‘আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ’ শুরু

গ্রন্থপাঠ শেষে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতি বিভাগে সেরা দশজন পাঠক নির্বাচন করে পুরস্কৃত করা হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2022, 05:41 AM
Updated : 20 Nov 2022, 05:41 AM

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি, প্রয়াত অভিনেতা আলী যাকেরের স্মৃতি স্মরণে ‘আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

শনিবার ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সেমিনার কক্ষে এ উদ্যোগের উদ্বোধন করে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া গ্রন্থাগারগুলোকে বই দেওয়া হয়।

ঢাকা মহানগর ও সংশ্লিষ্ট কয়েকটি জেলার ৫০টি বেসরকারি পাঠাগারকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে এ কর্মসূচিতে। সহায়তা করছে মঙ্গলদীপ ফাউন্ডেশন।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর জানায়, শনিবার প্রত্যেক গ্রন্থাগারের প্রতিনিধির হাতে নির্বাচিত বই তুলে দেওয়া হয়। বই পাঠ শেষে প্রত্যেকে সেই বই সম্পর্কে নিজেদের মূল্যায়ন লিখে জমা দেবে। জাতীয়ভাবে গঠিত বিচারকণ্ডলী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রতি বিভাগে সেরা দশ পাঠক নির্বাচন করে পুরস্কৃত করবে। অংশগ্রহণকারী পাঠকদের সনদও দেওয়া হবে।

কর্মসূচিতে নির্বাচিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে- স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য মুহম্মদ জাফর ইকবাল রচিত ‘আমার বন্ধু রাশেদ’, কলেজ পর্যায়ে আলী যাকেরের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘সেই অরুণোদয় থেকে’ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক রচিত ‘একাত্তর: করতলে ছিন্নমাথা’।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “এ উদ্যোগকে আমরা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। পাঠাগার এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আমরা একে অন্যের অংশী।”

Also Read: আলী যাকের আর নেই

আরেক ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে অতীতকে স্মরণ করা, নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পৌঁছে দেওয়া। বই তিনটির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা ঘটনা জানা যাবে।”

ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গন্থপাঠের উদ্যোগের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা দিক উন্মোচিত হবে বলে আশা রাখি।

অনুষ্ঠানে আলী যাকেরের ছেলে ইরেশ যাকেরও অংশ নেন। তিনি বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের মাহাত্ম্য সম্পর্কে আরও জানতে পারবে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা আলী যাকেরকে নতুন প্রজন্মের পাঠকের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কথা বলেন কর্মসূচির সমন্বয়ক মো. শাহ নেওয়াজ। উদ্যোগে অংশ নেওয়া বিভিন্ন পাঠাগারের প্রতিনিধিরাও বক্তব্য দেন।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর মারা যান একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন আলী যাকের। তিনি ছাড়াও গত তিন বছরের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি কবি-স্থপতি রবিউল হুসাইন, মুক্তিযোদ্ধা-সমাজকর্মী জিয়াউদ্দিন তারিক আলীরও মৃত্যু হয়েছে।

প্রয়াত ট্রাস্টি রবিউল হুসাইনের স্মরণে গত ৮ নভেম্বর বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর যৌথভাবে আয়োজন করে ‘রবিউল হুসাইন স্মারক বক্তৃতা’। এতে বক্তব্য দেন মার্কিন জাদুঘর বিশারদ বারবারা এফ চার্লস।

অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব সাইটস অব কনসায়েন্স যৌথভাবে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিন তারিক আলী স্মরণে গণহত্যা, ন্যায়বিচার ও স্মৃতি-সংরক্ষণ অধ্যয়ন বিষয়ক ফেলোশিপ কর্মসূচি চালু করেছে।