঙ্গেছিল।
নাটু মাটুকে বললো, চলো আমরা আব্দুল্লাহদের বাসায় যাই। ভাইয়া যেখানে বসে পড়ছিলো, সেখানকার জানালা দিয়ে ওরা চলে এলো খালামনিদের বাসায়। জানালা দিয়ে নাটু আর মাটু বাসায় ঢুকে সোজা চলে এলো খাবার টেবিলে, যেখানে মিষ্টির বাক্স রাখা আছে।
একটু পর মনিরা খালামনি পায়েসের বাটি ফ্রিজে রাখতে এসেছে। এই সুযোগে নাটু আর মাটু ঢুকে গেল ফ্রিজে।
দুজন ঢুকে গেলো মিষ্টির বাক্সে। যেই না ৩/৪টা মিষ্টি খেয়ে ওরা অন্য মিষ্টির ওপর বসেছে, ঠিক তখনই আব্দুল্লাহ ভাইয়া দুম করে বাক্সটা খুলে ওই মিষ্টিটাই মুখে দিয়ে দিলো। নাটু আর মাটু ভাইয়ার মুখে গিয়ে দাঁতের মাড়িতে শক্ত করে ধরে বসে থাকলো।
তারপর ভাইয়া যেই না পানি খাওয়ার জন্য হা করেছে ওমনি ওরা লাফ দিয়ে বের হয়ে গেল মুখ থেকে। মাটু নাটুকে বললো, চলো আমরা খাবারের কাছে যাই, নাহলে তো আমরা মরেই যাবো! রান্নাঘরের দিকে ওরা দুজন হাত ধরে এগিয়ে যেতেই মিরা খালামনির পায়ের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ফ্রিজের চিপায় ঢুকে গেলো।
ভয়ে ওরা আর বের হচ্ছে না। একটু পর মনিরা খালামনি পায়েসের বাটি ফ্রিজে রাখতে এসেছে। এই সুযোগে নাটু আর মাটু ঢুকে গেল ফ্রিজে। ফ্রিজে গিয়ে গপাগপ করে পায়েস, জর্দা পোলাও আর কেক খেতে লাগলো। যখন খাওয়া শেষ হলো তখন তীব্র ঠান্ডায় ওদের হাত-পা জমে যেতে লাগলো। ততক্ষণে হুশ ফিরলেও আর ফ্রিজ খোলার উপায় নেই।
অনেকক্ষণ হয়ে গেলো। কে যেন ফ্রিজের দরজা খুলতেই লাফিয়ে ফ্রিজ থেকে বেরিয়ে এলো দুই ভাই। ওরা ভাবলো, এবার গরম কিছু খেতে হবে। গপাগপ করে পোলাও, মাছ মাংস খেতে লাগলো ওরা। চুলায় বসানো গরুর মাংসের ঢাকনা তুলতে গিয়েই ও মা গো, ও বাবা গো... বলে চিৎকার শুরু করলো। পাতিল থেকে টগবগে গরম মাংস তুলতে গিয়ে ওদের হাত গেছে পুড়ে।
মানুষের বাড়িতে আর কোনদিন খাবো না, বলে জানালা দিয়ে পালিয়ে গেল দুই পেটুক ভূত।