হামলার ‘নির্দেশনা দেওয়ায় ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করায়’ অভিনেতা জয় চৌধুরীর কোনো খবর প্রচার না করারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
Published : 25 Apr 2024, 04:48 PM
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ অনুষ্ঠানে শিল্পীদের হাতে সংবাদকর্মীদের প্রহৃত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে ২৩ এপ্রিলকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিনোদন সাংবাদিকরা।
হামলার ‘নির্দেশনা দেওয়ায় ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করায়’ অভিনেতা জয় চৌধুরীর কোনো খবর প্রচার না করারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
এছাড়া সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় শিবা শানু, সুশান্ত ও জামানকে এক মাসের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করেছে শিল্পী সমিতি।
বুধবার রাতে এফডিসিতে সাংবাদিক ও শিল্পী সমিতির ১০ জন প্রতিনিধির এক বৈঠকের পর এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বৈঠকে ছিলেন লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকীর, বুলবুল আহমেদ জয়, আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে ছিলেন মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানা-শাহ, রুবেল ও রত্না। এছাড়া সাংবাদিক রিমন মাহফুজ ও কামরুজ্জামান বাবুসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন প্রযোজক আরশাদ আদনান।
বৈঠক শেষে সিদ্ধান্তগুলোর ঘোষণা দেন লিমন আহমেদ। গ্লিটজকে তিনি বলেন, “শিল্পী সমিতি থেকে শিবা শানু, সুশান্ত ও জামানকে এক মাসের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করেছে শিল্পী সমিতি। আর জয় চৌধুরীকে সাংবাদিকেরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে এই মর্মে যে, জয় চৌধুরীকে নিয়ে পরিচলাক, প্রযোজক যে কেউ তাকে নিয়ে কাজ করলে সেই প্রচারে সাংবাদিকরা থাকবে না।
“এটা পরিচালক, প্রযোজক সমিতিতে লিখিত আকারে পাঠানো হবে। বৈঠকে জয় চৌধুরী ক্ষমা চাইতে এসে পুনরায় তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় জয়ের ব্যাপার সাংবাদিকরা সরাসরি সিদ্ধান্ত নেয়, শিল্পী সমিতির হাতে দেয়নি। এছাড়া ২৩ এপ্রিলকে চলচ্চিত্রের ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
লিমন আহমেদ বলেন, “সাংবাদিকদের চিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রাংশের ক্ষতিপূরণ দেবে শিল্পী সমিতি। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ বিষয়গুলো শিল্পী সমিতি থেকে আমাদের লিখিতভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তখন আমরা একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেব।”
গত মঙ্গলবার শপথ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরপরই সন্ধ্যায় সাংবাদিক ও ইউটিউবারদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান নবনির্বাচিত কমিটির দুজনসহ শিল্পী সমিতির অনেকে।
শিল্পী সমিতির কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কিছু সাংবাদিক ও ইউটিউবারের তর্ক পরে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এ সময় চেয়ার ছোড়ার ঘটনাও ঘটে।
এ সময় দৈনিক খবরের কাগজের বিনোদন প্রতিবেদক মিঠুন আল মামুন, বাংলাভিশনের ক্যামেরাপারসনসহ ১০ জনের মত সংবাদকর্মী ও ইউটিউবার আহত হন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি সেখান থেকে চলে আসার পর শুনেছি, সাংবাদিকদের মারধর করা হয়েছে।
“নির্বাচনে বিজয়ী হতে না হতেই যদি এই অবস্থা হয়, সেটা খুবই লজ্জাজনক এবং দুঃখজনক। অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনার জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে লজ্জিত। এটা শিল্পীদের আচরণ হতে পারে না।”
অভিনেতা কাজী হায়াৎ বলেন, "আমার সামনে এই মারামারি হয়নি। পরে শুনেছি, মারামারি হয়েছে। আমি নিজ থেকে আর জানার চেষ্টা করিনি। এখন এসবে আর জড়াতেও ভালো লাগে না। আমি জানার কোনো প্রচেষ্টাও নেয়নি।"
ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি’ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে মারামারির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক ডিপজল।
এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন সাংবাদিকরা বুধবার দুপুরে সুবিচারের দাবিতে এফডিসির মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন। ডিআরইউ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, মাল্টিমিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাচসাসসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা সংহতি সেখানে জানিয়ে বক্তব্য দেন।