গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে মাদক সরবরাহকারী অনেকের সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশিদ বলেছেন, নোবেল যাদের যাদের কাছ থেকে মাদকে পেতেন, তাদের ধরতে নামছেন তারা।
এদের মধ্যে কোনো শিল্পী রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি, তবে তাদের নাম প্রকাশ করেননি।
পুলিশ কর্মকর্তা হারুন আরও বলেছেন, নোবেল মাতাল হয়ে নানা কাণ্ড ঘটানোর জন্য এখন অনুতপ্ত।
২০১৯ সালে ভারতের জি-বাংলা টিভির রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’তে অংশ নিয়ে তৃতীয় হয়ে আলোচনায় উঠে আসেন নোবেল।
তবে জনপ্রিয়তার সঙ্গে নানা কর্মকাণ্ডে বিতর্কও সঙ্গী হয়ে ওঠে উঠতি এই গায়কের। এর মধ্যে তার স্ত্রীও তার মাদকাসক্তির কথা প্রকাশ করেন।
শরীয়তপুরের একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে অর্থ নিয়েও না যাওয়ায় গত শুক্রবার ঢাকার মতিঝিল থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয় নোবেলের বিরুদ্ধে।
সেই মামলায় শনিবার নোবেলকে গ্রেপ্তার করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের মাধ্যমে একদিনের হেফাজতে নেয় গোয়েন্দা পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদের পর রোববার গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সঙ্গদোষে মাদকাসক্ত হয়েছেন নোবেল। তবে এখন তা ছেড়ে দিতে চান।
তিনি বলেন, “কার কার মাধ্যমে মাদকাসক্ত হয়েছেন, এটাও তিনি বলেছেন। এই মাদকাসক্ত হওয়ার কারণেই তিনি কোনো প্রোগ্রাম রাখতে পারেন না। আর প্রোগ্রামে গেলে মাতাল হয়ে যান। এটা তিনি স্বীকার করেছেন।”
সম্প্রতি নোবেল কুড়িগ্রামে এক অনুষ্ঠানে গাইতে গিয়ে মঞ্চে অসংলগ্ন আচরণ করে শ্রোতা-দর্শকদের রোষের মুখে পড়েছিলেন।
নোবেলকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার তার সাবেক স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, মাদকাসক্তিই তার সাবেক স্বামীর মূল সমস্যা।
“কোনো একটা চক্রের মধ্যে পড়ে সে নেশাটা শুরু করে। এরপর সে প্রচণ্ড মাদকাসক্ত হয়ে যায়। এরপর তার ব্যবহারে চেইঞ্জ আসে এবং সে অন্য একটা অন্য মানুষে পরিণত হয়।”
নোবেলের আশপাশে থাকা একটি চক্র তাকে মাদক সরবরাহ করছে বলে দাবি করেন সালসাবিল।
কারা মাদক সরবরাহ করে থাকে, তাদের নাম নোবেল বলেছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন।
তিনি বলেন, “নাম বলেছে, কিন্তু এগুলো বলতে চাচ্ছি না। তার মতো শিল্পী, তার অনেক এজেন্ট আছে, নিজেও সংগ্রহ করেন মাদক। শিল্পী অনেক আছেন, তাদের ব্যাপারেও অভিযান চালান হবে। আইনগত ব্যবস্থা নেব।”
নোবেলের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে, সে সবই জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন বলে জানান হারুন।
“টাকা নিয়ে প্রোগ্রাম না করা, স্ত্রীকে মারধর করে বের করে দেওয়াসহ সব অপরাধ স্বীকার করে নোবেল এখন অনুতপ্ত।”
মাদক থেকে সরে আসতে নোবেল কয়েক মাস সময় চেয়েছেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা হারুন।
তিনি বলেন, “পারিবারিক অনেক সমস্যা আছে আর এসব কাজ করা তার ঠিক হয়নি বলে দোষ স্বীকার করে সুন্দরভাবে পরিবারের সাথে থাকার আকুতি জানিয়েছে নোবেল।
“দুই পরিবার বসে সমঝোতার চেষ্টা করছে। ভবিষ্যতে যেন পরিবারে কোনো অশান্তি না হয়, পাশাপাশি মানুষের সাথে যে প্রতিশ্রুতি দেয়, সেটা যেন রক্ষা করতে পারে, সে ব্যাপারে চেষ্টা করবে বলে আমাদের কথা দিয়েছে।”