অনেকদিন ধরেই একটি পাসওয়ার্ড একাধিক ব্যক্তির ব্যবহার বা পাসওয়ার্ড শেয়ার করার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার কথা বলে আসছে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম নেটফ্লিক্স। এরই ধারাবাহিকতায় এবার তারা যুক্তরাজ্যে এই পাসওয়ার্ড শেয়ারিং বন্ধ করার অভিযান শুরু করেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে নেটফ্লিক্সের একটি সাবস্ক্রিপশন ফি মাসে ৪ দশমিক ৯৯ থেকে ১৫ দশমিক ৯৯ পাউন্ড। সম্প্রতি নেটফ্লিক্সের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের জানানো হয়েছে, তারা নিজেদের অ্যাকাউন্ট ঘরের বাইরে ব্যবহার করলে প্রতি মাসে অতিরিক্ত ৪ দশমিক ৯৯ পাউন্ড গুণতে হবে।
মূলত গ্রাহক সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নে নেমেছে নেটফ্লিক্স, বলছে বিবিসি।
তবে কিছু দেশে, যেখানে এই স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মটি প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে, সেখানে এই ‘অ্যাকাউন্ট শেয়ার’ বন্ধ করতে গিয়ে উল্টো গ্রাহক হারিয়েছে তারা।
ডেটা কোম্পানি কানতারের বরাতে বিবিসি জানায়, স্পেনে নেটফ্লিক্স যখন প্রতিটি বাড়তি অ্যাকাউন্টের জন্য অতিরিক্ত ৫ দশমিক ৯৯ ইউরো ফি দাবি করা শুরু করে, ওই বছরের প্রথম তিন মাসে তারা ১০ লাখের বেশি গ্রাহক হারায়।
অ্যাকাউন্ট শেয়ার বন্ধ করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে মঙ্গলবার নেটফ্লিক্স তাদের ১০৩টি দেশের গ্রাহকদের ইমেইল পাঠিয়েছে, যার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, ফ্রান্স, জার্মানি, মেক্সিকো ও সিঙ্গাপুরও রয়েছে।
কোম্পানির পক্ষ থেকে এর আগে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছিল, তাদের কর্মসূচি বিস্তৃত করার প্রক্রিয়ার মধ্যেই এই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার প্রক্রিয়াও চালানো হবে। তবে তারা বলছে, “দীর্ঘ মেয়াদে, অ্যাকাউন্ট শেয়ার করার ক্ষেত্রে ফি আরোপ কোম্পানির আয় বাড়াবে যা আমাদের প্রবৃদ্ধি ও সেবার মান বাড়াতেও সাহায্য করবে।”
কানাডায় ফেব্রুয়ারিতে অ্যাকাউন্ট শেয়ারের উপর মাশুল আরোপ করার পর সেদেশে তাদের গ্রাহক সংখ্যা এখন বেড়েছে এবং আয়ও বাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে নেটফ্লিক্স।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে নেটফ্লিক্সের গ্রাহক সংখ্যা ২৩ কোটি ৩০ লাখের মতো।
এরআগে কোম্পানিটি জানিয়েছিল, তাদের হিসাবে ১০ কোটির বেশি বাড়িতে পাসওয়ার্ড শেয়ার করা হয়, যদিও তা বৈধ নয়।
এখন তারা চাইছে এসব শেয়ার করা পাসওয়ার্ড ব্যবহারকারী গ্রাহককে বৈধ গ্রাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে, যার মাধ্যমে তাদের বৈধ গ্রাহক সংখ্যা ও আয় বাড়ার পাশাপাশি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরমের প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে নিজেদের আধিপত্য টিকিয়ে রাখা সহায়ক হবে।
সাম্প্রতিক বছরে ডিজনি ও অ্যামাজনের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবসায় আসার পর নেটফ্লিক্সকে তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়তে হচ্ছে।