সব চেষ্টা শেষে আমাকে কোলে করে বাসায় নিয়ে আসা হয়।
Published : 31 Mar 2025, 10:35 AM
ছোটবেলার ঈদ মানেই আনন্দের শেষ নেই। তবে একটা ঈদ ছিল ঘুমিয়ে কাটানোর।
মায়ের কর্মসূত্রে ছোটবেলা থেকেই আমরা নানুবাড়ির আশেপাশে থাকতাম। তাই ঈদের সময় নানাবাড়িতে বেড়ানোর আলাদা কোনো আনন্দ পাইনি। মাঝে মাঝে দাদুবাড়ি যাওয়া হত, কিন্তু দাদু না থাকায় এবং আমার বয়সী কেউ না থাকায় দাদুবাড়ির পরিবেশটা সেভাবে আপন হয়ে উঠেনি।
তবু নানাবাড়িতে ঈদের দিনটা খারাপ কাটত, তা নয়। সারা বছর নানুর সঙ্গে তেমন সময় কাটানো না হলেও ঈদের দিন নানার সঙ্গে গোসল করা, একসঙ্গে ঈদের নামাজে যাওয়া খুবই উপভোগ করতাম।
তবে একবার দাদুবাড়িতে ঈদ করতে গিয়ে এক মজার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হই। তখন আমার বয়স চার কিংবা পাঁচ। ঈদের আগের দিনই আমরা দাদুবাড়ি গিয়েছিলাম।
শহরের কোলাহল আর যান্ত্রিকতা থেকে হঠাৎ করে গ্রামের প্রকৃতিতে মিশে যাওয়াটা অন্যরকম অনুভূতি এনে দিয়েছিল। এসি বা ফ্যান ছাড়াই গ্রামের শীতল বাতাস আমার মন ভালো করে দিচ্ছিল। রাতে ঘুমও ভালো হয়েছিল, যদিও ফ্যানের শব্দ না পেয়ে একটু অস্বস্তি হয়েছিল আমার।
সকালে ঘুম থেকে উঠে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে গেলাম। কিন্তু মসজিদে গিয়ে ফ্যান দেখে যেন মনে হল স্বর্গে চলে এসেছি! নামাজ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।
এমন এক ঘুম দিলাম যেটা শেষই হচ্ছিল না! নামাজ শেষ হলেও কেউ আমাকে ঘুম থেকে জাগাতে পারেনি। সব চেষ্টা শেষে আমাকে কোলে করে বাসায় নিয়ে আসা হয়।
ঘুম ভাঙার পর দেখি আম্মু, দাদি আর ফুপি হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়ছে। আমি তখনও পুরো বিষয়টা বুঝতে পারিনি। মনে হচ্ছিল যেন কিছুই হয়নি।
আজও সেই ঈদের দিনটা মনে পড়লে হাসি পায়। মসজিদে গিয়ে নামাজ না পড়ে ঘুমিয়ে পড়াটা তখন খুব ছোট একটা ঘটনা মনে হলেও, এখন বুঝি এটা আমার জীবনের এক মধুর স্মৃতি হয়ে রয়ে গেছে। সেই ঘুমিয়ে পড়া ঈদের দিনটাই হয়ে উঠেছে আমার শৈশবের অন্যতম আনন্দের দিন।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: বাগেরহাট।