নাইজেরিয়া ও ভারতীয় চলচ্চিত্রের মিশেলে তৈরি ‘নমস্তে ওহালা’ মুক্তি পেল ভালোবাসা দিবসে।
Published : 14 Feb 2021, 04:55 PM
বলিউডের মতো নাইজেরিয়ার চলচ্চিত্র জগতকে বলা হয় নলিউড। আর এই ভালোবাসা দিবসে দুই দেশের মিশ্র সংস্কৃতির মেল বন্ধন ঘটেছে ‘নমস্তে ওহালা’ ছবিতে।
রয়টার্স জানায়, ভারতীয়-নাইজেরিয়ান রেস্তোরাঁর কর্ণধার হামিশা দারিয়ানি আহুজা বহু দিনের ব্যবসা ছেড়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে চলচ্চিত্রের জগতে পা রেখেছিলেন। তার সেই স্বপ্ন পূরণ হল এবার।
নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া এই ছবির কাহিনী এগিয়েছে এক নাইজেরিয়ান নারীকে ঘিরে, যিনি ভারতীয় এক ব্যাংক-বিনিয়োগকারীর প্রেমে পড়েন। আর তারপর থেকেই শুরু হয় গণ্ডগোল।
তাই ছবির নামও রাখা হয়েছে হিন্দি ও নাইজেরিয়া ভাষার মিশেলে। ‘নমস্তে’ অর্থ যদি ‘হ্যালো’ ধরা হয় তবে নাইজেরিয়ান ভাষায় ‘ওহালা’ অর্থ হল ঝামেলা। সেই হিসেবে ছবির ইংরেজি নাম দাঁড়ায় ‘হ্যালো ট্রাবল’।
আর তরুণ এই দম্পতির মিশ্র-সংস্কৃতির গ্যাড়াকলে ঝামেলাপূর্ণ রোমান্টিক ব্যাপারগুলোই হাস্যরসাত্মকভাবে তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে।
রয়টার্সকে পরিচালক আহুজা বলেন, “আমি এমন কিছু করতে চেয়েছি যাতে বেশিরভাগই নলিউডের ছাপ পাওয়া যায়। তবে ভারতীয় শিল্পী যুক্ত করে আমি ব্যাপারটাতে আরও মজা আনার চেষ্টা করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি আসলে নব্বইয়ের দশকের বলিউড স্টাইলটা এখানে নিয়ে এসেছি। গাছের ফাকে নাচ-গান সবই আছে। এটা খুবই মজাদার মিষ্টি রোমান্টিক একটা ছবি।”
ভারতীয় পরিবারে জন্ম নিলেও আহুজা’র বেশিরভাগ সময় কেটেছে নাইজেরিয়াতে।
“ভারতীয়দের সঙ্গে থাকলেও আমি নাইজেরিয়ার সংস্কৃতি, তাদের পিজিন ভাষা ও খাবার সম্পর্কে আমার ভালোই ধারণা আছে। মজার ব্যাপার হল সবাই মনে করে তাদের সঙ্গে আমাদের অনেক তফাৎ। তবে সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের অনেক মিল রেয়েছে। আসলে আমরা সবাই এক, এটাই ছবির বিষয়বস্তু।” এভাবেই ছবির সম্পর্কে মত দিলেন আহুজা।
১১০ মিনিটের এই ছবিতে কেন্দ্রিয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভারতের অভিনেতা রুসলান মুমতাজ ও নাইজেরিয়ার অভিনেত্রী ইন-দিমা হজে।
রুসলান এই ছবি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, “এই ধরনের মিশ্র সংস্কৃতির প্রেমের ছবি আরও হওয়া প্রয়োজন। কারণ সব দেশেই প্রেম থাকলেও শুধু মাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে মানুষরা এক হতে পারে। বিশেষ করে ভারতে, ধর্ম আর সংস্কৃতি আলাদা কাউকে সহজে বিয়ে করা যায় না।”
ছবির বেশিরভাগ কাজ ইংরেজিতেই ধারণকৃত। নাইজেরিয়া ও ভারত মিলিয়ে প্রায় ষাটজন কলাকৌশলী কাজ করেছেন। গত বছর লকডাউনের আগেই ছবির কাজ শেষ হলেও মহামারীর কারণে গত বছর এপ্রিলে এই ছবি মুক্তির তারিখ পিছিয়ে যায়।
ইন-দিমা হজে’র ভাষায়, “আমি সবচেয়ে যেটা ভালোবাসি তা হল আমাদের মধ্যে থাকা অন্তর্নিহিত বার্তাগুলো, যা আমাদের মধ্যে মিল ঘটায়। ভিন্ন ধারা থেকে আসলেও প্রেমকে আলিঙ্গন করার সৌন্দর্যটাই আমার প্রিয়।”
প্রতিমাসে নাইজেরিয়াতে প্রায় একশ’র বেশি টেলিভিশন ধারাবাহিক ও চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। সেদিক দিয়ে বলিউডের পরেই নলিউড ইন্ডাস্ট্রি বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। তাছাড়া নাইজেরিয়াতে বলিউড ভক্তেরও কমতি নেই।
সে কারণে চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ‘নমস্তে ওহালা’ অনলাইনে ভালোই আওয়াজ তুলবে বলে আশা রাখেন।