“আমরা শুধু একটা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নমুনা পরীক্ষা করছি। তার মানে আমাদের এখানে আরও কেইস আছে।”
Published : 04 Mar 2025, 12:56 AM
দেশে প্রথমবারের মত জিকা ভাইরাসের ‘ক্লাস্টার’ শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি।
২০২৩ সালে আইসিডিডিআর,বির বিজ্ঞানীদের করা এক গবেষণায় জিকা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ওই পরীক্ষার ফলাফলের ওপর একটি নিবন্ধ সোমবার আইসিডিডিআরবির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, ২০২৩ সালে ১৫২ জন রোগীর নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। জ্বরের পাশাপাশি তাদের ভাইরাসের অন্যান্য লক্ষণ ছিল। তাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষের মধ্যে জিকার সংক্রমণ ধরা পড়ে, যারা সবাই ঢাকার মহাখালী এলাকার বাসিন্দা।
পাঁচজন রোগী শনাক্ত হওয়াকে ‘ক্লাস্টার’ বলার ব্যাখ্যায় গবেষণা দলের প্রধান শফিউল আলম সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আক্রান্ত এই পাঁচজন ঢাকার মহাখালী এলাকার বাসিন্দা। তারা সবাই এক কিলোমিটার রেডিয়াসের মধ্যে বসবাস করেন। শনাক্ত হওয়ার আগে দুই বছরের মধ্যে তাদের বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই। এজন্যই এটাকে ক্লাস্টার বলা হচ্ছে। মানে হচ্ছে তারা স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন।”
জিকা ভাইরাস এইডিস মশাবাহিত রোগ। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মত জিকাও ছড়ায় দুই ধরনের এইডিস মশার মাধ্যমে।
জিকার লক্ষণ
>> প্রতি পাঁচজন রোগীর মধ্যে একজনের মধ্যে হালকা জ্বর, চোখে লাল হওয়া বা কালশিটে দাগ পড়া, মাথা ব্যথা, হাড়ের গিঁটে ব্যথা ও চর্মরোগের লক্ষণ দেখা যায়।
>> বিরল ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি গিলিয়ান-ব্যারি সিনড্রোমেও ভুগতে পারেন; এর ফলে সাময়িক পক্ষাঘাত কিংবা ‘নার্ভাস সিস্টেম ডিজঅর্ডারের’ মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
>> এ ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক বা ওষুধ নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম ও বেশি করে তরল খাবার খেতে পরামর্শ দেয়া হয়।
শফিউল আলম বলেন, তারা একটা নির্দিষ্ট এলাকায় কয়েকজন রোগী পেয়েছেন। এটা স্থানীয় সংক্রমণ ইঙ্গিত করে।
“এতটুকু সংকীর্ণ জায়গায় যদি এতগুলো কেইস হয়, তার মানে এই সংক্রমণটা চলছে, কিন্তু আমরা জানি নিা। আমরা শুধু একটা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নমুনা পরীক্ষা করছি। তার মানে আমাদের এখানে আরও কেইস আছে।”
দেশে জিকা ভাইরাস আক্রান্ত আরও রোগী পাওয়ার আশঙ্কার কথা বলেছেন শফিউল আলম। তিনি বলেন, “আমাদের দেশের রোগীদের লক্ষণ-উপসর্গ ডেঙ্গু আক্রান্তদের মত। এ কারণে কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না।
“কিন্তু এটা বাড়তে পারে। এই ভাইরাস সংক্রমিত হলে জিবিএস (Guillain-Barré syndrome) আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। আমাদের এখানে এখনও গর্ভবতী নারী সংক্রমিত হওয়ার তথ্য মেলেনি। কিন্তু হলে ব্রাজিলে যেমন হয়েছিল, মাইক্রোসেফালি, বাচ্চাদের ব্রেইন মাথা ছোট হয়, ব্রেইন ঠিকমতো ডেভেলপ হয় না, সেরকম হতে পারে।”
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জিকা ভাইরাস আক্রান্ত ১১ জন রোগী পাওয়ার কথা জানায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর।
পুরনো খবর
দেশে জিকা ভাইরাসের ১১, চিকুনগুনিয়ার ৬৭ রোগী শনাক্ত
জিকা ভাইরাস: এ বছর ঢাকায় ৮ রোগী শনাক্ত
জিকার সঙ্গে মাইক্রোসেফালির যোগ স্পষ্ট হল গবেষণায়