২৩ মে মুক্তি পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘জননী’। রওশন আরা নীপার পরিচালনায় সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে রূপদান করেছেন অভিনেত্রী জয়িতা মহলানবিশ। নাট্যদল প্রাচ্যনাটের এই অভিনেত্রী বললেন, একজন বীরাঙ্গনার চরিত্র ধারণ করা তার পক্ষে ‘মোটেই সহজ ছিল না’।
Published : 24 May 2014, 05:19 PM
সম্প্রতি গ্লিটজ কার্যালয়ে এসেছিলেন জয়িতা। আলাপে উঠে আসে সিনেমায় অভিনয়ের অভিজ্ঞতাসহ নানা কথা। আলাপচারিতার ফাঁকে জয়িতার ছবি তুলেছেন হাসান বিপুল।
গ্লিটজ: ‘জননী’ সিনেমার পরিচালক নীপার সঙ্গে পরিচয় কীভাবে?
জয়িতা: মঞ্চনাটকের সুবাদে নীপার সঙ্গে বহুদিনের পরিচয়। নীপা আমার নাটক দেখতে আসতেন। তিনি একদিন আমাকে সিনেমার গল্পটি শুনিয়ে বললেন, “জয়িতা, তুমি আমার সিনেমার মনিরা চরিত্রটি করবে।”
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বরাবরই দুর্বল আমি। তাছাড়া পুরো সিনেমার কাহিনি আমার চরিত্রটিকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। সিনেমাটির মাধ্যমে যুদ্ধকালীন ভয়াবহতা, পাকবাহিনির নিষ্ঠুর সব পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরা হচ্ছে। এমন চরিত্র কে হাতছাড়া করবে! আমি লুফে নিলাম নীপার প্রস্তাব।
গ্লিটজ: মনিরা চরিত্রকে নিজের মধ্যে কতটা ধারণ করতে পেরেছেন বলে মনে করেন?
গ্লিটজ: পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার চরিত্রে শাহজাহান সম্রাটকে কেমন মনে হয়েছে?
জয়িতা: মঞ্চে সম্রাটের (পালাকার সদস্য) অনেক নাটক দেখেছি। ছেলেটার অভিনয় প্রতিভায় আমি মুগ্ধ। ও বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে পারে। সিনেমাতে ও পাকিস্তানি আর্মি অফিসার সাঈদ খুরশিদের চরিত্রে অভিনয় করছে। সিনেমার শুটিংয়ে ও দারুণ উর্দু বলত। এটা ওর প্লাস পয়েন্ট। মনিরার বাসা আক্রমণের পর তাকে নির্যাতনে নানা সিকোয়েন্সে সম্রাটই আমাকে সহজ করে দিয়েছে। সহ অভিনেতার সহযোগিতা পাওয়া সত্যিই আমার ভাগ্য।
গ্লিটজ: সিনেমাতে আপনার প্রেমিকের চরিত্রে গায়ক প্রীতমকে দেখা যাবে। তার সঙ্গে অভিনয় করে কেমন লেগেছে?
জয়িতা: প্রীতমের চরিত্রের ব্যাপ্তি খুব কম। ওর সঙ্গে সেভাবে অভিনয়ের সুযোগ মেলেনি। তবে মানুষ হিসেবে সে চমৎকার।
গ্লিটজ: সিনেমা নিয়ে এখন কী পরিকল্পনা করছেন?
জয়িতা: এখনও সেভাবে গুছিয়ে পরিকল্পনা করিনি। ভালো গল্প, ভালো নির্মাতা আর মনের মতো চরিত্র পেলে অবশ্যই সিনেমা করব। তবে আরও প্রস্তুতি নিয়ে সিনেমা করতে চাই।
গ্লিটজ: আপনার শুরু মঞ্চনাটকে। অভিনয়ের শুরুটা কেমন ছিল?
গ্লিটজ: এরপর তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন?
জয়িতা: পালাকারের অতিথি অভিনেত্রীর কাজ করছি তখন। দলের ‘নারীগণ’ নাটকের ‘আলেয়া’ চরিত্রের জন্য আমাকে মনোনীত করলেন নির্দেশক খালেদ খান। এ চরিত্রের জন্য আমাকে নাচ, গান শেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। তার কথামতো আমি নাচ আর গানের তালিম নিয়েছি। এরপর খালেদ খান অসুস্থ হয়ে পড়লে তার সঙ্গে আর নাটকটি করা হল না। পরে ২০১০ সালে নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন আতাউর রহমান।
গ্লিটজ: কণ্ঠশীলনের পর আপনি বেশ কিছুদিন নাট্য সংগঠন থিয়েটারের হয়ে কাজ করেছেন। এ দলটির সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
গ্লিটজ: প্রাচ্যনাটের ‘কইন্যা’ নাটকের মাধ্যমে আলোচনায় এসেছিলেন। এছাড়া আর কোন কোন নাটকে কাজ করছেন আপনি?
জয়িতা: ‘কইন্যা’ নাটকের মূল কৃতিত্ব আজাদ আবুল কালামের। তার নির্দেশনাতেই আমার চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে পেরেছিলাম। এছাড়া কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমনের নির্দেশনায় আরও কাজ করছি ‘কিনু কাহারের থেটার’ নামে একটি নাটকে। এ নাটকে আমার চরিত্রের নাম ‘উদাসিনী’। কিনু কাহারের শালী উদাসিনীকে চিমটি কাটা নিয়ে নিয়ে নাটকের দলটিতে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। এছাড়া আজাদ আবুল কালামের নির্দেশনায় ‘রাজা এবং অন্যান্য’, ‘পুনর্জন্ম’ নাটকে অভিনয় করেছি।
গ্লিটজ: শিল্পকলা একাডেমির রেপার্টরি প্রযোজনার বেশ কটি নাটকে অভিনয় করছেন। রেপার্টরিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
গ্লিটজ: মঞ্চনাটকে নিয়মিত হলেও টিভিনাটকে তেমনভাবে দেখা যায়নি কেন? এখন টিভিনাটকে ব্যস্ততাই-বা কেমন?
জয়িতা: মঞ্চনাটককে এমনভাবে আঁকড়ে ধরেছি যে টিভি নাটকের প্রতি আগ্রহবোধ করিনি। তবে এখন আবার নিয়মিত হব বলে ভাবছি। এরই মধ্যে বেশকিছু ভালো পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আমার প্রথম নাটক শাহনেওয়াজ কাকলীর ‘গোলাপি পাঞ্জাবি’। প্রথম ধারাবাহিক অম্লান বিশ্বাসের ‘যাও পাখি’। আরও অভিনয় করেছি সুমন আনোয়ারের ‘বিজলি’, আফসানা মিমির ‘সাতটি তারার তিমির’, ও ‘পৌষ ফাগুনের পালা’ নাটকে। এখন বেশকিছু নাটকে অভিনয়ের প্রস্তাব রয়েছে। টিভি নাটকেও নিয়মিত হব আমি।