তিন এলাকা থেকে রোগী এসেছে বেশি।
Published : 11 Jun 2024, 10:26 PM
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিনে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব; গত ১২ দিনে শুধু আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৩ হাজারের বেশি রোগী।
মঙ্গলবার ঢাকার ডায়রিয়া ও কলেরার বিশেষায়িত এ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ঘন্টায় অন্তত ৩০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন সেখানে।
তাদের মধ্যে বাড্ডা এলাকার তিন বছর এক মাস বয়সী শিশু রুমানা ইসলামকে এদিন দুপুরে সেখানে নিয়ে আসেন তার মা নাজমা আক্তার।
নাজমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিনদিন ধরে বাচ্চার পেট খারাপ। তার পাতলা পায়খানা খুব বেশি না, এজন্য হাসপাতালে আনি নাই। কিন্তু খুব ঘনঘন বমি করছে, আর কিছুই খেতে চায় না। এজন্যই নিয়ে আসছি।”
মিরপুর-১২ নম্বর থেকে সোমবার সন্ধ্যায় আইসিডিডিআর,বিতে আনা হয় এক বছর পাঁচ মাস বয়সী আবদুল আহাদ নামে আরেক শিশুকে।
তার মা বলেন, “প্রথমে বমি করত। বমি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তার জ্বর ওঠে। সন্ধ্যা থেকে পাতলা পায়খানা শুরু হয়, পাশপাশি বমিও হচ্ছিল। এজন্য হাসপাতালে নিয়ে আসছি। এখন অবস্থা কিছুটা ভালো।”
জুরাইন গ্যাস পাইপ এলাকার পঞ্চাশোর্ধ বয়সী এরশাদ হোসেনেরও পেট খারাপ চার দিন ধরে। তিনিও এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
“শুক্রবার রাত তিনটার পাতলা পায়খানা আর বমি শুরু হইছে। এলাকার এক ফার্মেসি থাইকা ওষুধ খাইছিলাম। কমে আবার বাড়ে। শরীর খুব বেশি খারাপ হওয়ায় কাল আইসা ভর্তি হইছি। এখনও পেট নামতেই আছে।”
গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে আসা মো. মিঠুন বলেন, “গত ১৫ দিন ধরেই আমার পেট খারাপ। ডাক্তার দেখাইয়া ওষুধ খাইছিলাম। ভালো হয়, আবার পেট খারাপ করে। গতকাল থেকে আবার পাতলা পায়খানা শুরু হইছে। শরীর বেশি খারাপ হওয়ায় এইখানে চলে আসছি।”
আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের প্রধান ডা. বাহারুল আলম সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২৯ মে থেকে রোগী বাড়ছিল। পুরো ঢাকা থেকেই রোগী এসেছে। তাদের মধ্যে বাড্ডা, কাফরুল ও মিরপুরের রোগী বেশি ছিল। কী কারণে ওইসব এলাকা থেকে রোগী বেশি এসেছে সেটা এখনই বলা যাবে না। এটা গবেষণার ব্যাপার।”
এ হাসপাতালের তথ্যে দেখা গেছে, ২৮ মের পর থেকে মঙ্গলবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫৩১ জন রোগী ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছে। ২৮ মে ৫১৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল কলেরা হাসপাতালে। পরদিন থেকেই রোগী বাড়তে থাকে। এরমধ্যে ১ জুন সবচেয়ে বেশি ১৩৩০ জন রোগী আসে এই হাসপাতালে। পরের চার দিনও তা ছিল হাজারের বেশি।
দৈনিক ভর্তি রোগীর সংখ্যা হাজারের নিচে নামতে শুরু করে ৬ জুন থেকে; ওইদিন ভর্তি হয় ৯০২ জন রোগী। এর পরের তিন সাত শতাধিক এবং ১০ জুন ৬৬০ জন রোগী ভর্তি হয়। মঙ্গলবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৪৫৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে আইসিডিডিআর,বিতে।