শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯৬তম জন্মবার্ষিকী
Published : 03 May 2025, 02:14 PM
অবিভক্ত বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুর গ্রামে ১৯২৯ সালের ৩ মে জন্মগ্রহণ করেন এক সাহসী মা, যাকে আমরা 'শহীদ জননী' হিসেবে জানি। তিনি হলেন জাহানারা ইমাম। মুক্তিযুদ্ধে তার প্রথম সন্তান রুমী শহীদ হন, এবং এই শোক তাকে পরিণত করেছিল এক অবিস্মরণীয় সংগ্রামী চরিত্রে।
জাহানারা ইমাম ১৯৪৭ সালে কলকাতার লেডি ব্রেবোন কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএড ও বাংলায় এম এ ডিগ্রি লাভ করেন।
পরবর্তী সময়ে শিক্ষকতা ও লেখালেখির মাধ্যমে তিনি নিজের চিন্তাভাবনা ও আদর্শের প্রকাশ ঘটান। কর্মজীবনে তিনি ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজেও অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৭১ সালে তার বড় সন্তান রুমী মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি নিজেও মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার ও আশ্রয়দান, খবর আদান-প্রদান, অস্ত্র আনা-নেয়াসহ বিভিন্ন কাজে সহায়তা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের একপর্যায়ে রুমী শহিদ হয়। সন্তান হারানোর শোকই যেন শক্তিতে পরিণত হয়েছিল তার জন্য। তাই তো মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশ ও জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে প্রথম সারিতে দেখা গেছে তাকে।
তার লেখা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ ‘একাত্তরের দিনগুলি’ অমর সাহিত্য হিসেবে সমাদৃত হয় সবখানে। এ বইয়ে প্রতিটি সন্তানহারা মায়ের গভীর অনুভূতি উৎসারিত হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে স্বামী ও সন্তানহারা এই লেখক ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
জাহানারা ইমাম জীবদ্দশায় যেমন প্রতিবাদী ছিলেন, মৃত্যুর পরও তার নাম দেশের ইতিহাসে ন্যায়বিচারের প্রতীক হয়ে আছে। মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: ঢাকা।