আশীর্বাদ সিনেমায় অনুদানের টাকা প্রযোজকের ‘শপিংয়ে’, অভিযোগ শিল্পীদের

মাহির ভাষ্য, সরকারের কাছ থেকে প্রযোজক জেনিফার ৬০ লাখ টাকা অনুদান পেলেও খরচ করেছেন ২৫ লাখ। বাকি টাকা ‘নিজের কাজে’ ব্যবহার করেছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2022, 11:05 AM
Updated : 19 August 2022, 11:05 AM

অনুদানের চলচ্চিত্র ‘আশীর্বাদ’ এর প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌসের ‍বিরুদ্ধে সরকারি টাকা ‘ব্যক্তিগতভাবে খরচ করার’ অভিযোগ তুললেন সিনেমার অভিনেত্রী-অভিনেতা মাহিয়া মাহি ও জিয়াউল রোশান।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মালিবাগে এক সংবাদ সম্মেলনে মাহি দাবি করেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে অনুদানপ্রাপ্ত এ সিনেমার প্রযোজক জেনিফার ৬০ লাখ টাকা পেলেও খরচ করেছেন মাত্র ২৫ লাখ টাকা। বাকি টাকা ‘নিজের কাজে’ ব্যবহার করেছেন।

সরকারি অনুদানের সিনেমায় খরচের জবাবদিহি প্রত্যাশা করে এ চিত্রনায়িকা বলেন, “একজন প্রযোজক যখন বিনিয়োগ করেন, তখন টাকাটা ব্যাক আনার জন্য অনেকভাবে পরিকল্পনা করেন। আমি অনুরোধ করব, যেন জবাবদিহির ব্যবস্থা রাখা হয়। যেন কেউ টাকা নিয়ে শপিং করতে না পারে।”

‘আশীর্বাদ’ চলচ্চিত্রের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, চিত্রনায়ক রোশানসহ সংশ্লিষ্টরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

অভিনেতা রোশান বলেন, “সরকারি অনুদানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা হওয়ায় অনেক কিছু ছাড় দিয়ে কাজ করেছি। সাধারণত সিনেমায় আমি যে পারিশ্রমিক নিয়ে থাকি, এই সিনেমায় তার মাত্র ১০ শতাংশ নিয়েছি।”

অনেক প্রযোজকের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে মাহিয়া মাহি বলেন, “জেনিফারের মত এত অপেশাদার কাউকে পাইনি। যার জন্য এখন সাংবাদিকদের সামনে এসে কথা বলতে হচ্ছে।

“খুব স্বপ্ন নিয়ে অনুদানের সিনেমায় কাজ করতে গিয়েছিলাম। মোস্তাফিজুর রহমান মানিক স্যার আমাকে কাজটির প্রস্তাব যখন দেন, তখন নিজেকে খুবই ভাগ্যবতী মনে হয়েছে।”

এই চিত্রনায়িকা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিনেমাটা যদি একটু দেখেন, এই আশায় কাজ করেছি। জানি না উনি দেখবেন কি না?

“যেহেতু অনুদানের সিনেমা, সরকারি প্রজেক্ট। দেখলেও দেখতে পারেন। অনুদান তো সরকারি টাকা। জনগণের ট্যাক্সের টাকা।”

এ সিনেমায় অর্ধেক পারিশ্রমিক নেওয়ার কথা জানিয়ে মাহি বলেন, “আমি সাধারণত একটি সিনেমায় ১০ লাখ টাকা নিয়ে থাকি। কিন্তু এই সিনেমায় ৫ লাখ টাকা নিয়েছি। রোশানকে দেওয়া হয়েছে ১ লাখ টাকা।”

পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের জন্যই কাজটি করতে সম্মতি দিয়েছিলেন জানিয়ে মাহি বলেন, “মানিক স্যারের সাথে আগেও সিনেমায় কাজ করেছি।… ওই প্রযোজককে তো আমি চিনি না। সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে সিনেমা করেছি।”

অনুদানের টাকা প্রযোজক ব্যক্তিগতভাবে খরচ করেছেন অভিযোগ করে মাহি বলেন, “তার উদ্দেশ্য হয়ত ছিল- কোনো রকম একটি সিনেমা বানিয়ে টাকা সেইভ করে ছবিটা রিলিজ দিয়ে দেওয়া। এই সিনেমায় ২৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে কিনা- খোঁজ নিয়ে দেখুন।”

এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রযোজক জেনিফারকে ফোন করলে ফোন ধরে তিনি গ্লিটজকে বলেন, “হাত থেকে পড়ে গিয়ে আমার ফোনের স্ক্রিন নষ্ট হয়ে গেছে। আমি স্ক্রিনে কিছু দেখতে পারছি না, কথা শুনতে সমস্যা হচ্ছে। কথা বলতে চাইলে একদিন পর কথা বলতে হবে।”

এর আগে জেনিফার মাহি-রোশানকে ‘অপেশাদার’ শিল্পী বলেছিলেন। মাহি শুটিং সেটে কুকুর নিয়ে আসতেন এবং সেই প্রাণীর খাবারও প্রযোজককে দিতে হত বলে ‘খেদ’ প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

এ বিষয়ে মাহি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “উনি তো শিল্পীদেরই ঠিকমতো খাবার দিতেন না। কুকুরকে কী খাবার দিয়েছেন?

“গ্রামের দৃশ্যে শুটিংয়ের সময় স্থানীয় বাচ্চা, মুরব্বিদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। তারা কেউ পেশাদার শিল্পী না।”