অভিনেত্রী শ্যারন স্টোনের সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা কোনটি- এই প্রশ্নের উত্তর স্বাভাবিকভাবেই আসবে বেসিক ইন্সটিংক্ট। অথচ এই সিনেমার জন্যই জীবনে বড় ছাড় দিতে হয়েছে এই বলিউড তারকাকে।
১৯৯২ সালের সিনেমার জন্য ২০০৪ সালে সন্তানের অভিভাবকত্ব হারাতে হয়েছিল বলে সম্প্রতি একটি পডকাস্টে তিনি জানিয়েছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, ৬৫ বছর পেরিয়ে আসা শ্যারন স্টোন মনে করছেন, যৌনতানির্ভর ওই সিনেমায় অভিনয় তাকে নিয়ে অনেকের মনে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে দিয়েছিল।
সাবেক স্বামী রন ব্রনস্টেইনের সঙ্গে ২০০০ সালে ছেলে রোয়ানকে দত্তক নিয়েছিলেন স্টোন। ২০০৪ সালে তাদের বিচ্ছেদের সময় সন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়ে আইনি লড়াইয়ে নেমেছিলেন দুজন। তবে বিচারক মায়ের পরিবর্তে ব্রনস্টেইনকে সন্তানের অভিভাবকত্ব দেন।
সে সময় বিচারক চার বছরের ওই ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “তুমি কি জানো, তোমার মা যৌনতানির্ভর সিনেমায় অভিনয় করেন?”
সন্তানের অভিভাবকত্ব হারিয়ে শারিরীকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন স্টোন। পডকাস্টে অভিনেত্রী বলেন, “সেসময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মায়ো ক্লিনিকে ভর্তি হতে হয়েছিল। ছেলেকে হারিয়ে পুরোপুরিই ভেঙে পড়েছিলাম।
“আপনারা হয়ত আমার ১৬ সেকেন্ডের একটি নগ্ন দৃশ্য দেখেছিলেন। অথচ সেজন্য সন্তানের অভিভাবকত্ব হারাতে হয় আমাকে।”
তিন দশক আগের সেই সিনেমায় হলিউডে ঝড় তুলেছিলেন শ্যারন স্টোন। সিনেমাটিতে ক্যাথরিন ট্রামেলের ভূমিকায় তার অভিনয় ছিল আলোচিত।
এই সিনেমা করতে রাজি ছিলেন না হলিউডের বেশিরভাগ অভিনেত্রী, কারণ চরিত্রটির প্রয়োজনে বেশ খোলামেলা হতে হত। মোট ১৩ জন অভিনেত্রীর হাত ঘুরে চরিত্রটি আসে শ্যারন স্টোনের কাছে।
এই ইরোটিক থ্রিলারে একজন লেখকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন স্টোন, যার বিরুদ্ধে এক সংগীত শিল্পীকে খুনের অভিযোগ ওঠে আসে। সেই খুনের রহস্য সমাধানের দায়িত্বে ছিলেন অভিনেতা মাইকেল ডগলাস। তার সঙ্গেই শ্যারনের কিছু দৃশ্য ছিল বেশ খোলামেলা।
পল ভেরহোভেন পরিচালিত সিনেমাটিতে অভিনয়ের জন্য গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডে জন্য মনোনীত হয়েছিলেন স্টোন। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে যাওয়ার পর তার নাম ডাকলে এক দল হাসতে শুরু করেছিল।
সেই অভিজ্ঞতা স্মরণ করে শ্যারন স্টোন বলেন, “আমি খুব অপমানিত বোধ করেছিলাম। কার কি ধারণা আছে, ওই দৃশ্যে অভিনয় করাটা কতটা কঠিন ছিল? কতটা যন্ত্রণাময়, কতটা ভীতিকর!”
সিনেমার চরিত্রের সঙ্গে অভিনেত্রীদের বাস্তব জীবন মেলানো উচিৎ নয় মনে করলেও এখন সচেতনভাবেই যৌনতা প্রধান সিনেমা এড়িয়ে চলেন বলে জানান শ্যারন স্টোন।