এই অভিনেত্রীর কোনো সিনেমা এখনও মুক্তি না পেলেও আধা ডজন সিনেমায় নায়িকা হয়ে গেছেন।
Published : 14 Dec 2022, 11:35 PM
কাজী হায়াতের ৫১তম ছবি ‘জয় বাংলা’ দিয়ে অভিষেক ঘটছে অভিনেত্রী জাহারা মিতুর; সিনেমাটি শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে।
২০১৯ সালে শাকিব খানের সঙ্গে ‘আগুন’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে চলচ্চিত্রাঙ্গনে পা রাখেন মিতু, তবে মহামারীসহ নানা কারণে এখন পর্যন্ত তার কোনো সিনেমা মুক্তি পায়নি। ফলে আধা ডজন সিনেমায় অভিনয় করে ফেললেও তার মুক্তি পাওয়া প্রথম সিনেমা হবে ‘জয় বাংলা’।
এ নিয়ে মিতুর কণ্ঠে শোনা গেল উচ্ছ্বাস। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বললেন, “অবশেষে আমার সিনেমা বড় পর্দায় মুক্তি পাচ্ছে। দর্শক আমার অভিনয়-দক্ষতা কেমন, তা দেখতে পাবে। এজন্য বেশ ভালোই লাগছে।
“তাছাড়া এতদিন প্রযোজক-পরিচালকরা অন্যদের মুখে শুনে আমাকে তাদের চলচ্চিত্রের কাস্ট করেছেন। এখন অন্তত আমার অভিনয় দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আমার উপর আস্থা রাখার জায়গা পাবেন।”
‘জয় বাংলা’ নিয়ে তিনি বলেন, তার চরিত্রের নাম দোলা। এই সিনেমায় তার চরিত্র গ্ল্যামার সর্বস্ব নয়।
“মেকআপ ছাড়া নন-গ্ল্যামারাস একটি চরিত্র নিয়ে পর্দায় আসছি। ফলে প্রথম ছবিতে শুধু গ্ল্যামার দিয়েই মূল্যায়ন করার সুযোগ কমে গেল। আমার অভিনয় দিয়েও মূল্যায়ন করতে পারবেন সবাই।”
শারীরিক অসুস্থতার জন্য প্রচারে খুব বেশি সময় দিতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যতটুকু সম্ভব’ প্রচারের চেষ্টা করছেন।
পরিবারের সঙ্গে সিনেমাটা দেখবেন জানিয়ে মিতু বলেন, সিনেমার প্রচারে শিল্পী-কলাকুশলীদের সঙ্গে প্রথম কয়েকদিন বিভিন্ন হলে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে।”
এ বিষয়ে মিতু আরও বলেন, তার অভিনয়ের মধ্য দিয়ে যেমন একজন নায়িকা পেল তেমনি কয়েকজন দর্শকও পাওয়া যাবে।
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “আমার মা শাবনূর-রিয়াজদের সময়ে হলে গিয়ে সিনেমা দেখতেন। তারপর আর দেখেননি। এখন আম্মু আমার সঙ্গে সিনেমা হলে যান। আমার ছোটবোন খুবই খুশি। সে হলে গিয়ে আমার সিনেমা দেখবে। আমার দুই বোন এখন পর্যন্ত হলে যায়নি। ওদের ইচ্ছা, আমার ছবির মাধ্যমেই তারা হলে যাবে।”
কাজী হায়াতের পরিচালনায় প্রথম সিনেমা মুক্তি পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার মন্তব্য করে মিতু বলেন, “শৈশব থেকে কাজী হায়াতের নাম শুনে আসছি। তাকে স্টার পরিচালক বলা হয়। তার সিনেমায় নায়ক-নায়িকা কে তা দেখে না দর্শক। তার নামেই সিনেমা চলে। আমার সাথে সারা জীবনের জন্য কাজী হায়াতের নাম জড়িয়ে গেছে। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।”
এদিকে ‘জয় বাংলা’র ‘ট্রেইলার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে; এ নিয়ে মিতু বলেন, “সিনেমার ট্রেইলার নিয়ে আমি নিজেও খুব বেশি সন্তুষ্ট না। কাজী হায়াতের সিনেমা নিয়ে দর্শকের অনেক প্রত্যাশা থাকে। তার আগের ৫০টা ছবির সঙ্গে এটা মেলালে হতাশ হওয়া স্বাভাবিক।
“তবে নাচ-গানে ভরপুর কোনো সিনেমার সঙ্গ জয় বাংলাকে মেলানো উচিত হবে না। এটা কাজী হায়াতের সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার একটি কাজ। ১৯৫৮-১৯৭১ সালের পটভূমিতে নির্মিত ঐতিহাসিক সিনেমা এটি।”
তিনি বলেন, বিষয়টাকে রঙচঙ মেখে উপস্থাপনের সুযোগ নেই। প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতেই এই সিনেমা। যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে চান, সন্তানদের জানাতে চান তারা পরিবারসহ জয় বাংলা দেখতে পারেন। কারণ, এই সিনেমায় ইতিহাসকে পরিপূর্ণভাবে তুলে ধরা হয়েছে।”
দর্শকদের উদ্দেশে মিতু বলেন, “বাণিজ্যিক সিনেমায় আমরা যে বিনোদন পাই, সেই বিনোদন নেওয়ার উদ্দেশে কেউ ‘জয় বাংলা’ দেখলে ভুল করবেন।”
অধ্যাপক মুনতাসির মামুনের কিশোর উপন্যাস ‘জয় বাংলা’ অবলম্বনে একই নামে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। মুক্তিযুদ্ধের গল্পের চলচ্চিত্র টুঙ্গিপাড়া চলচ্চিত্রের ব্যানারে মিটু শিকদার প্রযোজনা করেছেন।
২০২০-২১ অর্থবছরে ৬৫ লাখ টাকা অনুদান পায় ‘জয় বাংলা’। সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা বাপ্পি চৌধুরী।