Published : 11 Oct 2023, 09:21 PM
এইডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে রেকর্ড পরিমাণ মৃত্যুকে ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও পীড়াদায়ক’ বলেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তবে ডেঙ্গু মোকাবিলায় বছরের শুরু থেকে প্রস্তুতি ও উদ্যোগের কোনো ঘাটতি ছিল না বলে দাবি করেছেন তিনি।
বুধবার ঢাকায় ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ: তথ্য শেয়ারিং সেশন’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। এই আয়োজনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের শতাধিক কর্মী অংশ নেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ আয়োজিত এই আয়োজনে মন্ত্রী বলেন, “ডেঙ্গু রোগে একটি মৃত্যুও আমাদের কাম্য নয়। কিন্তু আমাদের আর কোনো কিছু করার বাকি রয়েছে কি না, সেই বিষয়গুলো আলোচনা করার জন্যই বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় আমাদের আজকের এ কর্মশালা।
“এখানে উপস্থিত আমরা সবাই কেউ কারো প্রতিপক্ষ নই বরং আমরা একে অপরের অংশীদার। ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে আমাদের অজানা কোন বিষয় যদি থেকে থাকে তা আলোচনা করার জন্যই আজকের এই কর্মশালা।”
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে প্রতিবছর মশাবাহিত বিভিন্ন রোগে পৃথিবীতে প্রতি বছর সাত লাখ মানুষ মারা যায়। ১৯৬৪ সালে প্রথম ডেঙ্গু রোগ বাংলাদেশে আসে। কিন্তু এ রোগের ব্যাপকতা ২০১৯ সালে দেখা যায়।
“অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে এ বছর আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।“
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ভর্তি হয়েছেন ২ লাখ ৩১ হাজার ২০৪ জনে। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ১২২ জন।
এর আগে দেশে কোনো বছর এত বেশি রোগী ও মৃত্যু দেখা যায়নি।
মশা প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও জনগণের অংশগ্রহণই ‘প্রধান বিষয়’ দাবি করে মন্ত্রী বলেন, “মন্ত্রণালয় থেকে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে টিবিসি প্রচারসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে যেখানে এডিস মশার উৎসস্থল বা লার্ভা পাওয়া গেছে সেখানে জরিমানা করা হয়েছে।
“জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সিটি করপোরেশন এবং মন্ত্রণালয় থেকে আমি নিজে মাঠ পরিদর্শন করে জনগণের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেছি।”
বছরের প্রথম থেকেই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনগুলোর মশা মারার পর্যাপ্ত ওষুধ, যন্ত্রপাতি এবং লোকবল রয়েছে কি না সে বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে যথাযথ সহযোগিতা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “এখন জনসম্পৃক্ততা যত বাড়ানো যাবে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা যত শক্তিশালী হবে, ততই এডিস মশার প্রজনন স্থল ও ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ হ্রাস পাবে।”
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশন অফিসার ইফাত মাহমুদ।
উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুল্লায়ে সেক, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মলয় চৌধুরী, যুগ্ম সচিব ফারজানা মান্নান।