বিশ্ব হার্ট দিবসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া চূড়ান্তের তাগিদ

বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যান, যার ২৪ শতাংশের কারণ তামাক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2022, 05:17 AM
Updated : 29 Sept 2022, 05:17 AM

হৃদরোগের ঝুঁকি কমতে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন’ শক্তিশালী করতে এর খসড়া চূড়ান্ত করার তাগিদ এসেছে বিশ্ব হার্ট দিবসে।

এ বিষয়ে তামাক কোম্পানির অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা।  

‘ইউজ হার্ট ফর এভরি হার্ট’ প্রতিপাদ্যে বৃহস্পতিবার  সারা দেশে দিবসটি পালন করা হচ্ছে নানা আয়োজনে। হৃদরোগ নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে বিশ্বজুড়ে এ দিবস পালনের সূচনা হয় ২০০০ সালে।

প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তামাক আইন সংশোধনে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ অত্যন্ত সময়োপযোগী।

তিনি বলেন, “তামাক কোম্পানির অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে আইনের খসড়াটি দ্রুত চূড়ান্ত করা উচিত। সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত করতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করছে তামাক কোম্পানিগুলো।”

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে উদ্ধৃত করে প্রজ্ঞা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, তামাক ব্যবহারজনিত অসুখে হৃদরোগ পরিস্থিতি আরো উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। প্রতিবছর বিশ্বে ১৯ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে তামাক ব্যবহারজনিত হৃদরোগে।

প্রজ্ঞার দেওয়ার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যান, যার ২৪ শতাংশের কারণ তামাক।

গ্লোবাল বারডেন অফ ডিজিজ স্টাডি (জিবিডি) ২০১৯ এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক।

বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত অসুখে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যান এবং বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লাখ) তামাক ব্যবহার করছেন, যা হৃদরোগ পরিস্থিতিকে আরো উদ্বেগজনক করে তুলছে।

প্রজ্ঞা জানায়, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীতে সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা; বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে।

এছাড়া সব ধরনের খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ এ ধরনের সব পণ্য উৎপাদন, আমদানি ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট বা মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করাসহ বেশ কিছু প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা আইনের সংশোধনীতে।

ইতোমধ্যে আইন সংশোধনের খসড়া ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে অংশীজনের মতামত নেওয়া হয়েছে।