শিল্পীরা 'মুক্তির মন্দির সোপানতলে' ও 'পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল রক্ত লাল' গান দুটি পরিবেশন করেন।
Published : 25 Mar 2025, 08:55 PM
মোমবাতি জ্বালিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে গণহত্যায় শহীদের স্মরণ করল বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ।
গণহত্যা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে মোমবাতি জ্বালিয়ে শহীদদের স্মরণ করে সংগঠনটি।
'ভুলি নাই ভুলি নাই মৃত্যুমিছিল: জেনোসাইড একাত্তর দায়বদ্ধতা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে' শীর্ষক এ কর্মসূচিতে অংশ নেন সমন্বয় পরিষদভুক্ত বিভিন্ন দলের শিল্পী ও নেতা-কর্মীরা।
সংগঠনের সভাপতি শিল্পী কাজী মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইটের নেতৃত্বে তারা মোমবাতি জ্বালিয়ে শহীদদের স্মরণ করেন। এসময় শিল্পীরা 'মুক্তির মন্দির সোপানতলে' ও 'পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল রক্ত লাল' গান দুটি পরিবেশন করেন।
পরে তারা সদ্যপ্রয়াত ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সভাপতি সন্জীদা খাতুনের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন।
পরে সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট সংবাদিকদের বলেন, "১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর আমরা তার জবাব দিয়েছি। আমরা অকুতোভয় ও নিধি জাতি, সেটি আমরা বারবার প্রমাণ করেছি। আমার পেছনে এখনো দাঁড়িয়ে আছে শহীদ মিনার।
"আমাদের অনেক অনেক অভ্যুত্থান হয়েছে, কিছুদিন আগেও আমরা একটি অভ্যুত্থান দেখেছি, ৯০ এও অভ্যুত্থান হয়েছে। সব কিছুর মূলেই আছে মুক্তিযুদ্ধের বঞ্চনা। বৈষম্যহীন যে সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে, সেই সমাজ কখনোই কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সেই কারণেই বারবার বাঙালি বঞ্চিত হয়েছে। সে বঞ্চনার কারণে, ক্ষোভের কারণে, কষ্টের কারণে বারবার তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বারবার তারা আন্দোলন করেছে, সংগ্রাম করেছে; সে রকম একটি বাংলাদেশ চেয়েছে যেটা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ছিল।"
দেশের সর্বস্তরের মানুষ ‘মুক্তি চায়’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, "সর্বস্তরের মানুষের মুক্তি যদি না হয়, শুধু বড়লোক, বড়লোক ও বড়রাই যদি শুধু মুক্তি পায়, তাহলে সার্বিক মুক্তি হবে না। আমরা মনে করি বাংলাদেশের মানুষের সার্বিক মুক্তি প্রয়োজন। সেই মুক্তি অর্জিত হলে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে।"
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরসহ বিভিন্ন সংগঠন যে ২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সে কথাও বলেন মানজার চৌধুরী সুইট।
পরিষদের সহসভাপতি ফকির সিরাজ বলেন, "১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও চীন পাকিস্তানিদের সাপোর্টে ছিল। আর মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে সবাই মনযোগী ছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন পাকিস্তানিদের পক্ষে থাকায় গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি।"