অঞ্জন দত্তর ‘ঊনষাট’

"ভাবিনি তো কোনোদিন

আমার এই বন্ধুটা

হয়ে যাবে বন্ধু সবার

ভাবিনি তো কোনোদিন শুনবে সবাই

আমার পুরনো গিটার"

প্রথম দিককার একটি গানে লিখেছিলেন এই কথা৤ এরপর পাতিয়েছেন কত বন্ধু, পেয়েছেন অজস্র শ্রোতা৤ একযুগ পর নতুন সোলো অ্যালবাম করতে গিয়ে অঞ্জন দত্তর কি মনে পড়ছে তাঁরই পুরনো সে-গান?

একুশ বছর ধরে বাঙালি শ্রোতাদের একটা বড় অংশকে মাতিয়ে রাখা, ‘অঞ্জন’ এর নতুন একক অ্যালবামের নাম 'ঊনষাট'।

১০ মে কলকাতার জ্ঞান মঞ্চে অঞ্জন দত্তর ১১তম একক অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচিত হওয়ার কথা।

টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে অঞ্জন দত্ত জানান, "অ্যালবামটি করার কথা মাথায় আসে ‘দত্ত ভার্সাস দত্ত’ সিনেমা নির্মাণের সময়। প্রথমে এর গানগুলো ছেলে নীলের সঙ্গেই গাইতে শুরু করি আমি। ছেলে বলে, ‘আদর্শগতভাবেই আমার সঙ্গে তোমার অ্যালবাম করা উচিত না, আর তোমার সঙ্গের বাজিয়েরাও তোমারই মতো বুড়ো।”

"নীলের ধারণা, তার তারুণ্যের ছাপ আমার ঊনষাট বছর বয়সী জীবনের গানে প্রতিফলিত হবে।"

ছেলের কথায় প্রভাবিত হয়েই তাই বন্ধু ও সতীর্থ অমিত দত্তের ঘাড়ে সব চাপিয়ে দেন।

“শৈল্পিক দিক থেকে অ্যালবামটি প্রযোজনা করেছে অমিত, আমি শুধু অর্থ জুগিয়েছি। সবকটা গানেই তার যন্ত্রবাদন রয়েছে। শুধু মেন্ডালিনের জন্য কয়েকজনকে যুক্ত করেছি।”

অ্যালবামে থাকছে সাতটি গিটার বেইজড গান। অঞ্জন ও নীলের সঙ্গে অমিত দত্তের অংশীদারিত্ব এই গানগুলোতেই। অঞ্জনের সঙ্গে ২০ ধরে কাজ করছেন অমিত দত্ত

অ্যালবামটি সিডি ও অনলাইন দুই মাধ্যমেই পাওয়া যাবে বলে জানান অঞ্জন।

বাংলাদেশের একটি মোবাইল কোম্পানি এর ‘কলার টিউন’ স্বত্ব কিনেছে বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি।

অঞ্জন দত্তের সর্বশেষ অ্যালবাম ‘রং পেন্সিল’ প্রকাশিত হয় ২০০১ সালে। মাঝে ২০০৭ সালে প্রকাশিত ছেলের সঙ্গে ‘আমি আর গদদ’ এবং বাপ্পা মজুমদার ও এসআই টুটুলের সঙ্গে ‘আবার পথে দেখা’।

তিনি বলেন, “আমি ভালো লিখেছি ‘কলকাতা-১৬’ পযর্ন্ত। এরপর মনে হচ্ছিল, আমি ‘আলিবাবা’, ‘বৃষ্টি’, ‘বেলা বোস’-এর মতো গানগুলোর পুনরাবৃত্তি করছি। পাশাপাশি আমার গায়কী ক্যারিয়ার কিন্তু পুরোদমে চলছিল।”

একটা সময় এসে সবকিছু থেমে যায়। তিনি আরও বলেন, “আমার ৪০ বছর বয়সে এসেও আমি আমার ২০ বছর বয়সের গানগুলো গাইছিলাম। এমনকি আমি শারীকিভাবেও তরুণ হতে চাইছি। আবার, স্টেইজে আমি নাগরিক লোকশিল্পী অথচ অ্যালবামের গানে পপশিল্পী।”

এমন আরও নানা দ্বন্দ্বের কারণেই অঞ্জন অনুপস্থিত ছিলেন অডিও ইন্ড্রাস্টিতে।

এই ফাঁকে বেশ কয়েকটি ‘হিট’ সিনেমা নির্মাণ করেছেন তিনি। তার পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘রঞ্জনা আমি আর আসবো না’র জনপ্রিয় গান ‘রঞ্জনা’র রিমেইক ব্যবহার করেন। সংগীতে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া ছবিটির মিউজিক ডিরেকশন দিয়েছেন দত্ত জুনিয়র, নীল।