বেলা ১১টায় ঢাকার একিউআই স্কোর ছিল ১৯৮; যে মাত্রা ‘অস্বাস্থ্যকর’।
Published : 11 Jan 2025, 01:07 PM
শীতের কুয়াশার মধ্যেই রাজধানীর বাতাসে ভারী ধূলিকণার পরিমাণ ফের বেড়েছে।
সুইস বায়ুমান পর্যবেক্ষক সংস্থা আইকিউএয়ারের শহরভিত্তিক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) বলছে, সাপ্তাহিক ছুটির দ্বিতীয় দিন শনিবার দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান চতুর্থ; ঢাকার ওপরে থাকা তিন শহরই প্রতিবেশি দেশ ভারতের কলকাতা, দিল্লি ও মুম্বাই।
এদিন বেলা ১১টায় ঢাকার একিউআই স্কোর ছিল ১৯৮; যে মাত্রা ‘অস্বাস্থ্যকর’।
অন্যদিকে বায়ুর মান তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করে বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তর। সংস্থাটি বেলা ১১টায় সবশেষ তথ্য দিয়ে বলেছে ঢাকার একিউআই স্কোর ২০১; যা ওই অবস্থা ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে ধরা হয়।
বাতাসের মান নির্ভর করে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-১০) এবং অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণের (পিএম ২.৫) ওপর, যা পরিমাপ করা হয় প্রতি ঘনমিটারে মাইক্রোগ্রাম (পার্টস পার মিলিয়ন-পিপিএম) এককে।
পিএম ২.৫, পিএম ১০ ছাড়াও সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ও গ্রাউন্ড লেভেল ওজোনে সৃষ্ট বায়ুদূষণ বিবেচনা করে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই তৈরি হয়। একিউআই নম্বর যত বাড়তে থাকে, বায়ুমান তত ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত হয়।
পিএম ২.৫, পিএম ১০ ছাড়াও সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ও গ্রাউন্ড লেভেল ওজোনে সৃষ্ট বায়ুদূষণ বিবেচনা করে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই তৈরি হয়। একিউআই নম্বর যত বাড়তে থাকে, বায়ুমান তত ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত হয়।
একিউআই শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে সেই এলাকার বাতাসকে ভালো বলা যায়। ৫১-১০০ হলে বাতাসের মান মডারেট বা মোটামুটি গ্রহণযোগ্য ধরা হয়।
একিউআই ১০১-১৫০ হলে সেই বাতাস স্পর্শকাতর শ্রেণির মানুষের (শিশু, বৃদ্ধ, শ্বাসকষ্টের রোগী) জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং ১৫১-২০০ হলে তা সবার জন্যই অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয়। আর একিউআই ২০১-৩০০ হলে তা খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১ পেরিয়ে গেলে সেই বাতাসকে বিপদজনক ধরা হয়।
শীতকালে ঢাকার বায়ুর মানের স্কোর ২০০ এর মধ্যে রাখাটাই সবচেয়ে ‘চ্যালেঞ্জ’ মনে করেন পরিবেশ অধিদপ্তারের পরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) জিয়াউল হক।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “অতীতে শীতের সময়ে সাধারণত বায়ুর একিউআই স্কোর আড়াইশ থেকে তিনশতে চলে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ করে ফেলে। এবার আমরা দুইশ’র মধ্যে রাখার চেষ্টা করছি, যদিও এই অবস্থানে রাখাটা খুবই কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং একটা কাজ।”
দূষণ নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে ১২টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে কাজ করছে। এরমধ্যে ঢাকা ও আশপাশের জেলার জন্য সার্বক্ষণিক ৮টি কাজ করছে।
জিয়াউল হকের ভাষ্য, “বায়ুর মান নিয়ন্ত্রণে রাখা একক মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। পরিবহন, ব্যবসায়ী ও শিল্পের সঙ্গে সাধারণ মানুষের অভ্যাসগত বিষয়ও জড়িয়ে আছে।
“ঢাকার আশপাশের জেলার দূষণও ঢাকায় এসে পড়ছে। পরিবহনের কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে পুরনো গাড়ি তুলে দিতে ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এবার খুব বেশি খারাপ হবে না বায়ুর মান। জনগণেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।”
দূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন করে কোনো ইটভাটার অনুমোদন ও পরিবেশ ছাড়পত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তারের ওয়েবসাটে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ুর বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে, ঢাকা ও আশপাশের জেলার বায়ুর মান মাঝে মাঝেই খুবই অস্বাস্থ্যকর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলে যাচ্ছে।
এজন্য ঘরের বাইরে যাওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার ও সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।