মৈমনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন রুবাইয়াৎ আহমেদ।
Published : 16 Jul 2023, 09:40 PM
ঢাকার জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ প্রযোজিত নাটক ‘কাজলরেখা'।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে নাটকটি মঞ্চস্থ হবে।
মৈমনসিংহ গীতিকার সংকলন কাজলরেখা অবলম্বনে নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন রুবাইয়াৎ আহমেদ।
মঞ্চে অভিনয় করবেন- জীবন, জ্যোতি, অর্ণব, ইন্দ্রানী, কুমু, লগ্ন, মনিকা, তানিয়া, সেলিম, আমিন, সাদমান, আবুযর, স্নেহাশীষ, অদিতি, হিমা, নিলয়, ধ্রুব, মিশর, রকি, উজ্জ্বল, লাপোল, তৃষ্ণা ও কেয়া।
নাটকটির অভিনয় প্রশিক্ষক ফাহিম মালেক ইভান। পোশাক পরিকল্পনায় আছেন খায়েরুজ্জামান মিতু। কোরিওগ্রাফি করেছেন ইন্দ্রানী দেবনাথ, মামিন্তি হাসান কুমু। সেট-প্রপস আকাশ সরকার। আলোক পরিকল্পনায় আছেন রাসেল ইসলাম।
নাটকের কাহিনী এমন- ভাটিয়াল মুলুকের সওদাগর ধনেশ্বর জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত হয়। তাতে অনিশ্চয়তায় পড়ে দুই সন্তান রত্নেশ্বর ও কাজলরেখার জীবন। আর্থিক অবস্থা পরিবর্তনের জন্য শুকপাখির পরামর্শে ধনেশ্বর আংটি বিক্রি করে ব্যবসায় নামে।
ব্যবসাপাতি করে ফের অর্থশালী হন ধনেশ্বর। এরপর মেয়ে কাজলরেখার বিয়ের জন্য শুকপাখির পরামর্শ চান ধনেশ্বর। মনসা দেবীর অভিশাপে জীবন্মৃত বনবাসী সুঁচরাজার সঙ্গে মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেয় ওই পাখি। এ পরামর্শকে ‘ভাগ্যের লিখন’ ভেবে মেয়েকে বনবাসে দিয়ে আসেন ধনেশ্বর।
শরীরে সুঁচবিদ্ধ অর্ধমৃত এক রাজকুমারকে বাঁচাতে বনবাসে দিন কাটে সওদাগরকন্যা কাজলরেখার। নিয়তি নির্ধারিত এই সুঁচরাজাই স্বামী ছিল তার। দীর্ঘদিন বহু কষ্ট সহ্য করে স্বামীকে সারিয়ে তোলেন তিনি। তবে সুস্থ হয়ে রাজা সেই স্ত্রীকেই মনে করে দাসী। স্বামীর প্রাসাদে ফিরে দাসী হয়েই থাকেন তিনি; কারণ শুকপাখি ছাড়া নিজে পরিচয় প্রকাশ করলে মারা যাবেন সূঁচরাজা।
এ কারণে অশেষ কষ্ট ভোগ করেও নিজের পরিচয় গোপন রাখেন কাজলরেখা। তারপর নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাবার বাড়িতে আসেন কাজলরেখা। সেখানে শুকপাখি তার পরিচয় জনসম্মুখে প্রকাশ করে। অবশেষে গাঁটছড়া বাঁধেন সূঁচরাজা ও কাজলরেখা।
নাট্যকার ও নির্দেশক রুবাইয়াৎ আহমেদ বলেন, "ধৈর্য আর সহনশীলতার অতুলনীয় দৃষ্টান্ত কাজলরেখা। দীনেশচন্দ্র সেনের মৈমনসিংহ গীতিকায় এই আখ্যানে মানুষের অপরাজেয় মানসিকতার খোঁজ মেলে। মূলত নেত্রকোণা-কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত অঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছে কাজলরেখা। মানুষ, প্রাণী, প্রকৃতি, প্রবৃত্তি, ধর্ম, দৈব- সব একাকার হয়ে মিশে গিয়েছে এই অনুপম কাব্যে। সহজ-সরল ভাষায় কাহিনি এগিয়েছে মানুষের কল্পনাকে নিশানা করে।”
তবে নাট্যরূপ দিতে গিয়ে কাজলরেখাকে পুনর্লিখন করতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সেই যাত্রায় অবগাহন করতে করতে একসময় দেখা গেল সংকলিত কাজলরেখার কাহিনি ছাড়া আর কিছু তাতে অবশিষ্ট নাই। অর্থাৎ এটি গ্রহণ করেছে নতুন নাটকের রূপ। তবে তা ঐতিহ্যআশ্রিত এবং অতি অবশ্যই বর্ণনাত্মক নাট্য আঙ্গিককে মান্য করে সৃজিত।”