Published : 06 Sep 2022, 08:03 PM
চার বছরে ২৭টি চলচ্চিত্র, তাতেই দর্শকদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন সালমান শাহ; মৃত্যুর ২৬ বছর পরেও তাকেই স্মরণ করছে চলচ্চিত্র অঙ্গন।
২৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সালমান শাহকে স্মরণ করে চিত্রনায়ক-নায়িকা, নির্মাতা, কলাকুশলী অনেকেই লিখেছেন ফেইসবুকে; তাকে ফুটে উঠেছে এই চিত্রনায়কের আবেদন এখনও ফুরোয়নি।
বাংলার চলচ্চিত্র জগতে গত শতকের ৯০ এর দশকে আবির্ভাব সালমান শাহর, প্রথম সিনেমা কেয়ামত থেকে কেয়ামতেই বাজিমাত করেন তিনি।
গতানুগতিক সিনেমা ও নায়কের ভিড়ে তরুণ সালমান নতুন দুয়ার খুলে দেন দর্শকদের জন্য। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকার মধ্যে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর মৃত্যু হয়। তার মৃত্যু হত্যা না কি আত্মহত্যা, সেই রহস্যের জট এখনও খোলেনি।
প্রতিবারের মতো এবারও মৃত্যুদিবসে সালমানের জন্য শোক আর আহাজারিতে ভরে উঠেছে ফেইসবুক।
সালমান শাহর নামের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল অভিনেত্রী শাবনূরের নাম। একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন তারা।
শাবনূর লিখেছেন, “অমর নায়ক সালমান শাহের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। প্রিয় নায়ক যেখানে আছ, ভাল থেকো সুখে থেকো। আল্লাহ তোমাকে জান্নাত দান করুক - আমিন।”
নব্বই দশকের আরেক জনপ্রিয় নায়ক ওমর সানী ফেইসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। সাদাকালো ছবিতে দেখা যায় সে সময়ের জনপ্রিয় নায়ক নাইম, ওমর সানী, ক্যামেরাপার্সন জেড এইচ মিন্টু ও আমিন খানের সঙ্গে দাঁড়ানো সালমান শাহ।
ওমর সানী ক্যাপশনে লিখেছেন, “আমার সহযোদ্ধা, তোমার চলে যাওয়াটাকে ২৬ বছর যাবত আমাকে কষ্ট দেয়, একদিন আমারও চলে আসতে হবে তোমার কাছে,,,, সালমান শাহ (ইমন) আল্লাহ জান্নাত নসিব করুন।”
একই ক্যাপশনে পোস্ট দিয়েছেন ওমর সানীর স্ত্রী চিত্রনায়িকা মৌসুমী, কেয়ামত থেকে কেয়ামত দিয়ে ১৯৯৩ সালে সালমান শাহর সঙ্গে যার চলচ্চিত্রে অভিষেক।
১৯৯৬ সালের অন্যতম সুপারহিট ছবি ছিল সালমান শাহ অভিনীত ‘এই ঘর এই সংসার’। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন মালেক আফসারী। মালেক আফসারীর মাথায় ছাতা ধরে আছে সালমান শাহ, এমন একটা ছবি পোস্ট দিয়ে তিনি লিখেছেন, “যে ঘরে নায়ক, সে বাহিরেও নায়ক। এফডিসির প্রতিটি মানুষের কলিজা সালমান শাহ। শুধু অভিনয় নয়, টেকনিক্যাল কাজ শেখার প্রতি তার আগ্রহ দেখে আমি অবাক হতাম। দেখেন কীভাবে ছাতা হাতে আমাকে ছায়া দিয়ে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে। আজো হৃদয়ে তুমি।”
চিত্রনায়ক শাকিব খান লিখেছেন, “আজ সালমান শাহর ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। যিনি ৯০ দশকে রাজত্ব করেছেন এবং তার ছোট্ট ক্যারিয়ারে দেশের চলচ্চিত্রে অপরিসীম ভূমিকা রেখেছেন।”
জনপ্রিয় খল অভিনেতা মিশা সওদাগর লিখেছেন, “চলে যাওয়ার ২৬ বছরেও সালমান শাহ সমসাময়িক। এটাকেই বলে- নায়ক।”
চিত্রনায়ক নিরব লিখেছেন, “৯০ দশকে আপনি চলচ্চিত্রে এসেছিলেন হ্যালির ধূমকেতুর মতো! সিনেমাতে এলেন, দেখলেন, জয় করলেন। পর্দায় পোশাক-পরিচ্ছেদ, সংলাপ বলার ধরন, অভিনয় দক্ষতা সবকিছু মিলিয়ে একজন দর্শক হিসেবে আমার মনে স্থান করে নিতে সময় লাগেনি। বাংলা সিনেমার সর্বসেরা 'রোমান্টিক হিরো'দের তালিকায় আপনার স্থান উপরে।
“স্পষ্ট মনে পড়ে রাজবাড়ীর পাংশার নূপুর সিনেমা হলে জীবনে প্রথম আপনার ‘জীবন সংসার’ সিনেমা দেখেছিলাম। পর্দায় আপনাকে দেখে নায়ক হওয়ার ইচ্ছে সেদিনই প্রথম জেগেছিল। আহ কী সেই নায়ক, কী তার অভিনয়, কী তার স্টাইল। ২৬ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। ভালো থাকুক আমাদের অমর নায়ক সালমান শাহ।”
তরুণ পরিচালক শামীম আহমেদ রনী লিখেছেন, “মৃত্যুর ২৬ বছর পরেও, এমনকি এই প্রজন্মের কাছেও যিনি সবচেয়ে বড় সুপারস্টার সালমান শাহ।”
ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব লিখেছেন, “আজ প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ - এর ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। কিংবদন্তীর কখনও মৃত্যু নেই৷ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি এই কিংবদন্তী নায়ককে।”
আরেক অভিনেতা সজল লিখেছেন, “সালমান শাহ ছিলেন বাংলা সিনেমার উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার অভিনয়ে, ব্যক্তিত্বে নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন কিংবদন্তি নায়ক। আর কিংবদন্তিদের কখনও মৃত্যু হয় না। তারা থাকেন মানুষের ভালোবাসায়, মানুষের হৃদয়ে। সালমান শাহ মানুষের অন্তরে বেঁচে আছেন, থাকবেন চিরকাল।”
চিত্রনায়িকা শাহনূর লিখেছেন, “সত্যিই আমরা আপনাকে অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি প্রিয় নায়ক। মাত্র ৩ বছর ৫ মাস ১১ দিনের চলচ্চিত্রের ক্যারিয়ারে ২৭টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। কী আশ্চর্য এক ক্ষমতায় দর্শকদেরকে স্মরণ করে রাখার মত তারকা সালমান শাহ!”
এছাড়া অসংখ্য ভক্ত ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে স্মরণ করছেন তাদের প্রিয় নায়ক সালমান শাহকে।