'আমাদের দেশে ৩৫.৩০ ভাগ মেয়ের বাল্যবিবাহ হয় যৌন নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে।'
Published : 11 Feb 2024, 04:17 PM
অভাব-অনটন আর নানান সমস্যায় জর্জরিত হয়ে দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে গ্রাম থেকে ঢাকায় আসেন এক নারী। আশ্রয় নেন তার ভাইয়ের বাড়িতে।
সেখানেই তার গর্ভে আসে তৃতীয় সন্তান। ঘটনাটি আজ থেকে প্রায় ৩৫ বছর আগের। তখন জন্মের আগেই সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় জানা এখনকার মতো সহজ ছিল না। সেই নারী বা তার স্বামী কেউই চাইতেন না তাদের আরও একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হোক।
এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসেন তার ভাই। তিনি আশ্বাস দেন মেয়ে সন্তান হলে তার দায়িত্ব নেবেন। চুক্তি অনুযায়ী মেয়ে সন্তান জন্মানোয় তাকে দত্তক নেন তিনি।
সম্প্রতি বাংলাদেশে ‘ন্যাশনাল গাইড লাইন রিগারডিং প্যারেন্টাল জেন্ডার সিলেক্শন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি নীতিমালা তৈরি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যেখানে বলা হয়েছে গর্ভকালীন সময়ে স্বাস্থসেবা প্রদানকারী কোনো প্রতিষ্ঠান সন্তানের লিঙ্গ প্রকাশ করতে পারবে না।
এই নীতিমালা প্রণয়নের পেছনের উদ্দেশ্যটি সহজেই অনুমেয়। ৩৫ বছর আগে এই নারীর জীবনে যা ঘটেছিল, তা যেন অন্য কোনো নারীর জীবনে না ঘটে।
তাহলে কি এই দীর্ঘ ৩৫ বছরে সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে আমাদের ধ্যান-ধারণা একটুও বদলায়নি? আমরা কি এখনো আটকে আছি সেই পুরোনো চিন্তায়?
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক মেয়ে একটি দৈনিক পত্রিকায় তার ছোটবেলার একটি ঘটনা লিখেছেন, যা এখনো তাকে কষ্ট দেয়।
তিনি তার ঘটনার বর্ণনায় লিখেছেন সাত বছর বয়সে তার এক আত্মীয় মোবাইলে আপত্তিকর ভিডিও দেখিয়েছিল। মা-বাবাকে এই ঘটনাটি বলার পর তারা সেই আত্মীয়কে বাড়িতে আসা বন্ধ করে দেন। কিন্তু সাত বছর বয়সে পাওয়া ভয় ১৫ বছর ধরে আজও তাকে তাড়িয়ে যাচ্ছে।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল পরিচালিত এক সমিক্ষা থেকে জানা যায়, আমাদের দেশে ৩৫.৩০ ভাগ মেয়ের বাল্যবিবাহ হয় এই ধরণের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে।
৩৫ বছর আগের সেই ঘটনা কিংবা ১৫ বছর আগের এই শিক্ষার্থীর ঘটনা পড়লেই আমরা বুঝতে পারি কন্যা শিশুর প্রতি আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন!
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: ঢাকা।