থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্তদের তথ্য কেন এনআইডিতে নয়, হাই কোর্টের রুল

থ্যালেসেমিয়া রোগের বাহক নির্ণয়ের বিষয়ে সরকারকে নীতিমালা করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2022, 12:12 PM
Updated : 7 August 2022, 12:12 PM

কেউ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হলে সেই তথ্য কেন তার জাতীয় পরিচয়পত্রে যুক্ত করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।

সেই সঙ্গে থ্যালেসেমিয়া রোগের বাহক নির্ণয়ের বিষয়ে সরকারকে নীতিমালা করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রুল জারি করে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, নির্বাচন কমিশন, স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতিকে চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।

আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, থ্যালাসেমিয়া বংশগত ও রক্ত সম্পর্কিত রোগ। দেশের ৭ শতাংশ মানুষ, অর্থাৎ দেড় কোটি লোক থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত।

“একজন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীকে বাঁচিয়ে রাখতে মাসে পাঁচ থেকে ছয় বার রক্ত দিতে হয়। এটা নিরাময়যোগ্য রোগ নয়। বংশানুক্রমে এই রোগ বৃদ্ধি পায়।”

জিনগত ত্রুটির কারণে থ্যালাসেমিয়া হয়, অর্থাৎ এটি বংশগত রোগ। এ রোগ হলে শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরির প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়। ফলে লোহিত রক্তকণিকা সময়ের আগেই ভেঙে যায়, দেখা দেয় রক্তশূন্যতা।

থ্যালাসেমিয়া ছোঁয়াচে কোনো রোগ নয়, রক্তের ক্যানসারও নয়। এর সহজ কোনো চিকিৎসা এখনও নেই।

থ্যালাসেমিয়া হলে শরীরে আয়রনের মাত্রা বেড়ে যায়, ফলে কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তবে শরীরে রক্তের চাহিদা পূরণ করে এবং খাবার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শরীরে আয়রনের মাত্রা কমিয়ে রেখে রোগীকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখা যায়।

এর আগে গত ২৫ মে থ্যালাসেমিয়া বাহক নির্ণয় এবং সেই তথ্য এনআইডি কার্ডে যুক্ত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।

ওই নোটিসে বলা হয়, একজন থ্যালাসেমিয়া বাহক যদি আরেকজন থ্যালাসেমিয়া বাহককে বিয়ে করেন, তাহলে তাদের সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তবে একজন সুস্থ মানুষ আরেকজন থ্যালাসেমিয়া বাহককে বিয়ে করলে ঝুঁকি ততটা থাকে না।

ওই নোটিসের বিষয়ে সরকারের কোনো সাড়া না পেয়ে ৩১ মে এ বিষয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন এ আইনজীবী। তার ওপর শুনানি নিয়ে রোববার রুল দিল আদালত।