জাতীয় কবিতা উৎসবের পর্দা উঠছে বুধবার

ভারত, নেপাল, ভুটানের কবিরা অংশ নেবেন এবারের উৎসবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Jan 2023, 10:11 AM
Updated : 30 Jan 2023, 10:11 AM

‘বাংলার স্বাধীনতা আমার কবিতা’ স্লোগান নিয়ে দুদিনব্যাপী জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হচ্ছে ঢাকায়। 

মহামারীতে দুবছর বন্ধ থাকার পর আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণের হাকিম চত্বরে বসবে এ উৎসবের ৩৫তম আসর। 

উৎসবে ভারত, নেপাল ভুটানের কবিরা অংশ নেবেন। জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কারের ঘোষণাও আসবে এ উৎসব থেকে। 

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে উৎসবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে জাতীয় কবিতা পরিষদ। 

সংবাদ সম্মেলনে কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ বলেন, উৎসবের উদ্বোধন করবেন কবি আসাদ চৌধুরী। বুধ ও বৃহস্পতিবার প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই উৎসব। 

কবি সামাদ বলেন, এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ৩৪তম উৎসবের মর্মবাণী ঠিক করা হয়েছিল ‘মুজিব আমার স্বাধীনতার অমর কাব্যের কবি’। 

“মাঝে দুটি উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নিয়ে আমরা কোনো উৎসব করতে পারিনি। সুতরাং এবারের উৎসবটা আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে ঘিরে আয়োজন করছি। সেই হিসেবে আমরা স্লোগান বা মর্মবাণী নির্ধারণ করেছি- ‘বাংলার স্বাধীনতা আমার কবিতা’। 

তিনি জানান, কবিতাপাঠ, নিবেদিত কবিতা, সেমিনার, আবৃত্তি ও সংগীতের মধ্য দিয়ে এবারের স্লোগানকে মূর্ত করে তোলার প্রচেষ্টা থাকবে। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত জানান, উৎসবের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার, ২০২০ সালের ৩৪তম জাতীয় কবিতা উৎসবে ঘোষিত ‘জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার-২০২১’ কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেদিন সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ২০২৩ ঘোষণা করা হবে। 

স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলমুক্তির ডাক দিয়ে ১৯৮৭ সালে জাতীয় কবিতা উৎসবের শুরু। স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, গণতন্ত্র হনন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং বর্বরতার বিরুদ্ধে এই কবিতা উৎসবে প্রতিবাদ জানান বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা কবিরা। 

তারিক সুজাত বলেন, “জাতীয় কবিতা উৎসব কবিতার বৃহত্তম এই ঐতিহ্যবাহী আয়োজন শুধু বাংলাদেশের নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এক অনন্য উৎসব- যা ইতোমধ্যে সারা বিশ্বে বিশেষ মর্যাদা অর্জন করেছে।“ 

“সূচনালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিটি উৎসবে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার কবিতানুরাগী ও শ্রোতার অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তার নজির পৃথিবীতে বিরল।”

বাংলাদেশের কবিরা চিরকালই প্রগতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে মন্তব্য করে তারিক সুজাত বলেন, “বিগত ৩৪টি আয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও ভাষার সংগ্রামী কবিরা এই উৎসবে আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নির্যাতিত মানুষের মুক্তির কথা বলেছেন। এই উৎসবকে আমরা কবিতার মিলন মেলায় পরিণত করতে পেরেছি।” 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার দিল্লি থেকে কবি অরুণ কমল, মুম্বাই থেকে কবি হেমন্ত দিভতে, কলকাতা থেকে কবি মৃদুল দাশগুপ্ত, কবি বিথী চট্টোপাধ্যায়, কবি কাজল চক্রবর্তী, কবি সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য এবং আবৃত্তিশিল্পী সৌমিত্র মিত্র আসছেন উৎসবে। 

এছাড়া আসাম থেকে কবি অনুভব তুলসি, কবি সিদ্ধার্থ শংকর কালিতা, আগরতলা থেকে কবি রাতুল দেব বর্মণ, ভুটান থেকে কবি চাদর ওয়াঙমো এবং নেপাল থেকে কবি ইন্দু থারুর আসার কথা রয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উৎসব প্রাঙ্গণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বর এবার ‘ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন ‘করার করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

এ বছরের উৎসব শ্লোগান ও উৎসব সংগীত রচনা করেছেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ। ঘোষণাপত্র লিখেছেন কবি কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়। 

অন্যদের মধ্যে উৎসবের আহ্বায়ক কবি শিহাব সরকার, কবি ও প্রাবন্ধিক আমিনুর রহমান সুলতান, কবি আসলাম সানি, কবি কাজল বন্দোপাধ্যায়, কবি দিলারা হাফিজ, কবি নাজমুন নেসা পিয়ারি, কবি হানিফ খান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।