“ব্যবসার জন্য দুই ঈদের জন্য বসে থাকতে হচ্ছে, সিনেমা হল তো শুধু দুই ঈদের জন্য বানাইনি।”
Published : 31 Jan 2025, 12:02 PM
দেশের ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হল ‘চিরতরে বন্ধ হয়ে যাওয়ার’ যে খবর চাউর হয়েছে সেটি ‘সঠিক নয়’ বলে জানিয়েছেন প্রেক্ষাগৃহটির কর্ণধার ইফতেখার আহমেদ নওশাদ।
এ ধরনের খবরকে ‘বাড়াবাড়ি’ হিসেবে অভিহিত করলেও প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ করার বিষয়টি তিনি একেবারে উড়িয়েও দেননি।
সেক্ষেত্রে এ বছরের দুই ঈদ এবং তার পরবর্তী সময়ে যদি ভালো ব্যবসা না হয় তখন প্রেক্ষাগৃহ খোলা রাখা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নওশাদ।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সঙ্গে অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে জড়িয়ে থাকা স্মৃতিবিজড়িত এই সিনেমা হলটি বন্ধের বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে গ্লিটজের সঙ্গে কথা হয় নওশাদের।
তিনি বলেন, “বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবরটা বাড়াবাড়ি করে বলা হচ্ছে। আর বন্ধ তো হবেই, সিনেমা না থাকলে হলে কী চালাব।”
গত কোরবানি ঈদে সুপারস্টার শাকিব খানের ‘দরদ’ সিনেমা চলার পর থেকে ব্যবসা করার মতো সিনেমা না আসায় প্রেক্ষাগৃহটি বন্ধ রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বৃহস্পতিবার খবর আসে, আগামী ঈদুল আজহার পর পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে মধুমিতা। এরপর সেখানে গড়ে তোলা হবে বহুতল ভবন। তবে রাখা হবে সিনেপ্লেক্সও।
৫৮ বছরের পুরনো মধুমিতা বন্ধ হয়ে যাওয়ার যে খবর শোনা যাচ্ছে সেটি কতটুকু সঠিক প্রশ্নে নওশাদ গ্লিটজকে বলেন, “না না, এটা নিয়ে একেকজন একেক রকম খবর দিচ্ছে। তবে আমরা তো সবসময় লস দিয়ে সিনেমা হল চালাতে পারি না।”
বর্তমানে ভালো সিনেমার অভাবে তার হলটি বন্ধই থাকছে জানিয়ে তিনি বলেন, “হলে চালানোর মত কোনো সিনেমা নেই। গতবছরও দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল, ‘দরদ’ নভেম্বরে মুক্তি পেল, এক সপ্তাহ চালিয়েছি। এরপর যেসব সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু আমার ১২০০ সিটের হল দর্শকে ভরার মত কোনো সিনেমা মুক্তি পায়নি।”
প্রেক্ষাগৃহের ব্যয়ের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “বৈদ্যুতিক বিল এবং কর্মচারীদের বেতন দিয়ে আর কত লসে হল খোলা রাখব? সিনেমা নেই তাই হল বন্ধ। লসে তো আর ব্যবসা চালাতে পারি না।”
তবে সামনে চলচ্চিত্র ব্যবসা ফেরার সম্ভাবনার রয়েছে জানিয়ে নওশাদ বলেন, “ভালোবাসা দিবসে ভালো সিনেমা আসলে হল খোলা হবে, তাছাড়া সামনে রোজার ঈদে ভালো সিনেমা আসতে পারে। দুইটা ঈদ দেখব, যদি ব্যবসা না হয় তাহলে হয়ত বন্ধ করে দিতে হবে।
“ব্যবসার জন্য দুই ঈদের জন্য বসে থাকতে হচ্ছে, সিনেমা হল তো শুধু দুই ঈদের জন্য বানাইনি।”
পাকিস্তান আমলে ১৯৬৭ সালের ১ ডিসেম্বর ‘মধুমিতা’ সিনেমা হলের যাত্রা। ঢাকার বাণিজ্যিক কেন্দ্র মতিঝিলে প্রায় তিন বিঘার উপরে নিজস্ব ভবনে গড়ে ওঠা এই হলটি পুরোপুরি শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত।
১ হাজার ২২১ জন দর্শক একসঙ্গে বসে সিনেমা দেখতে পারেন মধুমিতায়।
ঢাকায় কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মধুমিতা সিনেমা হলে তালা ঝুলেছে এর আগে ২০২২ সালেও। তখনও ওই তালা আদৌ খোলা হবে কি না সে বিষয়ে সেই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।