আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন-আইডিএফ এই সম্মাননা দিয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে।
Published : 06 Dec 2022, 09:30 AM
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রথম ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস’ ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন-আইডিএফ।
পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ব ডায়াবেটিস সম্মেলন-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। শেখ হাসিনার পক্ষে পর্তুগালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের নতুন সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেনের কাছ থেকে সম্মাননাপত্র গ্রহণ করেন।
পর্তুগালে বাংলাদেশ মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডায়াবেটিস রোগীদের জীবনমানের উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস’ নামের এই সম্মানসূচক উপাধি দেয় আইডিএফ।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী দুই বছর ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস’ হিসাবে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপনকারী মানুষের মুখপাত্র হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।”
অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় শেখ হাসিনা এ সম্মাননার জন্য আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং সশরীরে উপস্থিত হতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিশুসহ প্রায় ৮৫ লাখ এবং পুরো পৃথিবীতে প্রায় ৪২ কোটি মানুষ ডায়াবেটিস এবং এর প্রভাবে অনান্য জটিলতায় ভুগছেন।
খাদ্যাভাস পরিবর্তন এবং জনসচেতনতার উপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনবান্ধব স্বাস্থ্যনীতির বাস্তবায়ন এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ডায়েবেটিস রোগীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে এবং বিনামূল্যে ইনসুলিন সরবরাহ কার্যক্রমও শুরু করেছে।
ডায়াবেটিসের মত অসংক্রামক রোগকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ হিসাবে চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং এ সংক্রান্ত গবেষণায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর হিসাবে বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও অঙ্গীকার করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপনকারী বিশ্বের সকল মানুষ এবং তাদের শুভানুধ্যায়ীদের পক্ষ থেকে আমি বিশ্বনেতাদের কাছে এখনই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের সবাইকে অবশ্যই অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে এবং যুদ্ধের বদলে আমাদের নাগরিকদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সে সম্পদ ব্যবহার করতে হবে।”
রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘জনকেন্দ্রিক উন্নয়নের একজন প্রবক্তা’ হিসাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রাধিকার দিয়ে মানবোন্নয়নে ‘অভূতপূর্ব উন্নয়ন’ ঘটিয়ে উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি ‘রোল মডেলে’ পরিণত হয়েছে।
শেখ হাসিনা যে বরাবরই স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ গুরুত্ব দেন, সে কথা অনুষ্ঠানে জানাতে গিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা এবং কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় তার বিচক্ষণ নেতৃত্বের কথা বলেন রাষ্ট্রদূত।
পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এমডিজি পুরস্কার, সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড এবং ভ্যাকসিন হিরো অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরষ্কার ও সম্মাননা প্রাপ্তির কথাও তিনি অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।
আইডিএফ এর বিদায়ী সভাপতি অধ্যাপক অ্যান্ড্রু বোল্টনসহ ফেডারেশনের প্রতিনিধি এবং সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। বাংলাদেশ থেকে সম্মেলনে যোগ দেওয়া চিকিৎসক, স্বাস্থ্য খাতের পেশাজীবী, স্বাস্থ্যকর্মী, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং পর্তুগালে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও ছিলেন।