“দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর আমরা চলচ্চিত্র শিল্পকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দেই,” বলেন তিনি।
Published : 14 Nov 2023, 09:03 PM
নিজেদের মেধা কাজে লাগিয়ে ভালো মানের চলচ্চিত্র শিল্প গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “আজকে আমাদের বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। কাজেই বিনোদনের ক্ষেত্রটা আরও যাতে সম্প্রসারণ হয়, উপজেলা কেন- ইউনিয়ন পর্যায়ে মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ আমরা প্রত্যেকটা গ্রামকে শহরের নাগরিক সুবিধা দিচ্ছি।
“সেজন্যই এ বিনোদনের ব্যবস্থা যাতে প্রসারিত হয়, এই ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা চাই না যে আমাদের দেশে অশ্লীল চলচ্চিত্র অথবা পাইরেসি চলুক। আমাদের নিজেদের সকলের মেধা কাজে লাগিয়ে ভালো মানের শিল্প যাতে গড়ে তোলা যায়, সেই ব্যবস্থাটাই চাই।”
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “একটি দেশের সমাজকে চলচ্চিত্র সচেতন করতে পারে, আনন্দ দিতে পারে, সংস্কারও করতে পারে। ইতিহাসকে ধরে রাখতে পারে, প্রেরণা দিতে পারে মানুষকে। জাতি গঠনে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।
“চলচ্চিত্র আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চলচ্চিত্র আমাদের উপমহাদেশে বাঙালিদের হাতে গড়া। দুর্ভাগ্য যে পাকিস্তান আমলে আমাদের সেই অধিকারটা ছিল না। কিন্তু সেই অধিকারটা শুরু করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সকলকে উৎসাহিত করেন। কারণ অনেক শিল্পী, অনেকের সাথে সম্পর্ক ছিল বঙ্গবন্ধুর।”
পাকিস্তান আমলে দেশের সংস্কৃতির উপর যে আঘাত এসেছিল, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “দুর্ভাগ্যের বিষয় যে পাকিস্তান আমলে আমাদের মাতৃভাষার অধিকার কেড়ে নিয়ে আমাদের সংস্কৃতির উপর আঘাত আনা হয়। আর তারই প্রতিবাদ ১৯৪৮ সাল থেকে করে আসছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
“পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরে বাংলাদেশে অপসংস্কৃতির একটা যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমরা বাঙালি, আমাদের নিজেদের মধ্যে যে স্বকীয়তা আছে, নিজস্বতা, আমাদের যে সৃষ্টিশীলতা আছে- সেটাকে ভুলে গিয়ে একটা অপসংস্কৃতিতে জড়িয়ে পড়ছিল।”
চলচ্চিত্র উন্নয়নে আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, “২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আমরা সরকার গঠন করার পর চলচ্চিত্রকে গঠন করার জন্য নানা উদ্যোগ নিই। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর আমরা চলচ্চিত্র শিল্পকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিই। অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান যেসব সুযোগ-সুবিধা পায়, আমরা সেভাবেই করেছি।
“একটা সময়ে গ্রাম-বাংলা পর্যন্ত সিনেমা হল ছিল। মানুষের বিনোদনের একটা সুযোগ ছিল। ধীরে ধীরে এগুলো বন্ধ হয়ে যায়, বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে। আমি নিজে মালিকদের সাথে বৈঠক করি। কীভাবে আমাদের সিনেমা হলগুলো চালু করা যেতে পারে, আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন হতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সিনেমা হলগুলোকে উন্নত করার সেই প্রচেষ্টা নিই। বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতায় এক হাজার কোটি টাকার একটা পূর্ণ অর্থায়ন তহবিল গঠন করি, যাতে অল্প সুদে ঝণ নিয়ে যাতে সিনেমা হলগুলো চালু করতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এই ব্যবস্থাটা নিই।”